3:11 pm , September 15, 2019
পরিবর্তন ডেস্ক ॥ দক্ষিণের অভ্যন্তরীণ নদ-নদী এবং সাগর মোহনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। গত দুই দিনে দেড় হাজার মনেরও বেশি ইলিশ এসেছে বরিশাল মোকামে। কিন্তু তারপরও দাম চড়া। ইলিশ আড়তদাররা বলেছেন, বছরের বেশিরভাগ সময় অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলেও গত কয়েক দিন ধরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে মৎস্যজীবীরা খুশি। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে না পাড়ায় মোকামে সাগরের ইলিশ আসছে না। তাই দাম কিছুটা বেশি। ইলিশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় আগামী ৯ অক্টোবর শুরু হচ্ছে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এই সময়ে ডিম ছাড়তে সমুদ্রের লবণ পানি ছেড়ে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর মিঠা পানিতে উঠে আসছে ডিমওয়ালা ইলিশ। নিষেধাজ্ঞার আগে ও পরে অভ্যন্তরীণ নদ-নদী এবং সাগর মোহনায় জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করেন তিনি। রবিবার সকালে বরিশালের পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে গিয়ে দেখা গেছে উৎসবমুখর পরিবেশ। অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও সাগর মোহনায় আহরিত ইলিশ আসছে ট্রলার বোঝাই করে। শ্রমিকরা ঝুড়ি ভরে ইলিশ উঠাচ্ছেন আড়তে। আড়তগুলোতে বিভিন্ন সাইজের লট (স্তুপ) ইলিশ হাক মেরে প্রকাশ্য ডাকে বিক্রি হচ্ছে। রবিবার বরিশাল মোকামে কেজি সাইজের প্রতি মণ ইলিশ ৪০ হাজার, রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬শ’ থেকে ৯শ’) প্রতি কেজি ৩২ হাজার এবং ৫শ’ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি হয়েছে ২৪ হাজার টাকায়। পোর্ট রোডের ইলিশ আড়তদার জহির সিকদার বলেন, এবার বছরের বেশিরভাগ সময়ই অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ছিলো প্রায় ইলিশ শূন্য। মাসখানেক আগে সমুদ্রে কিছু ইলিশ ধরা পড়েছিলো। তখন নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যায়নি। গত কয়েক দিন ধরে অভ্যন্তরীণ নদ-নদী এবং সাগর মোহনায় জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ। কিন্তু সাগরের ইলিশ না আসায় মোকামে ইলিশের দাম চড়া। আরেক আড়ৎদার মো. নাসির উদ্দিন বলেন, গত কয়েক দিন ধরে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা মাছ ধরতে সাগরে যেতে পারেনি। এ কারনে সাগরের ইলিশ আসছে না। অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে গত কয়েক দিন ধরে কিছু ইলিশ ধরা পড়লেও চাহিদার তুলানায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম কমছে না। বরিশাল জেলা মৎস্য আড়তদার এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল বলেন, এবার মৌসুমের পুরো সময়টায় জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পায়নি নদ-নদীতে। গত কয়েক দিন ধরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে। এতে সকল মৎস্যজীবীরা খুশি। বৈরী আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় শত শত ট্রলারও মাছ ধরতে ছেড়ে গেছে গভীর সমুদ্রের উদ্দেশ্যে। এই ট্রলারগুলো উপকূলে ফিরে আসলে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে এবং তখন দামও কিছুটা কমবে বলে আশা করেন তিনি। তবে যেই সময়টায় ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়ে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কিছুটা হতাশ মংস্যজীবীরা। বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে তেমন ইলিশ ছিলো না। গত ৩দিন ধরে অভ্যন্তরীণ নদী এবং সাগর মোহনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। আগামী ৯ অক্টোবর থেকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম শুরুর আগ পর্যন্ত নদী এবং সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে বলে তারা আশা করছেন। ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম সফল হলে পরবর্তী বছরে আরও ইলিশ পাওয়া যাবে বলে মনে করেন ইলিশ বিশেষজ্ঞ ডা. বিমল চন্দ্র দাস।