মাদক মামলায় দুই পুলিশসহ তিন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জশীট মাদক মামলায় দুই পুলিশসহ তিন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জশীট - ajkerparibartan.com
মাদক মামলায় দুই পুলিশসহ তিন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জশীট

1:00 am , February 4, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নিজ হেফাজতে ইয়াবা রেখে বিক্রয়ের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশীট জমা দিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আদালতে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক জসিম উদ্দিন এ চার্জশীট জমা দেন। চার্জশীটে মামলার এজাহারনামীয় দুই পুলিশ সদস্য ছাড়াও আরো একজনকে অভিযুক্ত করা হয়। চার্জশীটে অভিযুক্তরা হলো, নগরীর কাউনিয়া পিছনের স্কুল এলাকার ছোট মিয়ার গলির মৃত গফুর হাওলাদারের ছেলে ও মাহেন্দ্রা চালক সোহাগ হাওলাদার, ঝালকাঠি কাঠালিয়ার মরিচবুনিয়া এলাকার আইয়ুব আলী হাওলাদরের ছেলে ও নগরীর নথুল্লাবাদ পিওএম শাখার পুলিশ কনস্টেবল ইমরান হাওলাদার (ব্যাচ নং- ১৭৮৫) এবং একই জেলার নান্দিকাঠি এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ও একই শাখার পুলিশ কনস্টেবল সালাউদ্দিন হাওলাদার (ব্যাচ নং- ১৭৭৫)। চার্জশীট সুত্রে জানাগেছে, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ফিরোজ আলম মুন্সি তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নগরীর নথুল্লাবাদ শাহ পরান সড়কের মুখে অবস্থান নেয়। এসময় দলটি এয়ারপোর্ট থানা এলাকার রহমতপুর থেকে আসা একটি মটর সাইকেলের তিন আরোহীকে থামার সংকেত দেয়। কিন্তু তারা মটর সাইকেল না থামিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গোয়েন্দা পুলিশের দলটি ধাওয়া করে রানা কর্টেজের সামনে থেকে তাদের আটক করে। পরে মটর সাইকেলে থাকা আরোহী সোহাগ হাওলাদারের দেহ তল্লাশী করে ১০০ পিস, কনস্টেবল ইমরান হাওলাদারের কাছ থেকে ১০০ পিস ও কনস্টেবল সালাউদ্দিন হাওলাদারের কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। একই সাথে ইয়াবা সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত কনস্টেবল সালাউদ্দিনের মটর সাইকেলটিও জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় একই দিন এয়ারপোর্ট থানায় দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এসআই ফিরোজ আলম মুন্সি। দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর জসিম উদ্দিন মামলাটির তদন্তকালে জানতে পারেন সোহাগ নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ডের মাহেন্দ্রা গাড়ি চালক ও মাদক কারবারি। ২২ সেপ্টেম্বর কনস্টেবল সালাউদ্দিনকে বিমান বন্দরে পুলিশ গার্ডের ডিউটিতে মোতায়েন করা হয়। এরআগে কনস্টেবল সালাউদ্দিন সহকারি পুলিশ কমিশনারের (ট্রাফিক) দেহরক্ষী হিসাবে নিয়োজিত ছিল। দেহরক্ষী থাকাকালিন সময় সালাউদ্দিনকে সহকারি পুলিশ কমিশনারের (ট্রাফিক) মটর সাইকেলটি দেখভাল করার জন্য দেয়া হয়। পরে সালাউদ্দিনকে তার দেহরক্ষীর ডিউটি থেকে সরিয়ে পুনরায় পিওএম শাখার ডিউটিতে নিয়োজিত করা হয়। কিন্তু সালাউদ্দিন পুনরায় পিওএম শাখায় ফিরে গেলেও সহকারি পুলিশ কমিশনারের (ট্রাফিক) মটর সাইকেলটি ফেরত না দিয়ে তার কাছে রেখে দেয়। এর আগে বিভিন্ন সময় আইনশৃংখলা ডিউটি করাকালিন কনস্টেবল ইমরান ও সালাউদ্দিনের সাথে মাদক কারবারি ও মাহেন্দ্রা চালক সোহাগের পরিচয় হয়। এদিকে গত বছর ২৪ সেপ্টেম্বর কনস্টেবল ইমরান ১০ দিনের অর্জিত ছুটিতে গিয়ে সোহাগের সাথে মিলিত হয়। তদন্তকালে কর্মকর্তা আরো জানতে পারেন ঘটনার দিন কনস্টেবল ইমরান ও সোহাগ ২৫০ পিস ইয়াবা নিয়ে রহমতপুর ব্রীজের কাছে বাস থেকে নেমে সালাউদ্দিনের সাথে মিলিত হয়। ইমরান তার সাথে থাকা ১৫০ পিস ইয়াবা থেকে সালাউদ্দিনকে ৫০ পিস ইয়াবা দেয়। পরে তারা সালাউদ্দিনের মটর সাইকেলে রওয়ানা করে কাশিপুর সুরভী পেট্রোল পাম্পের সামনে পৌছিলে গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পারিলে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের আটক করে। এছাড়া মামলা দায়ের পর তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জব্দ করা মটর সাইকেলটির মালিকানা যাচাই করে আদালতের মাধ্যমে প্রকৃত মালিককে ফেরত দেয়া হয়। আসামীদের বিভিন্ন সময়ের কল লিষ্ট পর্যালোচনা ও তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমানে কনস্টেবল ইমরান হাওলাদার ও সালাউদ্দিন হাওলাদার এবং মাহেন্দ্রা চালক সোহাগ হাওলাদারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রাথমিক সত্যতা থাকায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর জসিম উদ্দিন আদালতে বিচাররে জন্য চার্জশীটটি জমা দেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT