বাবুগঞ্জে আ’লীগ নেতাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন বাবুগঞ্জে আ’লীগ নেতাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন - ajkerparibartan.com
বাবুগঞ্জে আ’লীগ নেতাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন

2:50 pm , November 25, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকে ধরে নিয়ে নির্মম ভাবে নির্যাতন চালিয়েছে বাবুগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সরদার খালেদ হোসেন স্বপনের লোকেরা। এ সময় ভাংচুর করা হয়েছে তার ভাড়ায় নেয়া একটি মোটর সাইকেল। পরে পুলিশের সহযোগিতায় ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত আওয়ামী লীগ নেতা মো. হুমায়ুন কবির কেদারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং থানা যুবলীগের ত্রান ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক। আসন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তিনি।
আহত আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবির জানান, ‘সোমবার স্থানীয়, জাতীয় এবং কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে বাবুগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক খালেদ হোসেন স্বপন এবং তার সহযোগী কেদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরে আলমের বিরুদ্ধে তথ্য বহুল সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে আমি বাড়ী থেকে বের হয়ে পাশের একটি দোকানে দাড়িয়ে প্রকাশিত ওই নিউজ পড়তে ছিলাম। হঠাৎ করেই ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলমের সন্ত্রাসী বাহিনীর আব্দুস ছালাম ওরফে হুন্ডা ছালাম, মফিজুল ও মাহে আলমসহ ১০-১৫ জন এসে আমাকে গালমন্দ শুরু করে। এক পর্যায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলমের কাছ থেকে মুঠোফোনে নির্দেশ পেয়ে সন্ত্রাসীরা আমাকে মারধর শুরু করে। পরে তারা আমাকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে স্থানীয় জনতার হাট সংলগ্ন নদীর চরের মধ্যে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন এবং আমার ভাড়া করা মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।
হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমার মোটরসাইকেল অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। এসময় কেউ একজন তাদের ফোন করার পর পরই ওরা মোটরসাইকেলসহ আমাকে ছেড়ে দেয়। এরপর পুলিশ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হুমায়ুন অভিযোগ করে বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালেদ হোসেন স্বপন এবং তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও মাদক ব্যবসার সহযোগী নূরে আলমের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে গেলে তাকে আমার মতোই নির্যাতনের শিকার হতে হয়। যে কারনে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার দুঃসাহস করে না। তাই এই ঘটনায় আইনের সহযোগিতা নিবেন বলে জানিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হুমায়ুন কবির। এদিকে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে উপজেলার কয়েকটি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে খালেদ হোসেন স্বনের লোকেরা। যে মিছিলে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, সেবনকারী এবং বিতর্কিতদের দেখা গেছে। তারা বিক্ষোভের নামে সত্য ঘটনা আড়ালের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, উপজেলার অনেক নেতা-কর্মীকে ভয় দেখিয়ে মিছিল করতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।
অবশ্য বিভিন্ন পত্রিকায় স্বপন ও তার সহযোগিদের অপকর্মের ফিরিস্তি প্রকাশ পাওয়ায় শুধু রাজনৈতিক নয়, সাধারণ মহলেও আলোচনার সৃষ্টি করেছে। যে কারনে গতকাল সোমবার বাবুগঞ্জে সংশ্লিষ্ট পত্রিকার ফটোকপিও বিক্রি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। পাশাপাশি স্বপন ও তার সহযোগী নূরে আলমের সকল অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কেদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলম বলেন, ‘আমার কোন লোক তাকে মারধর করেনি। মুলত আমাদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। হুমায়ুন সেই পত্রিকা সংগ্রহ করে গ্রামের মানুষের কাছে বিলি করছিল। এ কারনে স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর করেছে।
তিনি বলেন, ‘যখন ঘটনা ঘটেছে তখন আমরা উপজেলায় ছিলাম। প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে আমরা যারা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষে রয়েছি তারা মিটিং করছিলাম। সেখান থেকে খবর পেয়ে আমি নিজেই হুমায়ুনকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তার শরীরে মারধরের কোন আলাম দেখতে পাইনি।
বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘অপহরণ বা নির্যাতনের কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে হুমায়ুন এবং অপর পক্ষের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে এই ঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT