3:26 pm , November 3, 2021
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ প্রয়াত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা ও নানা ধর্মীয় রীতি-নীতি পালনের মধ্যে দিয়ে নগরীর মহাশশ্মানে উদযাপিত হয়েছে উপ-মহাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ শশ্মান দিপাবলী। গতকাল বুধবার দিনটি পালনে বিকেল থেকে প্রয়াতদের স্বজনদের পদ চারনায় মুখরিত হয়ে উঠে কাউনিয়ার মহাশশ্মান। এ উপলক্ষ্যে শশ্মান এলাকায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা। নির্মান করা হয়েছে সুদৃশ্য তোড়ন। সমাধিসহ শশ্মান এলাকা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা সহ নতুন রং করা হয়েছে। প্রয়াত স্বজনদের স্মরনে এ দিনটিকে ঘিরে শশ্মান এলাকায় মেলা বসেছে। তাই শশ্মান এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করেছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সকলের কাছে সার্বজনীন উৎসবে পরিনত হয়েছে শশ্মান দিপালী। যা সকলের কাছে শশ্মান দিপালী উৎসব হিসেবে পরিচিত।
এ উৎসবকে ঘিরে সন্ধ্যার পর নানা রঙের আলোকসজ্জা ও মোমবাতির আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে শশ্মান এলাকা। নারী-শিশু-বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাসহ সকল বয়সীদের পদচারনায় লোকারন্য হয়ে উঠে।
প্রতি বছরের মতো এবারও বুধবার ভোর রাতে ভূত চতুর্দ্দশীর পুণ্যতিথিতে শুরু হয়ে শেষ হবে বৃহস্পতিবার ১২টা ১ মিনিটে। বৃহস্পতিবার রাত্রি ১২টা ১ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে শ্মশান কালীপূজা ও প্রসাদ বিতরন। এ জন্য গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত প্রয়াতের সমাধিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন স্বজনরা। এ সময় অনেক স্বজনরা সমাধিতে বিলাপ করে। ফুল ও আলোকবাতিসহ নানা উপকরণে সাজানো ছিল প্রয়াত স্বজনদের সমাধি। প্রয়াতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন স্বজনরা।
প্রতি বছর ভূত চর্তুদশীর পূণ্য তিথিতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রতিবারের মতো এবারো এ দিপাবলী উৎসবে যোগ দিতে দেশ-বিদেশ থেকে এসেছেন হাজারো মানুষ। দীপাবলিকে ঘিরে মহাশ্মশান এলাকায় বসেছে মেলা।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির সভাপতি মানিক মুখার্জি জানান, ভূত চতুর্দশী পূণ্য তিথিতে দিপাবলি উৎসব হয়। এজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দুইটি শ্মশান এলাকা ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করেছিল। যার কারনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্নভাবে এ উৎসব হয়েছে। করোনার জন্য গত দুই বছর দিপাবলী উৎসবে মহাশ্মশানে আলোকসজ্জা, তোরন নির্মান এবং মেলা হয়নি। এ বছর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ আগের মতো করা হয়েছে। মহাশ্মাশানে আছে প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, মনোরমা বসু মাসিমা, একুশে পদকপ্রাপ্ত সংস্কৃতিসেবী নিখিল সেন সহ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি।