দেশী-পরাযায়ী পাখি সংরক্ষণে প্রয়োজন আইনের প্রয়োগ দেশী-পরাযায়ী পাখি সংরক্ষণে প্রয়োজন আইনের প্রয়োগ - ajkerparibartan.com
দেশী-পরাযায়ী পাখি সংরক্ষণে প্রয়োজন আইনের প্রয়োগ

3:20 pm , December 1, 2020

কাজী মিজানুর রহমান ॥ বরিশালে বেশকিছু পাখি বিক্রয়ের শোরুম বা দোকান আছে। এসব দোকানে আইন অনুযায়ী ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ এমন দেশীয় প্রজাতির পাখি বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। মুনিয়া, টিয়া,শালিক,ঘুঘু,বক, ডাহুক,বালি হাঁস,পানকৌড়ি এগুলি আছে বিক্রয়ের তালিকায় আছে। এছাড়া বরিশাল শহরের আশেপাশে সাপ্তাহিক কয়েকটা হাটে বিভিন্ন ধরনের গৃহপালিত পাখির সাথে বন্য পাখি বিক্রির অভিযোগও বেশ পুরোনো।বরিশালের লোহাপট্টি এবং কাশিপুর হাট বাজার কবুতরের হাটে প্রায়ই বিভিন্ন দেশী,পরিযায়ী পাখি বিক্রির খবর শোনা যায়।
দেশের বিভিন্ন চর অঞ্চল (যেমন:ভোলা, গলাচিপা ইত্যাদি) থেকে দেশী এবং পরিযায়ী পাখি ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্চমূল্য বিক্রি হচ্ছে। এরই মধ্যে বরিশাল শহরও বাদ নেই। গ্রামাঞ্চল থেকে বিভিন্ন দেশী পাখি ধরে তা বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরুপ। এক ধরনের চোরাকারবারি দল বরিশাল শহরেও ছোট ছোট ভূমিকা রাখছে যা ভবিষ্যতে বড় আকার ধারন করতে পারে।
এ ধরনের কার্যক্রমের ফলেই আজ দেশ থেকে অনেক প্রজাতির পাখি হারিয়ে গেছে। উদাহরণস্বরুপ বলা যায় ফ্লোরিকান ময়ূর, পিংক মাথা হাঁস, রাজশকুন। এছাড়া তালিকায় আছে ভাদিহাঁস, বালিহাঁস, দিগহাঁস, কালো তিতির, চন্দনাসহ আরো বেশ কিছু প্রজাতির প্রাণী যারা মহাবিপন্নের ঝুঁকিতে আছে। বন্যপ্রাণী (পাখি বা পশু) শিকার করা, দখলে রাখা, হত্যা করা এবং মাংস খাওয়া আইন ও দন্ডনীয় অপরাধ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকারের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিরাপত্তা আইন ২০১২ ‘র দুটো ধারাতে চোখ বুলানো যাক…ধারা ৩৪ঃ যেকোনো বন্যপ্রাণী আটক,হত্যা,শিকার,ক্রয়,বিক্রয় ও পরিবহন দন্ডণীয় অপরাধ।যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছরের কারাদ- বা ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড। ধারা ৩৮ঃ দেশী ও পরিযায়ী পাখি আটক,হত্যা,শিকার,ক্রয়,বিক্রয় ও পরিবহন দন্ডনীয় অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছরের কারাদ- বা ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড।
আমরা জানি সুন্দরবন ও টাঙ্গুয়ার হাওরকে “রামসার সাইট” ঘোষণা করা হয়েছে।এছাড়া টাঙ্গুয়ার হাওর,হাইল হাওর,নিঝুম দ্বীপ, সোনাদিয়া দ্বীপকে “ফ্লাইওয়ে সাইট” ঘোষনা করা হয়েছে।এ সকল এরিয়াতে ‘স্ট্রেংদেনিং রিজিওনাল কো-অপারেশন ফর ওয়ার্ল্ডলাইফ প্রটেকশন’ নামক প্রকল্পের আওতায় বনবিভাগ, বিভিন্ন এনজিও এবং বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় একত্রে কাজ করছে। বন্যপ্রাণীপ্রেমীদের উৎসাহিত করতে ‘বঙ্গবন্ধু এওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন’ প্রদান করা হচ্ছে।
সুতরাং,সারাদেশে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে যে আয়োজন সে লক্ষ্যে বরিশালেও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করছি। দেশী, পরাযায়ী পাখি সংরক্ষণে বিভিন্ন পাখির দোকান, সাপ্তাহিক হাট-বাজারে লক্ষ্য রাখার এবং দোষীকে আইনের আওতায় আনার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া অতি জরুরী। শুধুমাত্র আইন তৈরি না করে তা প্রয়োগের সময়ও এসেছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT