মাদকাসক্ত যুবকের মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্যের ব্যাখা দিলেন ড্রিম লাইফ (পিতৃছায়া) কর্তৃপক্ষ মাদকাসক্ত যুবকের মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্যের ব্যাখা দিলেন ড্রিম লাইফ (পিতৃছায়া) কর্তৃপক্ষ - ajkerparibartan.com
মাদকাসক্ত যুবকের মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্যের ব্যাখা দিলেন ড্রিম লাইফ (পিতৃছায়া) কর্তৃপক্ষ

3:25 pm , September 5, 2020

নগরীতে মাদকাসক্ত যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক সহ ৫ স্বেচ্ছাসেবককে আটক ও হত্যা মামলা দায়েরের ঘটনার বিস্তারিত বিষয়বস্তু জানিয়েছে নিরাময় কেন্দ্রটির কর্তৃপক্ষ। গত ২ সেপ্টেম্বর ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্খিত এই দূর্ঘটনাটিকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর কিছু সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়েছেন “ড্রিম লাইফ (পিতৃছায়া)” নামক মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক আব্দুল বারী। ঘটনাটিকে নিয়ে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় দৈনিকে যে সকল শিরোনাম ব্যবহার করে এই ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তার সাথে প্রকৃত ঘটে যাওয়া ঘটনার অনেক পার্থক্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত ২ আগস্ট এর ঘটনাটির বিশদ বিবরনে পরিচালক আব্দুল বারী জানান, নগরীর রূপাতলী রেডিও স্টেশন এলাকার বাসিন্দা সুমন খান (৩৫) মুলত একজন মানসিকরোগী ও একই সাথে মাদকাসক্ত ব্যাক্তি ছিলেন। গত ৯/১২/২০১৯ তারিখ সুমন খানকে তার পরিবার নিরাময়ের জন্য ড্রিম লাইফে ভর্তি করান। দীর্ঘ ৬মাস পরম যতেœ তার চিকিৎসার পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে ১৩/০৬/২০২০ তারিখে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। কিন্তু তিন মাস যেতে না যেতেই সুমন পুনরায় মাদক গ্রহন শুরু করে। একইসাথে তার মানসিক সমস্যা পুনরায় দেখা দেয়। এতে তার পরিবার পুনরায় মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের দারস্থ হয়। সুমন মাদকদ্রব্য পুনরায় গ্রহনের ফলে এতটাই আগ্রাশী হয়ে ওঠে যে তার পরিবার নিরাময় কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে তাকে (সুমন) বাসাথেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করে নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক নাজমুল হাসান বাপ্পীর সাথে। ঘটনার দিন ২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ০১৭৭১৫৩৫৬৭৭ নম্বর থেকে সুমনের ছোট ভাই হত্যা মামলার বাদী মো. নোমান খান নিরাময় কেন্দ্রের অফিসিয়াল নম্বর ০১৭১১১০৩৮৮৯ নম্বরে যোগাযোগ করে সুমনকে বাসা থেকে নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে ০১৭১৮৬৫৪৪৪৫ নম্বর থেকে পুনরায় ফোন করে সুমনকে নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবক পাঠানোর অনুরোধ করে সুমনের বড় ভাই মো. সুলতান খান। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ড্রিম লাইফ কর্তৃপক্ষ ৪জন স্বেচ্ছাসেবক যথাক্রমে মো. রায়হান, মো. রাব্বি, মো. বায়জিদ এবং উজ্জল সমদ্দারকে সুমনের বাসভবন বরিশাল রেডিও সেন্টার এর দক্ষিন পাশে খান বাড়িতে প্রেরন করে। তারা ঘটনাস্থলে পৌছানো মাত্র সুমন উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং যাতে করে তাকে আটক করে নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া না হয় সেজন্য স্বেচ্ছসেবকদের উপর চড়াও হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সুমনের দুই ভাই নোমান খান ও সুলতান খান একত্রিত হয়ে সুমনকে নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানোর চেষ্টা শুরু করে। এ সময় মাদকাসক্ত সুমন অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং স্ট্রোক করে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরন করে। তার মৃত্যুর সাথে-সাথেই পুরো প্রেক্ষাপট বদলে যায়। সুমনকে হত্যা করা হয়েছে বলে তার ভাইয়েরা অভিযোগ তোলে স্বেচ্ছাসেবকদের উপরে। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়া মাত্র এলাকাবাসি স্বেচ্ছাসেবকদের শারিরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে। এ সময় নিরুপায় হয়ে স্বেচ্ছাসেবকরা নিরাময় কেন্দ্রে থাকা পরিচালক নাজমুল হাসান বাপ্পীকে বিষয়টি অবহিত করে। বাপ্পী তাৎক্ষনিক ৯৯৯ ফোনদিয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সহযোগীতা কামনা করে এবং নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সে যাওয়ার পরে তার উপরেও চড়াও হয় এলাকাবাসি সহ সুমনের স্বজনরা। তাৎক্ষনিক ওই স্থান থেকে সাহায্য লাভের আসায় নাজমুল হাসান বাপ্পী র‌্যাব-৮ এর রুপাতলী কার্যালয়ে প্রবেশ করে। প্রকৃত পক্ষে যখন সুমনের মৃত্যু হয় বাপ্পী তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলোনা বলে জানায় পরিচালক আব্দুল বারী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য বাপ্পী সেখানে যায় কিন্তু তাকেই হত্যা মামলার প্রধান আসামী করা হয়েছে। এই ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় বাপ্পীকে ১ নম্বর সহ ৪ স্বেচ্ছাসেবককে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের ছোট ভাই মো. নোমান খান। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে এবং বাপ্পীসহ মোট ৫জন গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা এমন হলেও ওই দিনই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য উল্লেখ করে মনগড়া শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে জানান পরিচালক আব্দুল বারী। উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। ২৭/০৬/২০১৯ তারিখে রেজিস্ট্রেশন পাওয়া ড্রিম লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র (পিতৃছায়া) গত ১ বছরে সুনামের সহিত তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ পর্যন্ত ৫০এর অধিক মাদকাসক্ত ও মানসিক সমস্যায় ভোগা রোগীর সফল চিকিৎসা দিয়েছে এই কেন্দ্রটি। বর্তমানেও সেখানে ৪০ জনের মত মাদকাসক্ত নিরাময়ের উদ্দেশ্যে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের সকলের ভাষ্যে এই নিরাময় কেন্দ্রে রোগীদের সাথে জোর-জবরদস্তি তো দূরের কথা তাদের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে পরম যতেœ। তাই বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনার উন্মোচন ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও মামলার প্রধান আসামী হওয়া নাজমুল হাসান বাপ্পীর মুক্তির দাবী জানিয়েছে তারা।
মো: আবদুল বারী
পরিচালক
মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র
ড্রিম লাইফ (পিতৃছায়া)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT