দক্ষিণাঞ্চলে নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারন মানুষ ভোগান্তিতে দক্ষিণাঞ্চলে নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারন মানুষ ভোগান্তিতে - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলে নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারন মানুষ ভোগান্তিতে

3:01 pm , September 5, 2021

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ দক্ষিনাঞ্চল জুড়ে চাল-ডাল, ভোজ্য তেল ও চিনি সহ বেশীরভাগ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারন মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। গত প্রায় দেড় বছরে করোনা মহামারী সংকটে সমাজের নি¤œবিত্ত ও নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারে আয় যথেষ্ট কমেছে। সাথে নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ভোগান্তির মাত্রা আরো বাড়িয়ে তুলেছে। তবে এরমধ্যেও রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থা টিসিবি’র অতি সীমিত উদ্যোগ পণ্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে নুন্যতম কোন ভুমিকা রাখতে পারছে না।
দেশী পেঁয়াজের দাম গত এক সপ্তাহে আরো ৩ টাকা বেড়ে নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৭-৪৮ টাকায়। গ্রামে-গঞ্জের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। স্থানীয় খুচরা ব্যসায়ীদের দাবী আমাদানী করা কোন পেয়াঁজ বাজারে না আসায় প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়ছে। তবে দেশী রসুনের দাম কিছুটা সহনীয়। প্রতি কেজি ৬৫ টাকায় বিক্রি হলেও আমদানীকৃতের দাম প্রায় দ্বিগুন। দেশী আদা বাজারে নেই। চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে।
চিনি এতদিন ৭০-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও গত সপ্তাহ থেকে তা ৮০ টাকায় উঠেছে। গ্রামে-গঞ্জে তা ৮৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন ও পাম তেল সহ সব ধরনের ভোজ্য তেলের দামও উর্ধমুখি। গত সপ্তাহেই সয়াবিন ও পাম তেলের দাম লিটার প্রতি আরো ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এখন যথাক্রমে ১৪৫ ও ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে দেড়শ টাকা লিটারে। মুসুর ডালের দামও ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকায় উঠেছে। মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০Ñ১৩৫ টাকা কেজি।
এদিকে চালের বাজার দফায় দফায় বেড়ে জুলাই ও আগষ্ট মাসে স্থিতিশীল থাকলেও গত কয়েকদিনে কেজি প্রতি ১ টাকা থেকে দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতদিন নি¤œÑমধ্যম মানের ‘বিআর-২৮ বা আঠাশ বালাম’ ৪৫Ñ৪৬ টাকা দরে বিক্রি হলেও তা আবার ৪৮ টাকায় উঠেছে। মধ্যম মানের মিনিকেট চালের কেজিও ৬০ টাকা থেকে ৬২ টাকায় উঠেছে। তবে ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে আউশ ধান কর্তন শেষ হবার পরে চালের দাম আরো একধাপ বৃদ্ধির প্রবনতা থাকে। আশি^নের শেষ ভাগ পর্যন্ত মাঠে কোন ফসল না থাকার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক কৃষি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। সাথে চালের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের কষ্ট যথেষ্ট বেড়ে যায়।
এবার আগে থেকেই চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার সাথে ভোজ্যতেল, পেয়াঁজ ও চিনি সহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের দূর্ভেগের মাত্রা আরো বেড়েছে। মাছ, মুরগী ও গরুÑখাশীর গোসতের মূল্যও গত একমাসে বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগীর কেজি এখন ১৬০ টাকা। গরুর গোসত ৬শ টাকা ছুতে চলেছে। খাশির গোসত ৮শ টাকা কেজি।
তবে এ অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যেও টিসিবি বাজার নিয়ন্ত্রনে তেমন কোন জোড়ালো ভুমিকা রাখছে না। শণিবার থেকে দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলার মধ্যে পিরোজপুর বাদে অপর ৫টি জেলায় মাত্র ১০টি ট্রাকে ৩টি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে। এরমধ্যে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে মাত্র দুটি ট্রাকে পণ্য বিক্রি শুরু হওয়ায় প্রথম দিনেই ব্যাপক কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। মাত্র ১ হাজার কেজি চিনি, ৬শ কেজি ডাল ও ৫শ কেজি সয়াবিন তেল দেয়া হচ্ছে ডিলারদের।
অন্য জেলাগুলোতেও সম পরিমান পণ্য নিয়ে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ২টি করে ট্রাকে মুশুর ডাল, সয়াবিন তেল ও চিনি বিক্রির জন্য দেয়া হচ্ছে। একজন গ্রাহক এসব পণ্য মাথাপিছু মাত্র দুই কেজি করে কিনতে পারবেন। জেলা প্রশাসন ঐসব ট্রাকের পণ্য জেলা সদর বা যেকোন উপজেলা সদরে বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন বলে টিসিবির’র বরিশাল অফিস প্রধান জানিয়েছেন।
তবে মাত্র দুটি ট্রাকে সীমিত কিছু পণ্য বিক্রি করায় সাধারন মানুষকে চরম দূর্ভোগ সহ্য করেই তা কিনতে হচ্ছে। প্রথম দিনে দুপুর ১২টর মধ্যেই টিসিবি’র ট্রাকের পণ্য বিক্রি শেষ হয়ে যায়। প্রতিটি ট্রাকের পেছনেই নারী পুরুষের লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। যেখানে স্বাস্থ্য বিবিধ অনুসরন ছিল অবান্তর।
এ বিষয়ে টিসিবি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নগরীতে মঙ্গলবার থেকে ৩টি ট্রাকে পন্য বিক্রি শুরু হবে। আর সরবারহ পেলে আগামী সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজি দরে বিদেশী পেয়াজ বিক্রি করবে টিসিবি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT