পদ্মা-কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ কার্যক্রম শেষ হবে এপ্রিল ও ডিসেম্বরে পদ্মা-কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ কার্যক্রম শেষ হবে এপ্রিল ও ডিসেম্বরে - ajkerparibartan.com
পদ্মা-কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ কার্যক্রম শেষ হবে এপ্রিল ও ডিসেম্বরে

2:31 pm , March 11, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রায় ১ হাজার ৩শ কোটি টাকার সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পদ্মা ও কীর্তনখোলা নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে চলছে। খর¯্রােতা এ দুটি নদীর ভাঙনে বরিশাল ও শরিয়তপুরের বিশাল জনপদ বিলীন হয়ে গেছে ইতিপূর্বে। কয়েক হাজার কোটি টাকার সরকারীÑবেসরকারী সম্পদ নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার সাথে সাথে বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।
শরিয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার বিশাল এলাকাকে পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষায় ২০১৭ সালের শেষভাগে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সুপারিশে একনেক প্রায় ১২শ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প অনুমোদন করে। অপরদিকে বরিশাল মহানগরীর বেলতলা খেয়াঘাট থেকে সদর উপজেলার চরবাড়ীয়া এলাকার বিস্তির্ণ জনপদকে কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় ২০১৮-এর প্রথম ভাগে প্রায় সাড়ে ৩শ কোটি টাকার অপর একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্প দুটি অনুমোদনের সময় সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তা নৌ বাহিনীর মাধ্যমে ডিপিএম পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়।
কিন্তু এর পরেই নানা জটিলতা আর কালক্ষেপনে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যায়। এমনকি শরিয়তপুরের নড়িয়া-জাজিরা প্রকল্পটি একনেক-এর অনুমোদনের ১১ মাস পরে তা ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটিতে অনুমোদন লাভ করে। ইতিমধ্যে ঐ এলাকার বিশাল জনপদ পদ্মার করাল গ্রাসে পতিত হয়। যা ছিল দেশের ইতিহাসে এ যাবতকালের একক সর্বগ্রাসী নদী ভাঙন। এর পরেই পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়েচরে বসে ২০১৯-এর ১৪ জানুয়ারী খুলনা শিপইয়ার্ডের সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সম্পাদিত ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকার চুক্তি অনুযায়ী খুলনা শিপইয়ার্ড তার নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দ্রুত কাজ শুরু করে। ফলে গত বছর বর্ষা মৌসুমে নড়িয়া-জাজিরা এলাকায় পদ্মার ভাঙনের তীব্রতা হ্রাস করা সম্ভব হয়। চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শরিয়তপুরের ভাঙন রোধ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যে ভাঙন রোধ প্রকল্প এলাকায় ৪১ লাখ জিও ব্যাগ ডাম্পিং-এর লক্ষ অতিক্রম করে ৪২ লাখেরও বেশী ডাম্পিং সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন মাপের ৩২ লাখ সিসি ব্লক ডাম্পিং-এর স্থলে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ ব্লক তৈরী সম্পন্ন করে সাড়ে ৩ লাখ ব্লক জিও ব্যাগ-এর উপর সাজানো (প্লেসমেন্ট) সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকার বিপরীতে জেগে ওঠা চরসমুহ নদী গবেষনা ইনস্টিটিউট-এর মডেল স্ট্যাডি অনুযায়ী পূণর্বিন্যাস করতে প্রায় ১ কোটি ৫৪ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারন করতে হচ্ছে। যার মধ্যে খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারন সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সাইজের সাকসন কাটারের ৪টি ড্রেজার বর্তমান নড়িয়া ও জাজিরাতে পলি অপসারন করছে।
অপরদিকে বরিশালে কীর্তনখোলার ভাঙন রোধে ২০১৮-এর ১৩ অক্টোবর পানি উনাœয়ন বোর্ডের সাথে ২০৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তি করে খুলনা শিপইয়ার্ড। প্রকল্পটির আওতায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার জিও ব্যাগ-এর মধ্যে ইতিমধ্যে প্রায় সোয়া ৪ লাখ ব্যাগ ডাম্পিং সম্পন্ন হয়েছে। এসব জিও বাগের উপরে ১২ লাখ ৯২ হাজার বিভিন্ন সাইজের সিসি ব্লক প্লেসমেন্ট করার কথা। ইতোমধ্যে ৪ লাখ ব্লক তৈরী করে দেড় লাখ ব্লক প্লেসমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে ভাঙন কবলিত এলাকার বিপরীতে জেগে ওঠা চর সমুহ পূণর্বিন্যাস করে নদীর গতিপথ সোজা করতে প্রায় ৪১ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কীর্তনখোলা নদীর মূল প্রবাহকে বাঁধাগ্রস্থ করে ভাঙনকে ত্বরান্বিতকারী চর সমুহের প্রায় ২৭ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে দিনরাত বরিশালের ভাঙন কবলিত এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজ চললেও আগামী এপ্রিলের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যাপারে খুলনা শিপইয়ার্ড-এর প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তারা জানান, ‘ শরিয়তপুর ও বরিশালের দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নেই আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি’। তবে ‘শয়িতপুরের প্রকল্পটি আগামী বছর এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্নের আশাবাদ ব্যক্ত করে ডিসেম্বরের মধ্যে বরিশালের কীর্তনখোলার ভাঙন রোধ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আশাবাদ’ ব্যক্ত করেছেন কতৃপক্ষ।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT