বিশ্ব ভালবাসা দিবস আজ বিশ্ব ভালবাসা দিবস আজ - ajkerparibartan.com
বিশ্ব ভালবাসা দিবস আজ

1:00 am , February 14, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির সাথে তাল মিলিয়ে গোটা নগরীও সেজেছে ভালোবাসা দিবসের সাজে। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস। একই সাথে বসন্তের প্রথম দিন। সার্বজনিন ভালবাসা প্রকাশের এই দিনটি আমাদের দেশে জেনে না জেনে শুরু থেকেই প্রেমিক যুগলের ভালবাসার দিন ভাবা হয়ে থাকে। তবে যাই ভাবা হোক এই দিন উৎযাপনে বিগত কয়েক বছর থেকে একটু বেশি জমকালো আয়োজন হয়ে থাকে। আর এইনগরীর বাসিন্দাদের উৎসব প্রিয়তা অন্যান্যদের তুলনায় একটু বেশি হওয়ায় ভারী আয়োজন নগরীর সকল স্থানে। ভালোবাসার লাল গোলাপ সে তো এখন অনেক মূল্যবান। রেস্টুরেন্ট গুলো আগাম বুকিং হয়ে আছে। নগরীর উপহার এর দোকান গুলোতে তরুন তরুনির উপচে পড়া ভীর। বাকি থাকা নগরীর ভ্রমনের স্থানগুলো পরিপূর্ন গতকাল পহেলা ফাল্গুন এর ভোর থেকেই। এবারের ভালবাসা দিবসের আমেজ একটু বেশিই। ভালবাসা দিবসটিতে কর্মব্যস্ততা এবার আর বাধা হবে না। শুক্রবার তাই ভালবাসা দিবসের বাড়তি পাওনা হিসেবে ছুটিও পাচ্ছেন নগরবাসীরা। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, ভালোবাসা দিবসের এক সপ্তাহ আগ থেকেই এই দিন উদযাপনের জন্য চলছে নানা আয়োজন। এই দিনকে ঘিরে নগরীর স্থায়ী ফুলের দোকান গুলোর সাথে সাথে হয়েছে কমপক্ষে ৫০ টির অধিক ভ্রাম্যমান ফুল বিক্রয়ের স্থান। এ সকল স্থানে পেশাদার ও অপেশাদার বিক্রেতারা নানা ধরনের ফুল বিক্রি করছেন নগরীর বিভিন্ন স্থানে। এক একটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০-৫০ টাকা দরে। ফুল বিক্রেতা মেহেদী হাসান মনু বলেছেন এই দর বেড়ে ১০০ টাকা পর্যন্ত চলে জেতে পারে। গত বছরও এই দরে ফুল বিক্রি করেছেন তারা। বেশির ভাগ ক্রেতাই হচ্ছে তরুন তরুনীরা। নগরীর ছোট বড় সকল রেস্টুরেন্ট গুলোই আগাম বুকিং হয়ে আছে বলে জানান রেস্টুরেন্ট এর স্বাধিকারী তানভীর হাসান অনিক। তিনি বলেন ভালবাসা দিবস উপলক্ষে তাদের রেগুলার খাবারের সাথে সাথে থাকছে ভালোবাসা দিবসের বিশেষ খাবার মেন্যু। তিনি বলেন ভালবাসা দিবসে প্রিয়জনকে নিয়ে সময় কাটানোর জন্য সকল বয়সীরাই আসেন তাই তাদের জন্য বিশেষ করে সাজানো হয়েছে রেস্টরেন্ট। সরকারি ছুটির দিনে এমন একটি দিবস হওয়াতে এবার ভীর অনেকটাই বেশি হবে বলেও জানান তিনি। নগরীর সদর রোডস্থ একটি উপহারের দোকানের মালিক ইফতেখার আহমেদ জানান, ভালোবাসা প্রকাশে সকল বয়সীরাই কিনছেন প্রিয়জনের জন্য নানা উপহার। এই উপহারের পেছনে তারা খরচ করছেন পছন্দের ওপর ভিত্তি করে যেকোন পরিমান টাকা। নগরীর বিভিন্ন ভ্রমনের স্থান ও পার্ক গুলোতে ঘুরে সেখানেকার লোকজনের সাথে আলাপ কালে তারা জানায়, প্রতিবছরের তুলনায় এবছর আগ থেকেই সকল স্থানেই দর্শনার্থীদের উপচে পরা ভীর দেকছেন তারা। এমনিতেই ছুটির দিনে স্থানগুলো দর্শনার্থীতে পরিপূর্ন থাকে তার ওপর ভালোবাসা দিবসের চাপ। তাই তারাও নানা আয়োজন নিয়ে এই দিনটি উৎযাপনে প্রস্তুতি নিয়েছেন। সব মিলিয়ে এবারের ভালোবাসা দিবসটি একটু বিশেষ ভাবেই নগরীতে উৎযাপিত হতে যাচ্ছে বলে সকলেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। যে দিন উৎযাপনে বিশ্ব ব্যাপি এতো আয়োজন আসুন জেনে নেয়া যাক সেই দিনটির শুরুর ইতিহাস, প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল রোমান দেব-দেবীর রানী জুনোর সম্মানে ছুটির দিন। জুনোকে নারী ও প্রেমের