পাথরঘাটার নীলিমা পয়েন্ট, প্রশান্তিময় নিসর্গ পাথরঘাটার নীলিমা পয়েন্ট, প্রশান্তিময় নিসর্গ - ajkerparibartan.com
পাথরঘাটার নীলিমা পয়েন্ট, প্রশান্তিময় নিসর্গ

1:48 pm , November 5, 2020

পাথরঘাটা প্রতিবেদক ॥ বরগুনা পাথরঘাটা বিষখালী নদীর জলধারা মিলেছে দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় । বিষখালীর বাঁধের পাড়ে দাড়ালে যতদুর চোখ যায় বিশাল জলরাশি ছুঁই ছুঁই সুনীল আভা ছড়ানো আকাশে শোভন মেঘের রাশি। নদীর তীরের চরে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল চরভূমিতে জোয়ারের জলে ভেসে থাকে সবুজ প্রকৃতি। সাগরের জলরাশী ছুঁয়ে আসে নির্মল বাতাস। বিকেল নামলে দর্শনার্থীদের সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে বাঁধের পাড়ের চরাঞ্চল। সৌন্দর্য পিপাসুরা হারিয়ে যায় আকাশের নীলিমায় । উপকূলীয় বরগুনার পাথরঘাটা পৌর শহরের দক্ষিণ অংশের বিষখালী নদীতীরের শহররক্ষা বাঁধ এখন পর্যটন সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। সুনীল আকাশ আর বিশাল জলরাশী এখানে একাকার বলে এ স্থানের নামকরন করা হয়েছে নীলিমা পয়েন্ট। বরগুনা জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে পর্যটন সম্ভাবনার লক্ষ্য নিয়ে নীলিমা পয়েন্ট নামে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরিকল্পনা নিয়েছে। পাথরঘাটা পৌর শহরের দক্ষিনে, দুই নম্বর ওয়ার্ড। সেখানে বিষখালী নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ন বেড়ি বাঁধটি মেরামত হচ্ছে, সুরক্ষার জন্য স্থাপন করা হচ্ছে কংক্রিট ব্লক। এখনো ব্লক বসানোর কাজ অসম্পূর্ণ। দক্ষিনে বঙ্গোপসগরের মোহনা। সবসময় থাকে মৃদুমন্দ বাতাস। কানে ভেসে আসে বহমান নদীর পানির শব্দ। আছে জেলেদের আনাগোনা। গোধূলীতে নীল আকাশ আলিঙ্গন করে বিষখালীর পূর্ব তীরের গাছ গাছালির সাথে। নির্মিত ব্লকে বসে সন্ধ্যায় দেখা যায় পূর্ব দিক থেকে চাঁদ ওঠার দৃশ্য। চাঁদের আলো শান্ত নদীতে এক নয়নাভিরাম দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। দুপুরের সূর্য ক্রমশ পশ্চিমে হেলে পড়লে ওখানে শুরু হয় লোক সমাগম। বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ জড়ো হয়। অবস্থান করে রাত অবধি। কংক্রিটের ব্লকের উপর বসে সময় কাটায়। ক্রমশ ঘিঞ্জিহয়ে যাওয়া শহরের মানুষ কোলাহলমূক্ত এখানেই খুজেঁ পায় একটু নিশ্বাস নেয়ারমত স্থান। মনে হবে যেন দখিনের জানালা। ফিরে পায় প্রাণচাঞ্চল্য। শহরের ঈমান আলী সড়কের দক্ষিন প্রান্ত থেকে শুরু করে বেরিবাঁধটি যেখানে শেষ হয়েছে তার নাম স্থানীয় ভাবে পুতাভাঙ্গা কোথাও মুতানিয়া বলে পরিচিত। এছাড়া সামুদ্রিক জলোচ্ছাসে বাঁধটি বার বার ভেঙ্গে যায় বলে অনেকের কাছে এলাকাটি ‘ভাঙ্গন’ নামে পরিচিত। স্থানীয় প্রবীন ব্যাক্তিরা বলেছেন এক সময় বাওয়ালীরা নদীতীরে তাঁদের নৌকা নোঙ্গর করত। বাওয়ালীরা তাঁদের সুবিধা মত নামকরণ করলেও কাগজপত্রে এ নামের কোন তথ্য নেই। নাম গুলো শোভন নয় তাই এর নামকরণ করা হয়েছে নীলিমা পয়েন্ট । পাথরঘাটা কলেজের বাংলা বিভাগের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক নৃপেন্দ্র নাথ সাধক বলেন, শহরের দক্ষিণ অংশে সমৃদ্ধ বিষখালী নদী। গিয়ে মিশেছে সাগর মোহনায়। নদী তীরের সুউচ্চ ঢাল বেয়ে চরভূমিতে নানা বৃক্ষরাজি। বাঁধ থেকে যতদুর চোখ যায় বিশাল জলরাশি আর সুনীল শোভন নীলাকাশ। এখানের প্রকৃতি ও বহমান বাতাস মনে প্রশান্তি এনে দেয়। নীলিমা পয়েন্ট নামকরণ যথার্থ। যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে উন্নয়ন ঘটাতে পারলে এখানে পর্যটন সম্ভাবনা রয়েছে। পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ বলেন পাথরঘাটা পর্যটন সম্ভাবনাময় শহরের মানুষের সময় কাটানোন জন্য ভাল স্থান নীলিমা পয়েন্ট। এর উন্নয়ন আবশ্যক। উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, নীলিমা পয়েন্টকে শহরের উৎকৃষ্ট আকর্ষন হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে। পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিন সোহেল বলেন, আকাশ ও সাগর মিলে মিশে একাকার এ নীলিমা পয়েন্টে। যতদূর চোখ যায়, অথৈ সাগর; ওপারে আছে নীল – লাল সবুজ ঘেরা আকাশ। সাগরের মোহনায় নীলিমার নীল আকাশ যেন চোখ ফেরানো যায় না। সন্ধ্যা নেমে আসতেই আকাশছোঁয়া নীলিমার নিল মিশে একাকার হয়ে যায়। নীল আকাশের আভা আর নিচে জলকেলী মিলে সত্যিই অপরূপ সুন্দর এই নীলিমা। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকগন নীলিমার নীল উপভোগ করতে ছুটে আসবে এ নীলিমা পয়েন্টে এ প্রত্যাশা পাথরঘাটাবাসীর। এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, নীলিমা পয়েন্ট স্থানটি মনোরম । পর্যটন সম্ভাবন্ াহিসেবে গুরুত্ব দেওয়া হবে। নীলিমা পয়েন্ট এর উন্নয়নে শিঘ্রই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুরু হবে শুভ সূচনা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT