শেবাচিমে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৬ শেবাচিমে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৬ - ajkerparibartan.com
শেবাচিমে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৬

3:19 pm , July 27, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। এ পর্যন্ত বরিশাল ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৬ জন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। যার মধ্যে ১৪ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন। এদিকে বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়া রোগীরা বেশিরভাগই ঢাকা যাতায়াত করেছেন। এরা বরিশালে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যে কারনে বরিশালে ডেঙ্গু এখনো মহামারি নয় বলে দাবী করেছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, গত জুন মাসে বরিশালে প্রথম ডেঙ্গু ধরা পড়ে। নগরীর ঝাউতলা এলাকার বাসিন্দা রিফাতুল ইসলাম নামের যুবক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর পর ওই মাসে নতুন করে আর কোন রোগী পাওয়া যায়নি।
তবে পরবর্তী ১৬ জুলাই থেকে শেবাচিম হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়তে থাকে। ওই দিন থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ১১ দিনে ২৬ জন ডেঙ্গু রোগীকে এই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৪ জন এরই মধ্যে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। বাকি ১২ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যার মধ্যে ৩ জন নারী।
জুন মাসে ডেঙ্গু জ¦রের চিকিৎসা নেয়া ঝাউতলার বাসিন্দা রিফাতুল ইসলাম জানান, বিশ^বিদ্যালয় ভর্তি কোচিং এর জন্য ঢাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে বসেই গাঁ ব্যাথা এবং জ¦র শুরু হয়। তাই কোচিং শেষ না করেই ফিরে এসেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন তার শরীরে ডেঙ্গু’র উপস্থিতি রয়েছে। এজন্য চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হন। দুই সপ্তাহ চিকিৎসা গ্রহন শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সাথে আলাপকালে জানাগেছে, যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগ ঢাকা থেকে জ¦র নিয়ে বরিশালে আসেন। পরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডেঙ্গুর উপস্থিতি নিশ্চিত হন। তবে নগরীর বাইরে থেকে ভর্তি হওয়া কয়েকজন ব্যক্তি বরিশালেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানাগেছে।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ( শেবাচিম) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার সরকার জানান, ডেঙ্গু কোন ছোয়াছে রোগ নয়। তাই এ নিয়ে ঘাবরাবার কিছু নেই। সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা পেলেই রোগীরা দ্রুত সুস্থতা লাভ করবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের শুরুতে মাথা ব্যথা, বমি-বমি ভাব, শরীর ব্যাথা এবং গায়ে জ¦র জ¦র মনে হবে। এমনটি মনে হলে দেরী না করে কোন প্রাইভেট ক্লিনিক বা চিকিৎসকের চেম্বারে না গিয়ে সরাসরি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহনের পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, বরিশালে ডেঙ্গু মহামারি নয়। রোগীদের ভাস্যমতে যারা আক্রান্ত হচ্ছে তারা ঢাকা থেকেই ডেঙ্গু নিয়ে বরিশালে আসছে। এদের শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। সরকারি ওষুধ এবং মশারী সহ সকল ব্যবস্থাই সরকারিভাবে করা হচ্ছে। তবে জায়গা সল্পতার কারনে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা কোন ওয়ার্ড করা সম্ভব হচ্ছেনা। ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে তবে হাসপাতালে মেডিসিন ওয়ার্ডের একটি অংশ খালি করে সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্তদের রাখার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বরিশাল জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, বরিশাল নেজারেল হাসপাতাল সহ জেলার ১০টি উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স রয়েছে। যেখানে এখন পযন্ত কোন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়নি। তার পরেও প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীরা ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ে গ্রাম পর্যায়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন। তারা বাড়ির আঙ্গীনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, শোবার সময় মশারী বা মশার ওষুধ ব্যবহারের বিষয়ে উদ্ভুদ্ব করছেন। বিশেষ করে ঢাকা থেকে আসা ব্যক্তিদের শারীরিক খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টাও করছেন বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT