ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যা জানা জরুরী ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যা জানা জরুরী - ajkerparibartan.com
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যা জানা জরুরী

3:36 pm , November 13, 2021

= ডা. মনজুর উর রহমান = ১. ডায়াবেটিস একটি হরমোনজনিত রোগ। দেহের অভ্যন্তরে ইনসুলিন হরমোন কমে গেলে কিংবা ইনসুলিন কাজ করতে না পারলে অথবা উভয় কারনেই রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। এমন একটা বিপাকতন্ত্রের রোগের নামই হলো ডায়াবেটিস মেলাইটাস বা সংক্ষেপে আমরা ডায়াবেটিস বলে থাকি। ২. ডায়াবেটিস (উগ) কোনভাবেই সংক্রমন বা ছোয়াচে রোগ নহে। তবে পরিবার বা রক্তের সম্পর্কের সাথে এর একটা গভীর সম্পর্ক আছে। বংশগতভাবে ডায়াবেটিস হতে পারে। ৩. ডায়াবেটিস অনেক ধরনের হয়। বয়স-লিঙ্গ, স্থান-কাল-পাত্র ও ভৌগলিক অবস্থা ভেদে ডায়াবেটিস এর ভিন্নতা প্রকাশ পেতে পারে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় এবং সে ক্ষেত্রে চিকিৎসা পদ্ধতীরও পরিবর্তন করতে হয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে এ যাবতকাল মুখের যত ওষুধ আবিস্কার হয়েছে তা দ্বারা সারাজীবন কোন রোগীা রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রন হবে না। মুখের ওষুধের সীমাবদ্ধতা আছে। বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেছে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীরা সঠিক নিয়মে জীবনযাপন করার পরও সর্বোচ্চ ১০/১২ বছর ওষুধ সেবন করতে পেরেছে। ডায়াবেটিক মুখের খাবার ওষুধে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। দীর্ঘদিন একটানা একই জাতীয় ওষুধ সেবন করলে শারীরিক অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। ডায়াবেটিসে বহুল ব্যবহৃত মুখের ওষুধগুলো সেবনের ফলে মানবদেহের নিজস্ব ইনসুলিন উৎপাদন ক্ষমতা ধীরে ধীরে লোপ পেতে থাকে। ইনসুলিনে তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। রোগের শুরুতে ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করলে পরবর্তীতে রোগীর জন্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন অনেক সহজ হয়। সে ক্ষেত্রে মারাত্মক শারীরিক জটিলতাও কম হয়। ইনসুলিনের বিকল্প কোন চিকিৎসা নেই। যদি রোগের প্রয়োজনে ইনসুলিন দরকার হয় তাহলে রোগীকে ইনসুলিনই দিতে হবে। মনে রাখবেন ইনসুলিনের বিকল্প হচ্ছে শুধুই ইনসুলিন। ইনসুলিন দিলেই যে রোগীর সুগার নিয়ন্ত্রনে আসবে এমন কোন কথা নেই। রোগের ধরন ও প্রকৃতি অনুযায়ী রোগীকে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার ইনসুলিন প্রয়োগ করতে হয়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ইনসুলিন গ্রহনকারী রোগীদের মধ্য হতে প্রায় ৬০/৭০ শতাংশই সঠিক নিয়মে সঠিক স্থানে ইনসুলিন নিতে পারেন না। সমাজে একটা ভ্রান্ত ধারনা চালু আছে-ইনসুলিন শেষ, চিকিৎসা কিংবা ইনস্যুলিন দিলে আর পরবর্তীতে মুখের ওষুধে কাজ করবে না। অথবা অনেক রোগীদের মুখে শোনা যায়-ইনসুলিন দিলে কিডনী নষ্ট হতে পারে। কিংবা আর বন্ধ করা যাবে না ইত্যাদি। এগুলো সবই ভিত্তিহীন মিথ্যা কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই নয়। অশিক্ষা-কুশিক্ষা-সামাজিক কুসংস্কার-ধর্মান্ধতা : আমাদের মতো অনেক মধ্য আয়ের দেশের জনগনকে মিথ্যার আবদ্ধ করে রেখেছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একদল রোগীরা হারবাল ও ইউনানী এমনকি নানা প্রজাতীর গাছকে ওষুধ বানিয়ে সেবন করে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তব সত্যটা তারা উপলব্ধি করে তখন যখন কারো ঘাঁয়ে পঁচন ধরে। কেউ বা অন্ধত্বের পথে হাঁটে। কারো বা কিডনী বিকল্প হওয়ার পথে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে এসব চিকিৎসার কোন সুস্পস্ট প্রমান বা দলিল নেই। একদল অসাধু ব্যবসায়ী চক্র আছে যারা জামের বিচি, করল্লার বিচি কিংবা তেলাকচুপাতা পদ্ধক্ররুজ ইত্যাদি দ্বারা ওষুধ বানিয়ে মানুষকে ধোঁকা দেয়। ডায়াবেটিসে রোগীরা খালি পায়ে কখনই হাঁটবেন না। আরামদায়ক নরম জুতা পায়ে হাঁটতে হবে। খুব সকালে যারা ঘুম থেকে ওঠেন তারা অবশ্যই হালকা কিছু স্নাকস/নাস্ত খেয়ে নেবেন। খালি পেটে একদম থাকা উচিত না এবং খালি পেটে হাঁটাও যাবে না। ব্লেড দিয়ে নক কাটবেন না। অবশ্যই নেইল কাটার দিয়ে নক কাটতে হবে। প্রতিদিন গোসলের পর অবশ্যই দুই পায়ের পাতায় ও তালুতে তেল মাখবেন (নারিকেল তেল কিংবা অলিভয়েল কিংবা লোশন বা ভেসলিন যেন দুই পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে তা জমে না থাকে। প্রতিদিন কিছু পরিমান দেশী ফল খাবেন। যেমন আমড়া, জামরুল, কালোজাম, বাঙ্গি, আমলকি, পাকা টমেটো ইত্যাদি। রান্নায় সরিষার তেল ব্যবহার করতে হবে। মৃদ্যু মাত্রায় ডায়াবেটিস বলে কিছু নেই। যদি রক্তের সুগার সামান্য পরিমাণও বৃদ্ধি থাকে তবে অবশ্যই চিকিৎসা করতে হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT