প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল সন্তানরা কর্মস্থল হারানোর আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল সন্তানরা কর্মস্থল হারানোর আশঙ্কায় - ajkerparibartan.com
প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল সন্তানরা কর্মস্থল হারানোর আশঙ্কায়

2:57 pm , October 1, 2019

শামীম আহমেদ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল সন্তানখ্যাত ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে উদ্যোক্তারা টানা নয় বছর বিনাপরিশ্রমে কাজ করে আসছেন। বর্তমানে ওইসব উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে কর্মস্থল হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন বর্তমান সরকারের তৃনমূল পর্যায়ে গত নয়টি বছর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উদ্যোক্তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির পর ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা তাদের স্থায়ী করনের দাবি করে আসছেন। কিন্তু তাদের দাবির প্রতি কোন কর্ণপাত না করার কারণে উদ্যোক্তাদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। একপর্যায়ে নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে দীর্ঘদিন থেকে তারা রাজপথে শান্তিপূর্ন আন্দোলন করে আসছেন। তাতেও কোন সুফল না পেয়ে উদ্যোক্তারা ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে স্থায়ী নিয়োগের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। উচ্চ আদালতে একাধিক রীটের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়া হয়।
সূত্রে আরও জানা গেছে, উল্লেখিত পদে স্থায়ী নিয়োগ লাভের আশায় থেকে অনেক উদ্যোক্তারা অন্যকোন স্থানে চাকরি না নেয়ায় ইতোমধ্যে চাকরির ক্ষেত্রে সার্টিফিকেটের বয়সও শেষ হয়ে গেছে। ফলে তারা আরও বেকায়দায় পরেছেন। অতিসম্প্রতি বরিশালসহ কয়েকটি জেলায় পূর্ণরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর উদ্যোক্তাদের মধ্যে ফের হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল সন্তানখ্যাত ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তারা উল্লেখিত পদে তাদের চাকরি স্থায়ীকরনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাংলাদেশ ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব আলী জানান, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সরকারের তৃলমূল প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য সারাদেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু করেন। পরবর্তীতে যা ডিজিটাল সেন্টার হিসেবে রূপলাভ করে। ডিজিটাল সেন্টার চালুর পর থেকে উদ্যোক্তারা বিনামূল্যে ইউনিয়ন পরিষদের দাপ্তরিক কাজ করে সাধারণ সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে নিয়ে সেবা প্রদান করে আসছেন।
তিনি আরও জানান, ২০১৬ সালে পূর্বের উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওইসময় এ নিয়োগ বাতিল করে উল্লেখিত পদে উদ্যোক্তাদের স্থায়ী নিয়োগ দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করে উদ্যোক্তারা। পরে ২০১৭ সালে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার পদে উদ্যোক্তাদের নিয়োগের জন্য হাইকোর্টে রীট করা হয়। উচ্চ আদালতের বিচারক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রীটকারীদের নিয়োগের জন্য নির্দেশনা প্রদানের পর রায়ের বিপক্ষে সরকার পক্ষ আপীল করে। আপীলের শুনানীতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উদ্যোক্তাদের নিয়োগের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। এরপরেও রহস্যজনক কারনে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পরে নিয়োগের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের কোন অগ্রাধিকার না দিয়েই কয়েকটি জেলায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তীতে পূনরায় আদালতের দ্বারস্থ হয় উদ্যোক্তারা। যে মামলা এখনো চলমান রয়েছে।এছাড়াও এনিয়ে পৃথকভাবে আরও কয়েকটি রীট করেন উদ্যোক্তারা। যা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
মাহতাব আলী বলেন, উদ্যোক্তারা দীর্ঘ নয় বছর ডিজিটাল সেন্টারে ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম বিনামূল্যে করে আসছেন। অথচ নিয়োগের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। ফলে উদ্যোক্তারা ডিজিটাল সেন্টারে কাজ করার পাশাপাশি নিজেদের চাকরি স্থায়ীকরনের জন্য আদালতের সরনাপন্ন হয়েছেন। উদ্যোক্তাদের আদালতে সরনাপন্ন হওয়ার কারনে অনেক উদ্যোক্তাদের মামলা নিয়ে আদালতে দৌঁড়ঝাপ করতে হচ্ছে। এতে উদ্যোক্তাদের একদিকে যেমন অর্থ ব্যয় হচ্ছে, অপরদিকে ডিজিটাল সেন্টারে ঠিকমত সময় দিতে না পারায় কর্মস্থল হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব পরছে অসহায় উদ্যোক্তাদের পরিবারের উপর।
এনিয়ে অতিসম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইউনিয়ন পরিষদে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে উদ্যোক্তাদের নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন উদ্যোক্তারা। সেখানে সারাদেশ থেকে আসা উদ্যোক্তারা জানান, দীর্ঘ নয় বছর তারা ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম বিনামূল্যে করে দিয়েছেন। একই কাজের জন্য হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেয়া হলে উদ্যোক্তাদের কোন কাজ থাকবেনা। ফলে উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল সেন্টার ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে। তাই হিসাব সহকারী পদে নিজেদের যোগ্য দাবী করে অনতিবিলম্বে উদ্যোক্তাদের নিয়োগ প্রদানের জন্য তারা মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী বঙ্গরতœ শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT