2:29 pm , September 25, 2021
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গর্ভধারিনী মাকে গৃহবন্দি করে রেখে মায়ের নামে থাকা ২ একার ১৬ শতাংশ জমি নিজের নামে লিখে নেয়ার পায়তারা করার অভিযোগ ওঠেছে ছেলের বিরুদ্ধ। এই চক্রান্তের অংশ হিসেবে ১ মাস ধরে মা খোদেজা বেগমকে ঘর থেকে বের হতে বা কাউকে ঘরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না মেঝ ছেলে মকবুল হোসেন খান। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, পুলিশ প্রশাসন এসেও কোন সুরাহা করতে পারেনি। ফলে খোদেজা বেগমের বাকি ২ ছেলে, ১ মেয়ে ও তার নাতি-নাতনির গত ৩০ আগস্টের পর থেকে দেখা করতে পারেনি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগি পরিবারগুলো বরিশাল পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করলে কাজিরহাট থানার একজন এসআই ও কনস্টবেল ঘটনাস্থলে গেলে ওই দিনের পর আর মায়ের সাথে দেখা করতে পারেনি দুই ছেলে ও ১ মেয়ের পরিবার। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাট থানার হিজলা উপজেলার পাশ্ববর্তী আন্দারমানিক ইউনিয়নের আন্দারমানিক গ্রামে মৃত আদম আলী খানের কন্যা ও মৃত ইয়াছিন খানের স্ত্রী খোদেজা বেগম(৯৩)। তার তিন ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু তার মেঝ ছেলে খোদেজা বেগমকে গৃহবন্দি করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বড় ছেলে আলী আহম্মেদ খান, ছোট ছেলে সেলিম খান এবং একমাত্র মেয়ে ছকিনা বেগম। তারা কোন ভাবে তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না বলে জানান। তাদের মাকে গৃহবন্দি করে রাখা অবস্থায় খোদেজা বেগম নামে থাকা ২ একর ১৬ শতাংশ জমির মধ্যে মেঝ ছেলে মকবুলের নামে ১ একর ৮ শতাংশ ও মকবুলের ছেলে তারিকুল ইসলামের নামে ১ একর ৮ শতাংশ লিখিয়ে নেয়া হয়েছে। তারা আরো অভিযোগ করেন তারিকুল ইসলামের শশুর একজন আমির। তার সহযোগিতায় এই জমি আত্মসাধের পায়তারা চালানো হচ্ছে। পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, খোদেজা বেগমের সকল সম্পত্তি ১০-১২ বছর আগে স্থানীয়(শালীশ) গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ আত্বীয় স্বজন নিয়ে ভাগ বণ্টনের মাধ্যমে চিটা ম্যাপ করিয়া দেওয়া হয়। খোদেজা বেগমের ছেলে মেয়েরা আলাদাভাবে ৪টি পাকা ভবন নির্মাণ করে সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছেন। তারা নাল জমিতে বাগান সৃজিত করে ও চাষাবাদের মাধ্যমে ভোগ দখলে নিয়ে থাকেন। খোদেজা বেগম অসুস্থতা ও বার্ধক্য জনিত কারনে তাহার সম্পত্তি নিয়ে ছেলে মেয়ের মধ্যে ঝগড়া বিবাদের সঠিক কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেন নি। এরই ধারাবাহিতায় চিকিৎসার নামে তাহার মেঝ ছেলে মকবুল খান তার মা খোদেজা বেগমকে তার ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ করেছেন আতœীয় স্বজনরা। অসুস্থ মাকে শত চেষ্টা করেও তার ছেলে মেয়েরা এক নজর দেখতে পারেননি। এই বিষয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় গণমান্যরা বিষয়টি নিয়ে মেঝ ছেলের বাড়িতে গিয়েও সমাধান করতে পারেনি। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম কয়েকজন ইউপি সদস্য নিয়ে ফের ওই বাড়িতে যান। কিন্তু তাও ব্যার্থ হন। পরে কাজিরহাট থানা পুলিশের মাধ্যমে ওই বাড়ি যেতে পারেন স্বজনরা। আন্দারমানিক ইউপি সদস্য জামাল খান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ খোদেজা বেগমের বাড়ির অন্যান্য প্রায় ২৫/৩০ জনসহ ছিয়েছিলাম। কিন্তু খোদেজা বেগমকে অবরুদ্ধ করার কারন সম্পর্কে জানতে গেলে, তারা ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখেন। অনেক ডাকচিৎকারের পরেও তারা দরজা খোলেননি। এ বিষয়ে মেঝ ছেলে মকবুল হোসেন খান এর সাথে বার বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মকবুল হোসেনের ছেলে তারিকুল ইসলাম খান জানান, সমস্যা থাকার কারণে ওই সময় দাদীর সাথে কাউকে দেখা করানো যায়নি। পরে পুলিশ আসলে আমার দুই চাচা-চাচী, ফুপুসহ অন্য ভাই বোনেরা দাদির সাথে দেখা করেছে। দাদি অসুস্থ। বার বার দাদীর সাথে কি দেখা করবে তারা। জমি লিখে নেয়া প্রসঙ্গে তরিকুল ইসলাম বলেন, দাদী আমার নামে সম্পত্তি লিখে দিয়েছে। এখানে কারো কিছু বলার নেই। তা ছাড়া আমার শশুর একজন আমির। তার মাধ্যমেই জমি লিখে দিয়েছেন আমার দাদী।