রাসায়নিক বর্জ্যে দুষিত হচ্ছে কীর্তনখোলা নদীর পানি রাসায়নিক বর্জ্যে দুষিত হচ্ছে কীর্তনখোলা নদীর পানি - ajkerparibartan.com
রাসায়নিক বর্জ্যে দুষিত হচ্ছে কীর্তনখোলা নদীর পানি

3:06 pm , January 12, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীর সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাদের রাসায়নিক বর্জ্য কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে নদী দূষন ঘটাচ্ছে। ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নগরীর বাহিরে স্থানান্তর হওয়ার কথা থাকলেও সরছে না। লঞ্চ থেকে নদীতে ময়লা ফেলায়ও কীর্তনখোলা দূষণ হচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পরিবেশ অধিদপ্তর। এমনটা চললে কীর্তনখোলাকে বাঁচানো যাবে না। পাশাপাশি নগরীতে শব্দ দূষণ ও বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে। রোববার বরিশাল সার্কিট হাউজে পরিবেশ বিষয়ক এক সভায় বক্তারা এসব অভিযোগ করেন। সভায় পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) জানান, কীর্তনখোলা নদী দূষণকারী শিল্পকারখানার বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব ড. এ কে এম রফিক আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) সাদিকুল ইসলাম, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইসরাইল হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক মো: আ: হালিম প্রমূখ। সভায় পরিবেশ আইনবীদ সমিতি (বেলা) এর সমন্বয়ক লিংকন বায়েন বলেন, ওষুধ কারখানার বর্জ্য কীর্তনখোলা নদীর মধ্যে পড়ছে। এসব কারখানা নগরীর মধ্য থেকে বহু বছর আগেই সরে যাওয়ার কথা থাকলেও বহাল থেকে পরিবেশ দূষন করছে। মানুষ জানতে চায় এসব কারখানা নগরী থেকে কবে অপসারিত হবে। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অ্যাড. এস এম ইকবাল বলেন, কীর্তনখোলা নদীতে ভয়াবহ দূষন ঘটছে। এজন্য দায়ী কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। কারখানার বর্জ্য কীর্তনখোলায় পড়ছে। এগুলো না সরাতে পারলে কীর্তনখোলাকে বাঁচানো যাবে না। তিনি বলেন, নগরীর ঝাউতলা পুকুর দখলের পায়তারা করা হলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, তার কাছে কি, আদালতের কাছে যান। নগরবাসী এমন মন্তব্যে হতাশ।
সভায় একাধিক সাংবাদিক বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কারখানার বর্জ্য কীর্তনখোলায় পড়ছে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক বলছেন কীর্তনখোলার দূষন এখনও বিপদজনক অবস্থায় পৌঁছায়নি। আর কত দূষণ হলে কীর্তনখোলাকে রক্ষা করা হবে। সাংবাদিকরা বলেন, ৯ বছর ধরে নগরীর শব্দ দূষন ও বায়ু দূষন রোধে অভিযান পরিচালনা করছে না পরিবেশ অধিদপ্তর।
মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মানিক বলেন, নগরীর শব্দ দূষণ সহ্য সীমার বাহিরে চলে গেছে। কালো ধোয়াও নিয়ন্ত্রনে নেই। শেবাচিম হাসপাতালের একজন সহকারী পরিচালক বলেন, তার হাসপাতালেও বিজ্ঞান সম্মতভাবে ক্লিনিক্যাল বর্জ্য রিসাইক্লিন হচ্ছে না।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আবু সাঈদ বলেন, প্লাস্টিক ৫শ বছরেও ধ্বংস হয় না। সেই প্লাস্টিক কীর্তনখোলাসহ বিভিন্ন নদীতে ফেলা হচ্ছে। যার ফলে নদী দূষনে মাছের প্রাচুর্যতা কমে যাচ্ছে। নদী, খালে বাধ দিয়ে পানি প্রবাহ বিঘিœত করা হচ্ছে। বরিশাল নৌ বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, লঞ্চ থেকে নদীতে যে বর্জ্য ফেলা হত তা অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে।
এসব প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. এ কে এম রফিক আহমেদ বলেছেন, কীর্তনখোলা নদী দূষনকারী ওষুধ কারখানার বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাদের এনফোর্সমেন্ট টিম শীঘ্রই এসব কারখানাকে নোটিশ দেয়াসহ বড় ধরনের জরিমানা করবে। তিনি ক্লিনিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানসম্মত করতে ও শব্দ দূষন নিয়ন্ত্রনে প্রকল্প গ্রহনের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে আহবান জানান। মহাপরিচালক ড. রফিক আহমেদ বলেন, আগামী ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দক্ষিনাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। তখন এই ব্যবস্থাপনায় বরিশালের পরিবেশ রক্ষা সম্ভব হবে না। সভার প্রধান অতিথি মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, উন্নয়নের সাথে পরিবেশে যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT