লাশ বহনের অনুমতি ৪২ এ্যাম্বুলেন্সের ॥ চলছে দুই শতাধিক লাশ বহনের অনুমতি ৪২ এ্যাম্বুলেন্সের ॥ চলছে দুই শতাধিক - ajkerparibartan.com
লাশ বহনের অনুমতি ৪২ এ্যাম্বুলেন্সের ॥ চলছে দুই শতাধিক

2:42 pm , January 8, 2020

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মহানগরী সহ বরিশাল জেলায় বৈধ এ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা মাত্র ৪২টি। এর মধ্যে মহানগরীতে এ্যাম্বুলেন্সের অনুমতি রয়েছে মাত্র ৫টির। তবে লাশ বহনের অনুমতি নেই একটিরও। সরকারি কাগজ-কলমে পরিসংখ্যান এমনটি হলেও বাস্তবতা পুরোটাই ভিন্ন। মহানগরীতে লাইসেন্সধারী ৫টি এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চলতে ৭০টির অধিক। আর জেলার হিসেব করতে গেলে এর সংখ্যা দুইশত’র বেশি। আর রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সেই চলছে লাশ পরিবহনের ব্যবসা। দিনের পর দিন নগর জুড়ে অবৈধ এ্যাম্বুলেন্সের আধিপত্য গড়ে উঠলেও নিরব ভূমিকায় প্রশাসন। এমনকি বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স বানিজ্যের কারনে বেহাল হয়ে পড়ছে সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের কার্যক্রম। অভিযোগ উঠেছে পুলিশ প্রশাসন এবং বিআরটিএ’র কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগ সাজসে অবৈধ এম্বুলেন্স দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোটা মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চল। সরেজমিনে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের সামনে দেখা যায় জরুরী বিভাগের গেট থেকে পূর্ব পাশে নির্মানাধীন ভবনের সামনে পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে অর্ধ শতাধিক এ্যাম্বুলেন্স। এর মধ্যে কিছু এ্যাম্বুলেন্স এসেছে ঢাকা থেকে। বাকিগুলোর সবই নগরীর। দেখতে এগুলো এ্যাম্বুলেন্সের মতো দেখালেও এর কোনটারই নেই এ্যাম্বুলেন্সের লাইসেন্স। মিল নেই এ্যাম্বুলেন্সের নম্বরের সাথেও। বিভিন্ন মডেলের মাইক্রোবাসের উপরে ইমারজেন্সি লাইট, হুইসাল এবং গায়ে রং দিয়ে এ্যাম্বুলেন্স লিখে রূপান্তর করা হয়েছে। লক্কর ঝক্কর মার্কা ফিটনেস বিহিন এসব এ্যাম্বুলেন্সেই রোগীর পাশাপাশি বহন করা হচ্ছে মৃতদেহও।
বরিশাল বিআরটিএ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জানিয়েছেন, ‘বরিশাল জেলায় অনুমোদিত এ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা মোট ৪২টি। যার মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে এর সংখ্যা ৫টি। বাকি ১০ উপজেলায় ৩৭টি এ্যাম্বুলেন্সের অনুমোদন রয়েছে। যেসব এ্যাম্বুলেন্সের অনুমোদন দেয়া হয়েছে তার বেশিরভাগই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে। তবে এসব এ্যাম্বুলেন্সের একটিরও লাশ বহনের অনুমতি নেই।
সহকারী পরিচালক জানান, ‘যানবাহনের ধরণের মতই ভিন্ন এ্যাম্বুলেন্সের নম্বরও। রোগী ও লাশ বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সের দুই ধরনের নম্বর হয়ে থাকে। এর মধ্যে রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্সের রেজিষ্ট্রেশন শুরু হয়েছে ‘ছ-৭১’ থেকে এবং লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সের রেজিষ্ট্রেশন শুরু হয়েছে ‘শ-১১’ থেকে। বাকি যেসব সিরিয়াল রয়েছে সেগুলো এ্যাম্বুলেন্সের নয়।
নগরীর শেবাচিম চত্ত্বর এলাকার দক্ষিণবন্ধ এ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির কয়েকটি সূত্র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে বলেন, ‘বরিশালে যেসব এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে সেগুলো নামেই এ্যাম্বুলেন্স। কেননা এর এ্যাম্বুলেন্সের নম্বর নেই। তাই মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ট্রাফিক বিভাগকে মাসিক বিট দিয়ে এ্যাম্বুলেন্স চালাতে হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, ‘কোন কোন ক্ষেত্রে এ্যাম্বুলেন্সে মামলাও দিয়ে থাকে ট্রাফিক সার্জেন্টরা। কিন্তু তা হয় লোক দেখানো। কেননা মাসের শুরুতে দেয়া ওই মামলার রসিদ দেখিয়েই পুরো মাস চলতে হচ্ছে। বিশেষ করে বরিশাল রেঞ্জের বাইরে গেলে মামলা পূর্বে মামলা দিয়ে যেতে হয়। এতে করে পথে দ্বিতীয়বার আর মামলা হচ্ছে না। তবে যেখানে বিট নেই সেখানে দায়িত্বরত সার্কেন্ট বা টিআইকে কিছু খরচ দিলেই রোগী বহনের বৈধতা পেয়ে যায় অবৈধ এ্যাম্বুলেন্স।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে ঢাকায় থাকায় বক্তব্য দিতে রাজী হননি। এমনকি ডিসি ট্রাফিক এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT