বিয়ের চার মাসে কন্যা সন্তানের মা নববধূ বিয়ের চার মাসে কন্যা সন্তানের মা নববধূ - ajkerparibartan.com
বিয়ের চার মাসে কন্যা সন্তানের মা নববধূ

3:07 pm , January 6, 2020

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বিয়ের চার মাসের মধ্যে কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের এক নববধূ। রোববার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে কন্যা সন্তান জন্ম দেন তিনি। তবে সদ্য জন্ম নেয়া এ কন্যাকে সন্তানের স্বীকৃতি দিতে নারাজ নববধূর স্বামী। তার অভিযোগ কন্যার বাবা তিনি নন। তাই নবজাতকের সঠিক পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষার দাবী জানিয়েছেন তারা। কিন্তু তাদের এই দাবি মানতে নারাজ নববধূর পরিবার।
সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ঝরঝড়িয়া তলার বাসিন্দা মিজানুর রহমানের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে তারেক ফকির (১৭) জানান, ‘প্রতিবেশী আনোয়ার জমাদ্দার সম্পর্কে তার মামা হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর ফোন করে বাড়িতে বেড়াতে ডেকে নেয় মামি হাজেরা বেগম। ওই দিন রাতেই তথ্য গোপন করে পাঁচ মাসেরঅন্তঃসত্ত্বা মেয়ে আয়শা আক্তার মেরীকে জোরপূর্বক বিয়ে করতে বাধ্য করে। এমনকি ছেলের পরিবারকে কিছু না জানিয়েই পাঁচ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে সম্পন্ন করে।
তারেক ফকিরের মা লাইজু বেগম জানান, ‘বিয়ের পর পরই আয়শা আক্তার মেরী’র সৎ মায়ের মাধ্যমে নববধূ পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে প্রতিবাদ করতে গেলে মেয়ের বাবা এবং তার পরিবারকে মামলা সহ বিভিন্নভাবে ভয়-ভিতি প্রদর্শন করে। এমনকি স্থানীয়ভাবে সালিশ-মিমাংশার প্রস্তাব দেয়া হলে তাও মানছে না মেয়ের পরিবার।
লাইজু বেগম বলেন, ‘এমনকি আইনী সহায়তা নিতে থানায়ও গিয়েছিলাম। কিন্তু থানা পুলিশ কোন সহযোগিতা করেনি। তারা আমাদেরকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এর মধ্যেই রোববার প্রসব বেদনা শুরু হলে মেরীকে শেবাচিম হাসপাতালের প্রসুতি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই মেরী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়।
লাইজু বেগম অভিযোগ করেন, ‘তার পুত্রবধূ আয়শা আক্তার মেরীর সঙ্গে ইতিপূর্বে স্থানীয় টেইলার্স বশিরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। বশিরের পূর্বে স্ত্রীও রয়েছে। বিয়ের পাঁচ দিন পূর্বে বশিরের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আয়শা আক্তার মেরীকে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। যা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার মজিবরও জানেন। খবর পেয়ে তিনিও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে মেয়েকে ছাড়িয়ে আনে তার বাবা-মা। তখনও ওই মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিলো। তারেককে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করিয়ে দেয়।
লাইজু বেগম আরও অভিযোগ করেন, ‘জন্ম নেয়া সন্তানের বাবা আমার ছেলে নয়। আমার ছেলে ওই সন্তানের বাবা হলে সেটা আমাদের মেনে নিতে কোন আপত্তি নেই। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্য প্রমান করতে হবে যে তারেকই ওই সন্তানের বাবা। এজন্য ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার প্রস্তাবে রাজী নয় মেয়ের বাবা। বরং এমন প্রস্তাব দেয়ায় রোববার রাতে হাসপাতালের মধ্যেই মেয়ের বাবা আমার গায়ে বেশ কয়েকবার হাত তুলেছে। তাই এ বিষয়ে আইনী সহায়তা চাচ্ছেন প্রতারনার শিকার এই পরিবারটি।
এ প্রসঙ্গে মেয়ের বাবা আনোয়ার জমাদ্দার বলেন, ‘সদ্য জন্ম নেয়া কন্যা শিশুর বাবা তারেকই। বিয়ের আগে থেকেই মেরীনার সঙ্গে তার প্রেম প্রনয় ছিল। সেই সুযোগেই মেয়েকে অন্তঃসত্ত্বা করেছে তারেক। এমনকি বিয়ের দিনও তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা হয়। এর পর পরই স্থানীয়রা কোর্ট কাবিনের মাধ্যমে তাদের বিয়ে দেয়।
ডিএনএ পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা করাতে আমরাও রাজি। কিন্তু পরীক্ষা করাতে যা ব্যয় হবে তার পুরোটাই ছেলের পরিবারকে দিতে হবে। অন্যথায় ডিএনএ’র জন্য আমরা কোন খরচ বহন করতে রাজি নই।
কাশিপুর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমার ভালো জানা নেই। তবে শুনেছি মেয়ে নাকি বলেছে তারেকের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিলো। এ কারনে তারেককে ধরে এনে কোর্টে নিয়ে কাবিন করিয়েছে। তবে বেকার এবং অপ্রাপ্ত অবয়স্ক ছেলে জানার পরেও পাঁচ লাখ টাকা কাবিনের বিষয়টি অযৌক্তিক। অবশ্যই মেয়ের কোন না কোন সমস্যা ছিলো, যেখানে ছেলেকে আটকানোর জন্য বেশি টাকা কাবিন করা হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT