অ্যাসাইনমেন্টের নামে শিক্ষার্থীদের নেয়া হচ্ছে স্কুলে ॥ নেপথ্যে বেতন আদায় অ্যাসাইনমেন্টের নামে শিক্ষার্থীদের নেয়া হচ্ছে স্কুলে ॥ নেপথ্যে বেতন আদায় - ajkerparibartan.com
অ্যাসাইনমেন্টের নামে শিক্ষার্থীদের নেয়া হচ্ছে স্কুলে ॥ নেপথ্যে বেতন আদায়

3:23 pm , November 7, 2020

সাঈদ পান্থ ॥ বাংলাদেশে করোনা ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় এরইমধ্যে এইচএসসি পরীক্ষায় অটোপাস পাচ্ছেন সব পরীক্ষার্থী। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা হবে না সে সিদ্ধান্ত আগেই জানানো হয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩০ দিনের সিলেবাসে মূল্যায়ন করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) জানিয়েছে, নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই ৩০ দিনের সিলেবাসে প্রতি সপ্তাহে একটি করে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা বাসায় বসে সেই এসাইনমেন্ট শেষ করে স্কুলে জমা দেবে। তার ভিত্তিতেই তাদের মূল্যায়ন করা হবে। এমনকি যাদের অনলাইন সুবিধা আছে তারা অনলাইনে এসাইনমেন্ট নেয়া ও জমা দিতে পারবেন। যাদের নাই তাদের অভিভাবকেরা শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসাইনমেন্ট নেবেন ও জমা দেবেন। আর যারা করোনার কারণে অন্য এলাকায় চলে গেছেন তার তাদের কাছের স্কুল থেকে এই সুবিধা নিতে পারবেন। প্রয়োজন হলে সরাসরি মাউশি থেকেও অ্যাসাইনমেন্ট নেয়া ও জমা দেয়া যাবে। কিন্তু বরিশালে এর চিত্র অন্য ধরনের। এখানে শিক্ষার্থীদের স্কুলে স্কুলে নিচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। যে কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশের স্কুল কলেজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে বা এই অ্যাসাইনমেন্ট পদ্দতি চালু করা হয়েছে সেটা মানছেন না শিক্ষকরা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, অ্যাসাইনমেন্ট বুঝিয়ে দিতে শিক্ষার্থী ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের কাছে যে বকেয়া বেতন রয়েছে তা নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে এই বেতন তোলা হচ্ছে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন বেতন নেয়া যাবে না তাও সরকার বলেনি।
বরিশাল সদর উপজেলার একজন অভিভাবক গোলাম মোস্তফা মনে করেন, করোনায় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অনেক সময় পার করা হয়েছে। অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের তেমন সম্পৃক্ত করা যায়নি। কারণ একদিকে শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাব, অন্যদিকে ইন্টারনেট সুবিধা সবার না থাকা। এখন যে এসাইমেন্টের কথা বলা হচ্ছে সেটা অনলাইনের চেয়ে ভালো। তবে এটা আরো অনেক আগে শুরু করলে ভালো হতো। কিন্তু এই অ্যাসাইনমেন্টের নামে স্কুলে শিক্ষার্থীদের আনা হচ্ছে। এনে তাদের কাছে স্কুলের বেতন, টিউশন ফি, সেশন চার্চ চাচ্ছে। আর এই টাকা নেয়ার জন্যই শিক্ষার্থীদের স্কুলে নেয়া হচ্ছে। সরকার অনলাইনে এই অ্যাসাইনমেন্ট পদ্দতি চালু করলেও তা তোয়াক্কা না করে ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে আনছে। করোনা পরিস্থতিত কারণে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার নানা চেষ্টা চলছে। তবে তা তেমন সফল হচ্ছে না। কারণ দেশের বিশেষ করে গ্রামের শিক্ষার্থীদের অনলাইন সুবিধা নাই বললেই চলে। আর সংসদ টেলিভিশন স্যাটেলাইট হওয়ায় এর মাধ্যমে যে পাঠদান করা হচ্ছে তাও সবাই নিতে পারছে না। অবশেষে অ্যাসাইনমেন্ট পদ্দতি চালু করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, ‘অনলাইন থেকে অ্যাসাইনমেন্ট নিতে পারবে। তারপর সেটা না পারা গেলে স্কুলে থেকে সংগ্রহ করবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে কেউ ফোর্স করতে পারবে না।’ এব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর এম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অ্যাসাইনমেন্ট নিতে প্রথমে অনলাইনে চেস্টা করবে। এরপর অভিভাবক ও শিক্ষকদের মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট নিবে। তারপর এই দুই সুযোগ না থাকলে ছাত্রছাত্রীরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে তাদের অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করবে। তাও স্কুলের গেটে, বা ক্লাস থেকে নিতে পারবে। তিনি বলেন, অর্থ আদায়ের জন্য যদি চাপ প্রয়োগ করা হয় তবে সেই স্কুলের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT