বরিশালে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ‘কালো দিবস’ পালন বরিশালে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ‘কালো দিবস’ পালন - ajkerparibartan.com
বরিশালে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ‘কালো দিবস’ পালন

2:32 pm , December 30, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন হটান’ স্লোগান নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ‘কালো দিবস’ পালন করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এ উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার সকালে নগরীর সদর রোডস্থ অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্ত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে তারা। বাম গণতান্ত্রিক জোট বরিশাল জেলার সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলার সভাপতি দেওয়ান আব্দুর রশিদ নিলু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ জেলা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী, কমিউনিস্ট পার্টি’র জেলার সভাপতি মিজানুর রহমান সেলিম, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ জেলা কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক জলিলুর রহমান, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সদস্য মবিন আহমেদ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ‘গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর এক নজিরবিহীন ভোট ডাকাতি-ভোট জালিয়াতির মধ্য দিয়ে গঠিত সংসদ ও সরকার এক বছর পার করেছে। প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে সরকার ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ ডিসেম্বর রাতে ব্যালট পেপারে সীল মেরে ভোট জালিয়াতির এক চরম কলঙ্কজনক নজির স্থাপন করে পুনরায় ক্ষমতাসীন হয়েছে। তারা বলেন, ‘ভোট নামে এসব ছিলো এক ধরনের প্রশাসনিক ক্যু। এটি ছিল একটি ‘নির্বাচনী ক্যু’। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতেও নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে মানুষের ভোটের অধিকার অস্বীকার করা হয়েছিলো। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৪ জনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছিল। এভাবে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
তারা আরও বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার দিনের ভোট রাতে কেটে নেয়ার ঘটনা পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন। সরকারের শরীক দলের নেতৃবৃন্দও বক্তৃতায়-বিবৃতিতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছে ‘২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর মানুষ ভোট দিতে পারেনি। কেউ কেউ ভোট কেটে নেয়ার হোতাদের বিচারও দাবি করেছেন। ভোটের ৬ মাস পর নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত তথ্য থেকেও সীমাহীন অনিয়ম ও জালিয়াতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। অনেক কেন্দ্রে শূণ্য ভোট, আবার অনেক কেন্দ্রে ১০০ শতাংশ ভোট পড়ার আজগুবি তথ্য দেয়া হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, ভোট ডাকাতি ও ভুয়া নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত এই সরকারের রাজনৈতিক ও নৈতিক বৈধতা বলে কিছু নেই। বাস্তবে সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গায়ের জোরে সরকার তার অবৈধ ও অনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও প্রতিষ্ঠানসমূহের পেশাদারি কর্তব্য ও নিরপেক্ষতা বিনষ্ট করে সরকারি দলের অনুগত বাহিনী ও প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। এভাবে সরকার গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। রাষ্ট চরম নিপীড়নের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। তারা বলেন, ‘২৯-৩০ ডিসেম্বর কথিত নির্বাচনের পর এদেশে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থার বিশ্বাস যোগ্যতা বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই। সরকারি দল আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতির সহযোগী হিসেবে নির্বাচন কমিশনও তার গ্রহনযোগ্যতা হারিয়েছে। বিরোধী দল বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের সদস্যরা অনেক তামাশার পর সংসদে যোগ দিয়েছে। তাতে জনগণের কাছে এই সংসদের কোন গ্রহণ যোগ্যতা ও বৈধতা সৃষ্টি করেনি। বরং এটা তাদের দেউলিয়া রাজনীতিকে প্রকাশ করে। তারা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দুঃশাসনের আজ দেশে চুরি, দুর্নীতি, লন্ঠন, অর্থপাচার, চাঁদাবাজি, দখল-জবরদখল, দলীয়করণ-দলবাজি, স্বেচ্ছাচারিতা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সন্ত্রাস, অপহরণ, হত্যা, খুন, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, সামাজিক অনাচারের রোমহর্ষক ঘটনাবলি বেড়েই চলেছে। চর দখলের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকারি দলের দখলে রাখতে যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল শিক্ষাঙ্গনকে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ ও চরম নৃশংসতার ‘টর্চার সেল’এ পরিনত করা হয়েছে। এসময় নেতৃবৃন্দ গণতান্ত্রিকভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের জোর দাবি জানান। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। টাউন হলের সামনে থেকে বের হওয়া মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় টাউন হলের সামনে এসে শেষ হয়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT