দক্ষিণাঞ্চলের হৃদরোগ চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থলের অচলাবস্থা দক্ষিণাঞ্চলের হৃদরোগ চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থলের অচলাবস্থা - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলের হৃদরোগ চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থলের অচলাবস্থা

2:39 pm , June 27, 2021

 

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলের হৃদরোগ চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‘কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট’ ও ‘ইন্টেনসিভ কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট’ দুটি বিগত দীর্ঘদিন ধরেই বিকারগ্রস্থ। পূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধানের সাথে চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রীর অভাবে ইতোমধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে এ হাসপাতালটির সিসিইউ এবং আইসিসিইউ। এখানের ২০ শয্যার কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে প্রতিনিয়ত ৫০Ñ৬০ জন রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও এখানে নুন্যতম কোন চিকিৎসা সহায়ক সরঞ্জাম নেই। আইসিইউ ইউনিটটিতে অনুমোদিত বেড সংখ্যা ১০টিরও কম হলেও সেখানে প্রতিনিয়ত ২০-২৫ রোগী চিকিৎসাধীন থাকছে। এক হাজার শয্যার বিশাল এ হাসপাতাল ভবনের তৃতীয় তলায় ২০০২ সালে মেডিসিন ওয়ার্ডের সাথে ২০ শয্যার কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট চালু করা হয়। পরবর্তিতে হাসপাতাল ভবনের পূর্ব পাশে ২০০৫ থেকে ‘০৮ সালে ভিন্ন কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট ও ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট ভবন নির্মান করা হলেও চালু হয় ২০১২ সালের দিকে। কিন্তু সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স সহ অন্যান্য পদসমুহ সৃষ্টি হয়নি। একজন রেজিষ্ট্রার ও ৩ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে বিপুল সংখ্যক রোগীর সার্বক্ষনিক চিকিৎসা দেয়া অসম্ভব হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকগন। এরপরেও স্থানীয়ভাবে জোড়াতালি দিয়ে ইউনিটটি চালু রাখা হলেও সেখানে এখন সুষ্ঠু চিকিৎসা মেলা দুরের কথা, সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে। ইউনিটটির একমাত্র এওনজিওগ্রাম মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে গত প্রায় ৭ মাস ধরে। দুটি ইউনিটের ৮টি এয়ারকুলারই বিকল আরো প্রায় বছর খানেক আগে থেকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবারই এ ব্যাপারে গনপূর্ত বিভাগকে চিঠি লেখা ছাড়াও প্রতিনিয়ত মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন। ফলে দুঃসহ গরমে হৃদরোগীদের প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাবার অবস্থা। সাম্প্রতিককালে এখানে চিকিৎসার জন্য আসা সিংহভাগ রোগীদেরই ঢাকায় পাঠান হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে চিকিৎসকগন মুখে কিছু না বললেও মূলত চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব সহ অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতেই অবস্থাসম্পন্ন রোগীদের প্রাথমিক ঝুকি সামাল দিয়েই ঢাকায় পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক। একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনেরা দক্ষিনাঞ্চলে হ্রদরোগের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল (?) এ হাসপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট ও ইন্টেনসিভ কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের দুরাবস্থার কথা বলতে গিয়ে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে রোববার শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলামের সাথে টেলিফোনে আলাপ করা হলে তিনি হৃদরোগ ইউনিটের বিভিন্ন সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়গুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন পর্যায়ে অবহিত করার কথাও জানান তিনি। এনজিওগ্রাম মেশিন বিকল প্রশ্নেও তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার কথা জানিয়ে যতদ্রুত সম্ভব তা মেরামতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান। হৃদরোগ ইউনিটের এয়ারকুলারগুলো সাময়িক মেরামতের কথা জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব এর স্থায়ী সমাধানের লক্ষে গনপূর্ত বিভাগের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানান পরিচালক। এ ব্যাপারে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ঐ ইউনিট দুটির যন্ত্রসমুহ মেরামতের দায়িত্ব এ মুহূর্তে তাদের নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সম্প্রতি তা মেরামত করেছে বলে তাকে অবহিত করেছে। এরপরেও কোন সমস্যার কথা জানালে তারা সে ব্যাপারে সম্ভব সবকিছু করবেন বলেও জানান তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT