পুরোহিতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এগিয়ে এসেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন পুরোহিতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এগিয়ে এসেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন - ajkerparibartan.com
পুরোহিতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এগিয়ে এসেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন

2:20 pm , July 19, 2021

 

করোনাকালে থেমে নেই জীবন। এর মাঝেই চলছে সবকিছু। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। তেমনি এক দৃশ্য দেখা গেল ১৮ জুলাই রবিবার দুপুর ১২:৩০মিনিটে।এই সময় মৃত্যু বরণ করেন কানাই লাল চৌধুরী। যিনি জীবনের অনেকটা সময় পার করেন পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করে। শেষ যাত্রায় অনেক মানুষকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি ধর্মীয় দায়িত্ব নিয়ে। কিন্তু সেই পুরোহিত কানাই লালের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় পাওয়া যায়নি কোন পুরোহিতকে। বিকাল ৪:০০টায় তাকে বরিশাল মহাশ্মশানে নিয়ে আসা হয়।তার ছেলে মিলন রায় চৌধুরী বেশ কয়েকজন পুরোহিতের সাথে যোগাযোগ করেন কিন্তু তারা সবাই এই মৃত পুরোহিতের শেষকৃত্যে আসতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে পুরোহিত খুজঁলে আর কাউকে পাওয়া যায় নি। এনমকি এই কাজে তখন এগিয়ে আসেনি মৃতের আপনজন কেউও। সেই সময় তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় এগিয়ে এল কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বরিশাল শাখার সেচ্ছাসেবিরা । পরম মমতায় ধর্মীয় আচার অনুযায়ী আপনজন হয়ে পুরো সৎকার কার্যক্রম সম্পন্ন করেন তারা । এভাবে দিনরাত ২৪ঘন্টা নিরলসভাবে এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন সেচ্ছায় এবং কোন কিছুর বিনিময় ছাড়া। বরিশাল বিভাগীয় প্রধান সমন্বয়ক ফয়সাল মাহমুদ আমাদের জানান ঈদুল-আয্হার এই সংকট কালীন সময়ও তারা দিনরাত ২৪ঘন্টা এই সেবা দিতে প্রস্তুত এবং ঈদের দিনও ২৪ঘন্টা এই স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রম চালু থাকবে। তার কাছ থেকে আরো জানা যায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের করোনা লাশ দাফন কার্যক্রম শুরু হয় বরিশাল থেকে এবং তারা অনেক হৃদয় বিদারক ঘটনা ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন। তার মধ্যে একটি ঘটনা তিনি আমাদের সাথে শেয়ার করেন। কুয়াকাটার মহিপুরে একজন লোক মারা গেলে সেই সংবাদ পেয়ে দাফনের জন্যে সেখানে পৌছান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বরিশালের স্বেচ্ছাসেবকরা এবং তারা যাওয়ার আগে সেখানের স্থানীয় লোকেরা তা নিয়ে অনেক আলোচনা ও মিটিং করেছেন কীভাবে কি করা যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দাফনের জন্য এগিয়ে আসেনি কেউ, এভাবেই পার হয়ে যায় ২৪ঘন্টা। তারপর সংবাদ দেয়া হয় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বরিশাল শাখায়। শোনা যায় তিনি কিছুটা জ্বর জ্বর নিয়ে ঢাকা থেকে কুয়াকাটার মহিপুরে নিজস্ব বাড়িতে আসেন। একথা শুনে এলাকার লোকজন তাকে একটা আলাদা ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। এভাবেই পার হয়ে যায় তিন দিন এবং সেখানেই তিনি মারা যায়। কোয়ান্টাম বরিশাল শাখায় স্বেচ্ছাসেবীরা যখন সেখানে পৌছায় তখন তারা লাশ আনতে গিয়ে দেখেন মৃতব্যক্তির একটি হাত বুকের সাথে লাগানো। হাত সরাতেই দেখা গেল হাতের মধ্যে তার স্ত্রীর ছবি। এর মানে সেই লোক শেষ সময়ে তার আপনজনদের স্পর্শের অভাব কতটা অনুভব করছিলেন। কিন্তু একই বাড়িতে থাকা স্বত্বেও তার কাছে যায়নি স্ত্রী, মেয়ে এমকি মা’ও। যখন মানুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন ও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বরিশালের ন্বেচ্ছাসেবীরা নিঃস্বার্থভাবে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন পরম মমতার পরশে নিজের ভাই-বোন বা মা-বাবার মত মনে করে। যখন সমাজের চারপাশে দেখা যাচ্ছে অনেক অমানবিক ঘটনা যা আমাদের দেশ ও সমাজকে লজ্জিত করে এবং প্রশ্ন তুলে আমরা কতটুকু মানবিক হতে পেরেছি মানুষ হিসেবে। সেই সময় আসার আলো হয়ে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বরিশাল শাখার কিছু স্বেচ্ছাসেবী নিরলসভাবে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করছেন । সংকটকাল একদিন থাকবে না কিন্তু সংকটকালে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এই অবদান দেশ ও জাতি মনে রাখবে অনন্তকাল। একদিন হয়তো মানবিক সেবা দানের জন্য এই মানুষগুলো আমাদের দেশ ও সমাজের মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এবং পরকালেও সৃষ্টিকর্তা দিবেন এর উত্তম প্রতিদান। খবর বিজ্ঞপ্তির।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT