২৪ ঘন্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে নগরীতে জলাবদ্ধতা ২৪ ঘন্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে নগরীতে জলাবদ্ধতা - ajkerparibartan.com
২৪ ঘন্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে নগরীতে জলাবদ্ধতা

3:09 pm , October 23, 2020

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি সরে গিয়ে নি¤œচাপ থেকে গভীর নি¤œচাপে পরিনত হয়ে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল সহ উপকূলীয় জনপদকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। বিশেষ করে বরিশাল নগরীর রাস্তাঘাট, ড্রেন পানির নিচে তলিয়ে গেছে। স্মরণকালের সর্বাধিক বৃষ্টিপাতে নগর জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরে। নগরীর সদর রোড, বটতলা, মুন্সিগ্যারেজ, নবগ্রাম রোড, অক্সফোর্ড মিশন রোড, ভাটিখানা, পুলিশ লাইন, সার্কিট হাউজ, শাহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু উদ্যান মাঠে, কেডিসি মাঠে হাটুঅবধি পানি জমেছে। নি¤œচাপটি শুক্রবার সকাল ৯টায় পায়রা বন্দর থেকে ২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। আবহাওয়া বিভাগের বুলেটিনে ঝড়টি সন্ধ্যার পরেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা উপকূল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবার কথা বলা হয়েছে। নি¤œচাপে ভর করে প্রবল বর্ষনের সাথে ঝড়ো হাওয়ায় উপকূলভাগ সহ দক্ষিনাঞ্চলের স্বাভাবিক জনজীবন অনেকটা লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। সাগর যথেষ্ঠ মাত্রায় উত্তাল রয়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালা ধেয়ে এসে দক্ষিণাঞ্চল সহ সমগ্র উপকূলভাগে বৃষ্টি ঝড়াচ্ছে। বরিশাল মহানগরীও অন্তত ৮০ভাগ এলাকা প্লবিত হয়েছে। নি¤œচাপটি শুক্রবার সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী সাগরদ্বীপ উপকূল অতিক্রম শুরু করে। দুপুর ১২টায় ঝড়টি খুলনা-সাতক্ষীরার অদুরে অবস্থান করছিল। নি¤œচাপের প্রভাবে প্রবল বর্ষণের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের পানি ধেয়ে আসছে উপকূলভাগ থেকে দক্ষিণের জনপদে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশাল, পটুয়াখাালী, বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠী ও বাগেরহাটের উপকূলীয় চরসমুহ স্বাভাবিকের চেয়ে চেয়ে ৩-৪ ফুট অধিক জোয়ারে প্লাবিত হবার কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে মেঘনা, তেতুলিয়া, বলেশ^র, কঁচা, বিষখালী, পায়রা, সুগন্ধা ও সন্ধা সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অব্যাহত প্রবল বর্ষনে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নগর-মহানগর ২-৫ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টার পূববর্তী ২৪ ঘন্টায় বরিশালে ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যারমধ্যে সকাল ৬টা থেকে ৯টার মধ্যেই প্রায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ৯টার পরে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আরো প্রায় ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বরিশালে। শুক্রবার সকাল ৯টার পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় কুয়াকাটা সংলগ্ন কলাপাড়াতে দেশের সর্বাধীক ২৫৪ মিলিমিটার ও পটুয়াখালীতে ১৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পায়রা সহ সব সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারী সংকেত নামিয়ে ৩নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বরিশাল নদী বন্দরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে অনধীক ৬৫ ফুট দৈর্ঘের সব যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত সব মাছধরা ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রবল বর্ষণের পরে ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাত হ্রাস পেলেও উপকূলভাগ সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল ঘনকালো মেঘে ঢাকা রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল জুরে ১০-১৫ কিলোমিটার বেগের বাতাসের সাথে হালকা বর্ষণ অব্যাহত ছিল। বরিশাল মহানগরীর অন্তত ৮০ভাগ এলাকা এখনো বৃষ্টির পানির তলায়। সিটি করেপারেশন থেকে পয়ঃনিস্কাশন ব্যাবস্থা সচল করতে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বৃষ্টিপাতের প্রবনতা হ্রাস পেলে বরিশাল মহানগরী প্লাবনমূক্ত হতে আরো অন্তত ২৪ ঘন্টা সময় লাগতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আলাপ করতে সিটি করপোরেশনের কনজার্ভেন্সী বিভাগের দায়িত্বরত ডা. রবিউল আলমের সাথে যোগাযোগের বহু চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। আবহাওয়া বিভাগ থেকে পরবর্তি শনিবার সকালের পরবর্তি ৪৮ ঘন্টায় আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতির কথা বলা হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT