রূপাতলীতে বিদ্যুৎ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু রূপাতলীতে বিদ্যুৎ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু - ajkerparibartan.com
রূপাতলীতে বিদ্যুৎ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু

1:00 am , June 6, 2021

হেলাল উদ্দিন ॥ নগরীতে বিদ্যুত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) দায়িত্বজ্ঞানহীন কান্ডে প্রাণ গেছে এক শ্রমিকের। ওজোপাডিকোর বিদ্যুত সংযোগের মেরামত করতে গিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে মর্মান্তিক ও করুন মৃত্যু হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক মো. ফয়সালের (২৯)। সে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। ওজোপাডিকোর কালিজিরা ফিডারের রূপাতলী কন্টোল রূম কমপ্লেক্সের মধ্যে একটি ১১ কেভি সঞ্চালন লাইনে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে ওজোপাডিকোর বিদ্যুত বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন ও ফিডার ইনচার্জ মো. শহীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অবহেলারকারনে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গতকাল বিকেলে বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করেছে। লাইনে কর্মরত শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ ফিডার ইনচার্জ ও নির্বাহী প্রকৌশলীর গাফেলতির কারনে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কারন কাজ শেষ হওয়ার আগেই কন্ট্রোলরুমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ক্লিয়ারেন্স প্রদান করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পলাতক রয়েছে ফিডার ইনচার্জ শহিদ। আর ব্যস্ততার অযুহাতে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন। ঠিকাদার মিজানুর রহমান বলেন, ১২ জন শ্রমিক নিয়ে রুপাতলী বিদ্যুৎ অফিসের মূল গেটে সকাল থেকেই কাজ করতে ছিলাম। বিকেল ৫ টা নাগাদ কাজ শেষ হবার মুহুর্তে নিহত ফয়সালসহ অপর শ্রমিক বৈদ্যুতিক খুটি থেকে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঠিক ওই সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। এতে মুহুর্তেই বিদ্যুতায়িত হয়ে ফয়সাল মারা যায় এবং অপর শ্রমিক নিচে ছিটকে পড়ে যায়। কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব পালন করা এসবিএ কর্মচারী গোলাম ফারুক বলেন, বিকেল ৫ টা ৫ মিনিটে ফিডার ইনচার্জ শহিদ নিজে কন্ট্রোলরুমে এসে ক্লিয়ারেন্স পাওয়া গেছে জানিয়ে আমাকে লাইন দেওয়ার কথা বলে। লাইন দেওয়ার কিছুক্ষন পরপরই দুর্ঘটনার কথা শুনতে পাই। তিনি বলেন কাজ চলমান অবস্থায় ফিডার ইনচার্জ কিভাবে ক্লিয়ারেন্স পেয়েছেন তা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। নিয়ম অনুযায়ী ফিডার ইনচার্জের নির্দেশনা পাওয়ার পরই আমি লাইন দেব। লাইনে কাজ করা শ্রমিকরা বলেন, যখন দূর্ঘটনা ঘটে তখন নিবার্হী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন দূর্ঘটনাস্থলেই দাড়িয়ে ছিলেন। ফিডার ইনচার্জ ও কন্ট্রোলরুম থেকে মাত্র ৫০ গজের মধ্যে এমন ঘটনাকে কোন ক্রমেই দূর্ঘটনা নয় বলে দাবী করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শ্রমিক। তিনি বলেন, এটা ভুল বা দূর্ঘটনা নয় এটা হত্যা। তারা এ হত্যার বিচার দাবী করেন। অফিসের একাধিক কর্মচারী ফিডার ইনচার্জ ও নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অফিস পরিচালনায় নানা ধরনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা অভিযোগ তোলেন এবং এই ঘটনার দায় তিনি ক্রমেই এড়াতে পারেন না বলে তারা দাবী করেন। নিহতের ভাতিজা রাজিব বলেন ফয়সালের ৮ বছরের একটি ছেলে রয়েছে এবং বর্তমানে তার স্ত্রী ৪ মাসের অন্তঃসত্বা। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী কোতয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন কিভাবে ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। নিহতের পরিবারকে সব ধরনের আইনী সহায়তা প্রদান করা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT