টিবি হাসপাতালে নেই রোগী তবুও চিকিৎসক-নার্সদের জট টিবি হাসপাতালে নেই রোগী তবুও চিকিৎসক-নার্সদের জট - ajkerparibartan.com
টিবি হাসপাতালে নেই রোগী তবুও চিকিৎসক-নার্সদের জট

1:00 am , March 5, 2020

 

হেলাল উদ্দিন ॥ বরিশাল টিবি হাসপাতাল। নগরীর আমানতগঞ্জে অবস্থিত ১০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে চিকিৎসক নার্সসহ জনবলের কমতি নেই। কিন্তু রয়েছে রোগীর অভাব। প্রায় প্রতিদিনই থাকে রোগী শুন্য। মাসের মধ্যে হাতে গোনা দু’চার জন রোগী এখানে নামে মাত্র চিকিৎসা নেয়। অভিযোগ রয়েছে এখানে পদায়ন নিতে চিকিসক ও নার্সদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে। কারন রোগী না থাকায় নিয়মিত অফিস করতে হয় না তাদেরকে। ফলে ব্যক্তিগত কাজে সময় দিয়ে বাড়তি উপার্জনের সুযোগ রয়েছে এখানে কর্মরতদের। এদিকে বয়সের ভারে ও সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ন ভবনে পরিনত হয়েছে বরিশালের যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসার জন্য একমাত্র এই হাসপাতালটি। স্বয়ং সিভিল সার্জন বললেন টিবি হাসপাতাল নিজেই এখন টিবি রোগে আক্রান্ত। নতুন করে হাসপাতাল নির্মিত না হলে এ সমস্যার সমাধান দেখছেন না তিনি। এমন পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে যক্ষ্মা রোগীরা ছুটছেন বেসরকারী চিকিৎসা কেন্দ্রে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সংস্কারের অভাবে পুরো হাসপাতালটিতে ভুতুরে পরিবেশ বিরাজ করছে। একটি চলমান হাসপাতালের বাহ্যিক যে পরিবেশ থাকার কথা তার নূন্যতমটুকু নেই এখানে। অবস্থা অনেকটা পরিত্যাক্ত ভবনের মত। এর মাঝেই রয়েছে সারি সারি বেড। কিন্তু নেই রোগীর উপস্থিতি। দিনের বেলায় যেমন তেমন রাতের বেলায় পুরো ভবনটি অন্ধকারচ্ছন্ন থাকে। আর এই সুযোগ নিয়ে মাদকের আড্ডা শুরু করে মাদকসেবীরা। জানা গেছে, হাসপাতালটিতে বর্তমানে দুই জন মেডিকেল অফিসার, ৫ জন নার্স এবং অফিস সহকারী, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছনতাকর্মী মিলিয়ে কর্মরত আছে আরো ৫/৬ জন কর্মচারী। কিন্তু বেশীর ভাগ সময়ই দেখা মেলে না তাদের। জানা গেছে ৫ নার্সের মধ্যে ৩ জনই এসেছেন ডেপুটেশনে। অর্থ্যাৎ কর্মরত থাকছেন এখানে আর বেতন নিচ্ছেন অন্য স্থান থেকে। ভিন্ন চিত্র চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও। তারা কাগজে কলমে এখানে পদায়ন থাকলেও ডেপুটেশনে রয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন রোগী না থাকাটাই এখানকার ডাক্তার ও নার্সদের কাজ ফাঁকির প্রধান কারন। তারা এই সময়টা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে দিয়ে বাড়তি উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে চলতি মাসে গত দুদিন পূর্বে একজন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আর গত মাসে ছিলো হাতে গোনা কয়েকজন। হাসপাতালের চিত্র দেখে ভর্তি হওয়ার সাহস করেন না তারা। বহিঃবিভাগে নাম মাত্র চিকিৎসা নিয়েই চলে যেতে হচ্ছে তাদের। তবে একটি সুত্র জানিয়েছে বাস্তবে রোগী না থাকলেও চাকুরীর সুবিধার্থে কাগজে কলমে ভূয়া নাম লিপিবদ্ধ করে রোগী তালিকা দেয় এখানকার দায়িত্বরতরা। জানতে চাইলে বরিশাল সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, এক কথায় টিবি হাসপাতালটি নিজেই এখন টিবি রোগী। অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বহুবার মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন হাসপাতালটিকে পরিপূর্ন হাসপাতালে রুপ দিতে হলে নতুন করে ভবন নির্মানসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন রোগী না থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী পদের বিপরীতে চিকিৎসক ও নার্স রাখতে হয়। কিন্তু রোগী না থাকার সুযোগ নিয়ে কেউ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT