3:09 pm , June 4, 2020
শামীম আহমেদ ॥ বৈশ্বিক কোভিড-১৯ করোনা সংক্রমন ছোবল পরিস্থিতি মোকাবেলায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ত্রান খাদ্য সামগ্রী বিতরন ও সহায়তা সহ বিভিন্ন কর্মতৎপরতা কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। করোনার এই সংক্রমনকালে গভীর রাতে বিসিসি’র কর্মীরা নগরীর ত্রিশটি ওয়ার্ডের অলি গলিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৪ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন বলে সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে। অন্যদিকে বিসিসির স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে মহানগর পুলিশের ৬ শতাধিক সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নগরীর দুস্থদের চাহিদা মেটাতে বিশেষ ওএমএস কার্ডের সংখ্যা পূর্বের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া করোনা প্রতিরোধে নেয়া বিভিন্ন কর্ম তৎপরতা অব্যাহত রাখাসহ নানা উদ্যোগ সরাসরি নিজেই পরিচালনা করছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত ৩০ মার্চ থেকে নগরীর কর্মহীন মানুষদের বাসায় বাসায় গিয়ে খাদ্য সামগ্রী ( চাল, মসুর ডাল, আলু ও সাবান) পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেন সিটি মেয়র।
প্রথম দফায় মোট ৫৭ হাজার ১৭১ পরিবারের বাসায় গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়ার কাজের নেতৃত্ব দেন মহানগর আ’লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল। ঈদ উপলক্ষে দুইদিন বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার ৪০৩ টি পরিবারের কাছে এ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৮৩ হাজার ৫৮৪ পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে খাদ্য সহায়তা। মেয়রের ঘোষনা অনুযায়ী পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া করোনার নমুনা সংগ্রহে বিসিসি স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি মেয়রের নির্দেশে স্বাস্থ্য শাখা থেকেও একটি টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে সর্বক্ষন। ওই টিম এখন পর্যন্ত মহানগর পুলিশের ৬ শতাধিক সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এছাড়া ডেঙ্গুর বিস্তাররোধে মশক নিধন কার্যক্রম নগরীতে আরো জোরদার করা হয়েছে।
অপরদিকে পানি সরবরাহ বিভাগে নগরজুড়ে জীবনানুনাশক ¯েপ্র ছিটানোর পরিধি আরো বাড়িয়েছে। বিসিসি সূত্র জানায়, দেশব্যাপী করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নিজ উদ্যোগে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। করোনা সংক্রমনের শুরুতেই বিসিসির স্টাফদের সুরক্ষায় বায়োমেট্টিক হাজিরা স্থগিত, নগর ভবনসহ নগরীর বিভিন্ন সড়কের ১২টি পয়েন্টে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কার্যক্রম চালু করেন। এরপর মেয়রের সরাসরি তত্ত্বাবধানে গত ৩০ মার্চ থেকে অসহায় মানুষদের খাদ্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচি চালু করা হয়। বসতবাড়ী ছাড়াও নগরীর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিক সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহের অসহায়দের মাঝেও খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া নগরীতে সরকারের দেয়া বিশেষ ওএমএস কার্ডের চাহিদা বেশী থাকায় মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ উদ্যোগী হয়ে কার্ডের সংখ্যা বাড়িয়েছেন।
এদিকে বিসিসির পানি সরবরাহ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মেয়রের নির্দেশে গড়ে প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন সড়কে ৪২ হাজার লিটার জীবানুনাশক পানি ¯েপ্র করা হয়েছে। পানি সরবরাহ শাখায় ৯ হাজার ধারন ক্ষমতার নতুন একটি ভাউজার যুক্ত হওয়ায় জীবনুনাশক ¯েপ্র ছিটানো কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিন নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক, বাজার ও জনসমাগম হয় এমন এলাকায় ¯েপ্র ছিটানো হচ্ছে। এর মধ্যে ছোট দুটি গাড়ীর সাহায্যে নগরীর বর্ধিত এলাকায় এবং বড় গাড়ীর সাহায্যে গুরুত্বপূর্ন সড়কগুলোতে জীবানুনাশক ¯েপ্র ছিটানো হচ্ছে।
অপরদিকে বিসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, করোনা রোধে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরো জোরদার করা হয়েছে। কয়েকশত কর্মী দিনরাত নগরী পরিচ্ছন্ন রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া মশক নিধন কার্যক্রমও চলছে জোরেশোরে। ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে প্রতিদিন সকালে নগরীর ২ থেকে ৩টি ওয়ার্ডে ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে ¯েপ্র করা হচ্ছে। বিকেলে ফগার মেশিনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ন সড়ক ও ড্রেনে ¯েপ্র করা হচ্ছে। সিটি মেয়রের নির্দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ ও জনগনের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে নগরীতে বিসিসি কর্তৃক ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এদিকে অসহায় মানুষদের সহায়তার জন্য গঠন করা হয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন ত্রান তহবিল। গত ৬ এপ্রিল এ তহবিল চালু করেই মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ তাঁর দায়িত্বকালিন সময়ের প্রাপ্য সম্মানির ৩৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা তহবিলে প্রদান করেন।