রাতের আধাঁরে মেঘনা নদীর তীর থেকে মাটি পাঁচার রাতের আধাঁরে মেঘনা নদীর তীর থেকে মাটি পাঁচার - ajkerparibartan.com
রাতের আধাঁরে মেঘনা নদীর তীর থেকে মাটি পাঁচার

3:22 pm , November 29, 2020

সাঈদ পান্থ ॥ রাতের আধাঁরে মেঘনা নদী থেকে মাটি কেটে পাচাঁরের অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। উত্তোলিত মাটি ঢাকায় কয়েকটি ইটভাটায় পাচাঁর করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর এই পাঁচারের কারণে নদী ভাঙ্গনের আশংকা করছে জেলার হিজলা উপজেলার হিজলা-গৌরবদী ইউনিয়নের বাসিন্দারা। যার কারণে গত ২৭ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। বাধ্য হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মিলন মাটি উত্তোলন করা হবে না বলে ঘোষণা দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হিজলা-গৌরবদী ইউনিয়নের পূর্ব মান্দা, অরাকূল গ্রামের ৩/৪টি স্পট থেকে ৮টি বেকু মেশিনের সহযোগিতায় গত দুই সপ্তাহ ধরে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে সর্বহারা নেতা জাকির সিকদার। উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলনের সহযোগিতায় এই মাটি কেটে নেয়া হয়। যা ঢাকার কয়েকটি ইটভাটায় সরবারহ করা হয়। ইউপি চেয়ারম্যানের প্রভাবের কারণে সেখানে কেউ বাঁধা দিতেও সাহস পাচ্ছে না। পরে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে গত ২৭ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিক্ষোভ প্রর্দশন ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। বাধ্য হয়েছে সেই বিক্ষোভ সমাবেশে ইউপি চেয়ারম্যান মিলন মাটি কাটা বন্ধ করে দেয়া হবে বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয়দের দাবী এই মাটি কাটার কারণে ইউনিয়নের মানচিত্র যেমন ছোট হয়ে আসছে, তেমনি নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে ইউনিয়নবাসী। যার কারণে তারা বিক্ষোভ প্রর্দশন করেছে।
অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও হিজলা গৌরবদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলন, দুই দিন আগেই পরিষদে মিটিং করে মাটি কাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আজই তারা এই ইউনিয়ন ছেড়ে চলে যাবে। আমি যদি এদের সাথে জড়িত থাকতাম তবে কেন মাটি কাটাদের বিরুদ্ধে কথা বলবো। এমনি ইউএনওকেও বলা হয়েছে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য। সেখানে মাটি কাটছিল জাকির সিকদার। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই অপরাধের সাথে আমার নাম জড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় জাকির সিকদার বলেন, ‘আমি তো মাটির ব্যবসাই করি না। যে আমার নাম বলছে, সেই মিথ্যা কথা বলছে। তবে আমি শুনেছি একদিন মাটি কেটে নেয়া হয়েছে। কিন্তু কে নিয়েছে তা আমি জানি না।
জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, ‘কোথাও এধরনের ঘটনা পেলে আমরা মোবাইল কোর্ট পাঠাই। কিন্তু অনেক সময় রাতের বেলা হলে সেটা সম্বব হয় না। সেক্ষেত্রে পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চাই আমরা। হিজলা গৌরবদীর বিষয়টি আমার জানা নেই। অবশ্যই খোজঁ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’ স্থানীয় সাংসদ পংকজ নাথ বলেন, অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন ও ইটভাটায় মাটি কাটার কারণেই নদী ভাঙ্গনের মূল কারণ। প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বালুখেকো ও অবৈধভাবে নদীর পাঙ কেটে মাটি উত্তোলনকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা দরকার।
এ ব্যাপারে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সংসদ সদস্য কর্নেল (অব) জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নদী শাসন ও স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প গ্রহণ করেও কাজ শুরু করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, আমরা নদীতে ড্রেজিং করি, তীর রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ করি। কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু লোক এসে নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে, এতে নদীর তীর ভেঙ্গে যায়। আর আমরা বাঁধ নির্মাণ করলে তাও ভেঙ্গে যাবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT