লবণাক্ত কীর্তনখোলার পানি! দূর্যোগ বিশেষজ্ঞদের মতে এটি ভয়াবহ বার্তা লবণাক্ত কীর্তনখোলার পানি! দূর্যোগ বিশেষজ্ঞদের মতে এটি ভয়াবহ বার্তা - ajkerparibartan.com
লবণাক্ত কীর্তনখোলার পানি! দূর্যোগ বিশেষজ্ঞদের মতে এটি ভয়াবহ বার্তা

3:13 pm , April 9, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কীর্তনখোলা নদীতীরের পানিতে হঠাৎ লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়েছে। বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে এমনটাই জানা গেছে। স্বাদুপানির নদী কীর্তনখোলায় আগে লবণাক্ততা ছিল না। এবারই প্রথম পানিতে লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়েছে। লবণাক্তের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১ হাজার ২০০ মাইক্রো সিমেন্স/সেন্টিমিটার। সেখানে মার্চে এই নদীর পানি পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে ১ হাজার ৩৬২ সিমেন্স/সেন্টিমিটার। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল মাত্র ৩০০ সিমেন্স/সেন্টিমিটার। দেশের দক্ষিণ উপকূলের নদ-নদীর পানিতে ক্রমেই বাড়ছে লবণাক্ততা। সাম্প্রতিক সময়ে সেই বৃদ্ধির হার এতটাই যে মিঠাপানির নদী কীর্তনখোলাতেও তা বিস্তৃত হয়েছে। বরিশাল মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) জরিপ অনুযায়ী, সাগরের কাছের বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুরের বলেশ্বর, পায়রা, বিষখালী, আন্ধারমানিক, লোহালিয়া, রামনাবাদ, আগুনমুখা প্রভৃতি নদ-নদীর পানিতেও লবণাক্ততার মাত্রা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। বছর দশেক আগেও এসব নদনদীতে লবণাক্ততার মাত্রা বাড়তো এপ্রিল থেকে মে-জুনে। এখন লবণাক্ততার মাত্রা বাড়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে। আর ভারী বৃষ্টি না হলে লবণাক্ততা কমে না। দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা নদীতে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে ভয়াবহ বার্তা বলছেন। তাঁদের মতে, অনেক দিন ধরেই এই অঞ্চলের খরা, অনাবৃষ্টি, ধারাবাহিক অধিক তাপমাত্রা এবং অধিক উচ্চতার জোয়ার ও উপর্যুপরি জলোচ্ছ্বাসে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের বিষয়টি টের পাওয়া যাচ্ছিল। সাগর থেকে অনেক দূরের কীর্তনখোলা নদীতে এবার লবণাক্ততার অস্তিত্ব পাওয়ার বিষয়টি তারই ধারাবাহিকতা মনে করছেন তাঁরা। পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয় তাদের পরীক্ষাগারে এ অঞ্চলের ১০টি নদ-নদীর পানি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে। এর মধ্যে কীর্তনখোলা নদীর পানি পর্যবেক্ষণ শুরু হয় গত বছর থেকে। নদীর তিনটি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তারা এর মান পরীক্ষা করে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কীর্তনখোলার পানির গুণগত মান গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খুবই স্বাভাবিক ছিল। ওই সময়ে নদীর পানির তড়িৎ পরিবাহিতা বা ইলেকট্রিক্যাল কনডাক্টিভিটি (ইসি) ছিল ৩০০ থেকে ৪০০ মাইক্রো সিমেন্স/সেন্টিমিটার পর্যন্ত। কিন্তু মার্চে নাটকীয়ভাবে এই মান বেড়ে হয় ১ হাজার ৩৬২ সিমেন্স/সেন্টিমিটার। কিন্তু এর সহনীয় মাত্রা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ সিমেন্স/সেন্টিমিটার। সংস্থাটির উপপরিচালক কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘এটা খুবই চিন্তার বিষয়। হঠাৎ করে এটা বেড়ে যাওয়াটা অ্যালার্মিং। এর স্থায়িত্ব যাচাইয়ের জন্য আমরা ধারাবাহিকভাবে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাব। এরপর এর কারণ নির্ণয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে অনুসন্ধান চালানো হবে।’

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT