3:08 pm , July 24, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, ‘গলা কাটা, ছেলে ধরা’ গুজব নতুন কিছু নয়। এটি প্রায়শই ঢেউয়ের মত আসছে। কিন্তু এ বিষয়ে জণগনকে সঠিকভাবে বোঝানো গেলে পরে সেই গুজব আর কাজে আসে না। তাই চলমান সময়ে ‘গলা কাটা ও ছেলে ধরা’ সম্পর্কিত যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে সেটাও টিকবে না। সে জন্য জণগনকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় নগরীর আমতলার মোড়ে বিএমপি’র পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান এসব কথা বলেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এক শ্রেণীর লোক পদ্মা সেতুর পিলারে জন্য মানুষের মাথা লাগবে এমন একটি মিথ্যা ও মনগড়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে পোষ্ট, শেয়ার, লাইক ও কমেন্টসের দ্বারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। যার কারনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছেলে ধরা ও গলা কাটা সংক্রান্তে মানুষের মনে ভয়-ভীতি সঞ্চার সহ আতঙ্ক বিরাজ করছে। যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন এলাকায় গণ-পিটুনি সহ হানাহানির ঘটনা ঘটছে। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে গণ-পিটুনির ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তি/ভিকটিম মানষিক ভারসাম্যহীন বা অসুস্থ মর্মে প্রতিয়মান হয়। নিতান্ত সন্দেহের বশে মানুষের মনে বিরাজমান আতঙ্কের প্রভাবে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। যা মার্মান্তিক এবং আইন পরিপস্থি।
তিনি বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধি অনুসারে জণগনের সম্মূখে কোন ধর্তব্য অপরাধ সংঘটিত হলে শুধুমাত্র আটক করে দ্রুত পুলিশের নিটক হস্তান্তর করার ক্ষমতা আইনে আছে। আঘাত বা আক্রমণ করার কোন অধিকার প্রদান করা হয়নি। এরূপ আঘাত বা কথিত গণ-পিটুনি পেনাল কোডের ৩২৩/৩২৫ ও ৩০৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাছাড়া আঘাতের ফলে মৃত্যু হলে তাও নেপাল কোডে ৩০২ ধারা মতে হত্যার মত শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মহানগরী এলাকায় এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে লক্ষ্যে মহানগর পুলিশ এরই মধ্যে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, টেলিভিশন ও মাইকে মহানগরীর প্রতিটি এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা শুরু করা হয়েছে। তাই এ ধরনের গুজবের সংক্রান্তে মানুষকে সচেতন করার জন্য আহ্বান জানান পুলিশ কমিশনার।
তিনি বলেছেন, গলা কাটা বা ছেলে ধরা’ গুজবে কান দিবেন না। এ ধরনের কোন গুজবের তথ্য পেলে পুলিশকে তাৎক্ষনিকভাবে অবহিত করুন। কাউকে গণপিটুনি দিয়ে মৃত্যু ঘটানো গুরুতর ফৌজধারী অপরাধ। গুজব রটনাকারীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা দলের অনুসন্ধান তৎপরতা শুরু করেছে। তাই যে কোন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য বা গুজব ফেসবুকে বা যে কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট, শেয়ার, লাইক ও কমেন্টস না করে বরং যে কোন জরুরী প্রয়োজনে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করার আহ্বান জানান পুলিশ কমিশনার।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তোরে পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, বরিশালবাসী চলমান গুজবে বিশ^াস করেনি। তারা খুবই ধৈর্য্যরে সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। যদিও বরিশালে এ ধরনের ৪/৫টি ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনটিতেই সহিংস ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয়রা তাদের ধরে পুলিশকে খবর দিয়ে তাদের হাতে তুলে দিয়েছে। যাদের গলাকাটা- ছেলে ধরা সন্দেহ করা হয়েছে তারা সবাই নিরিহ জণগন বা মানসিক প্রতিবন্ধি। তাই এ বিষয়ে সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান পুলিশ কমিশনার।