দেবী বলে লোকে বিশ্বাস করত। কারো করোমতে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস হওয়ার কারণ ছিল এটিই। আবার কেউ বলেন, রোমের স¤্রাট ক্লডিয়াস ২০০ খ্রিস্টাব্দে দেশে বিয়ে প্রথা নিষিদ্ধ করেন। তিনি ঘোষণা দেন, আজ থেকে কোনও যুবক বিয়ে করতে পারবে না। যুবকদের জন্য শুধুই যুদ্ধ। তার মতে, যুবকরা যদি বিয়ে করে তবে যুদ্ধ করবে কারা? স¤্রাট ক্লডিয়াসের এ অন্যায় ঘোষণার প্রতিবাদ করেন এক যুবক। যার নাম ভ্যালেন্টাইন। অসীম সাহসী এ যুবকের প্রতিবাদে খেপে উঠেছিলেন স¤্রাট। রাজদ্রোহের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় তাকে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোরবেলা মাথা কেটে ফেলা হয় তার। ভালোবাসার জন্য ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে তখন থেকেই এ দিনটিকে পালন করা হয় ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে। তবে এটিও সর্বজন স্বীকৃত নয়। এখানেও দ্বিমত আছে। কারও কারও মতে, প্রাচীন রোমে ভ্যালেন্টাইন নামে একজন চিকিৎসক ছিলেন। তিনি রোগীদের প্রতি ছিলেন ভীষণ সদয়। অসুস্থ মানুষের ওষুধ খেতে কষ্ট হয় বলে তিনি তেঁতো ওষুধ ওয়াইন, দুধ বা মধুতে মিশিয়ে খেতে দিতেন। সেই ডাক্তার খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। প্রাচীন রোমে খ্রিস্টধর্ম তখন মোটেও জনপ্রিয় ছিল না। এই ধর্মে বিশ্বাসীদের শাস্তি দেওয়া হতো। একদিন রোমের এক কারা প্রধান তার অন্ধ মেয়েকে ভ্যালেন্টাইনের কাছে নিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। ভ্যালেন্টাইন কথা দিয়েছিলেন তিনি তার সাধ্যমতো চিকিৎসা করবেন। মেয়েটির চিকিৎসা চলছিল এমন সময় হঠাৎ একদিন রোমান সৈন্যরা এসে ভ্যালেন্টাইনকে বেঁধে নিয়ে যায়। ভ্যালেন্টাইন বুঝতে পেরেছিলেন, খ্রিস্টান হওয়ার অপরাধে তাকে মেরে ফেলা হবে। ২৬৯ খ্রিষ্টাব্দে বা কারও মতে ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি রোম স¤্রাট ক্লডিয়াসের আদেশে ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। তার আগে ভ্যালেন্টাইন অন্ধ মেয়েটিকে বিদায় জানিয়ে একটি চিরকুট লিখে রেখে গিয়েছিলেন। তাকে হত্যার পর কারা প্রধান চিরকুটটি দিয়েছিলেন মেয়েটিকে। তাতে লেখা ছিল, ‘ইতি তোমার ভ্যালেন্টাইন’। মেয়েটি চিরকুটের ভেতরে বসন্তের হলুদ ত্রৌকস ফুলের আশ্চর্য সুন্দর রং দেখতে পেয়েছিল কারণ, ইতোমধ্যে ভ্যালেন্টাইনের চিকিৎসায় মেয়েটির অন্ধ দু’চোখে দৃষ্টি ফিরে এসেছিল। ভালবাসার এসব কীর্তির জন্য ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ জেলাসিয়ুস ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে এই দিনটিকে মানুষেরা ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে পালন করে আসছে। ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র উৎপত্তির বিষয়ে আরেকটি সম্পূণর্ ভিন্নমত রয়েছে। এই মতের লোকেরা বলেন, ভ্যালেন্টাইনের সঙ্গে প্রিয়জনকে ভালোবাসার বার্তা পাঠানোর আদৌ কোনও সম্পর্ক নেই। প্রাচীনকালে মানুষের বিশ্বাস ছিল, ১৪ ফেব্রুয়ারি হলো পাখিদের বিয়ের দিন। পাখিরা বছরের দ্বিতীয় মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ডিম পাড়তে বসে। আবার কেউ বলেন, মধ্যযুগের শেষদিকে মানুষ বিশ্বাস করত এদিন থেকে পাখিদের মিলন ঋতু শুরু হয়। পাখিরা সঙ্গী খুঁজেবেড়ায়। পাখিদের দেখাদেখি মানুষও তাই সঙ্গী নির্বাচন করে এ দিনে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT