কল্পকাহিনী বা গুজব সৃষ্টির কোন সুযোগ নেই-পুলিশ কল্পকাহিনী বা গুজব সৃষ্টির কোন সুযোগ নেই-পুলিশ - ajkerparibartan.com
কল্পকাহিনী বা গুজব সৃষ্টির কোন সুযোগ নেই-পুলিশ

2:55 pm , November 21, 2019

 

সাঈদ মেমন ॥ বান্ধবীর সঙ্গে বাজি ধরে দুর্গাসাগর দিঘিতে সাঁতার কাটতে গিয়ে নিখোঁজ কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার হয়েছে। বুধবার রাত পৌনে নয়টার দীঘি থেকে ঢাকার আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ন মেধাবী শিক্ষার্থী ওমর ফারুক হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর আগামী ১ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের কথা ছিল। শিক্ষার্থী হৃদয় নগরীর কাউনিয়া হাউজিং এলাকার বাসিন্দা মো. শাহ আলমের ছেলে। সে ঢাকার আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ন হয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগদানের পূর্বে বেড়াতে এসে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। তার মৃত্যু নিয়ে কোন অস্বাভাবিকতা নেই এবং তার পরিবার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুল। তিনি জানান, হৃদয়ের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তার পরিবার ঘটনার জন্য কারো প্রতি অভিযোগ নেই জানিয়ে বিনা ময়না তদন্তে লাশ নিয়ে গেছে। হৃদয়ের মৃত্যু নিয়ে কোন রহস্য কিংবা কাল্পনিক কোন ঘটনার অবকাশ নেই বলে মন্তব্য করে ওসি এ আর মুকুল বলেন, পানিতে ডুবে মারা যাওয়া লাশের যে ধরনের আলামত থাকে, হৃদয়ের বিষয়ে একই আলামত পাওয়া গেছে। এই ঘটনা নিয়ে কোন কল্পকাহিনী বা গুজব সৃষ্টি করার কোন সুযোগ নেই।
ওসি মুকুল বলেন, বিভিন্ন মানুষ বিষয়টি নিয়ে নানা রহস্যর কথা ও পরিসংখ্যান তুলে ধরে গুজব সৃষ্টি করবে। বাস্তবে তার কোন ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, অনেকে দুর্গা সাগর দিঘিতে মানুষ মারা যাওয়ার নিজেদের ইচ্ছেমত সংখ্যা উল্লেখ করে গুজব ছড়াচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দুর্গা সাগরে নেমে মারা যাওয়ার উদাহরন এই একটি বলে দাবী করেছেন তিনি।
মুকুল বলেন, মানুষের হৃদস্পন্দন বন্দ হলেই সে মারা যায়। হৃদস্পন্দন বন্দ হওয়ার একেকটি কারন থাকতে পারে। ভয়ে অনেকে হৃদ স্পন্দন বন্দ হয়, যা হার্ট এ্যাটাক বলে সকলে জানে। সেই ঘটনার শিকার হতে পারে হৃদয়। এমন মন্তব্যর সাথেও একমত পোষন করেছেন পুলিশের ওই কর্তা।
একইভাবে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ বলেন, এ নিয়ে কোন রহস্য সৃষ্টি করা ঠিক না। ডুবে যাওয়া মানুষের ক্ষেত্রে যেমন হয়, তেমনটি হৃদয়ে ক্ষেত্রেও পাওয়া গেছে। তার লাশ উদ্ধারে দেরি হওয়ার কারন সম্পর্কে বলেন, দিঘীটি অনেক বড়। দুর্গা সাগর দিঘীর গভীরতা ১৮/২০ ফুট। সঠিক স্থান কেউ জানাতে পারেনি। তাই দেরি হয়েছে।
ধারনা করা হচ্ছে, দুর্গা সাগর দীঘি অনেক বড়। এই দীঘি নিয়ে নানা কল্পকাহিনী রয়েছে। দিঘীতে বড় বড় মাছ রয়েছে। সাধারনত কেউ দীঘির গভীরে সাতার কাটতে যায় না। হৃদয় গভীরে যাওয়ার পর বড় মাছ হয়তো খাবারের সন্ধানে তার কাছাকাছি এসে পড়েছে। হৃদয় সেই বিষয়টি অনুভব করেছে। তখন দুর্গা সাগর নিয়ে কোন কল্পকাহিনী মনে পড়ে গেছে। তাই ভয়ে হৃদয়ের হৃদস্পন্দন বন্দ হয়ে সে মারা গেছে।
উল্লেখ্য হৃদয় তার এক বান্ধবী ও বন্ধুর সঙ্গে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুর্গাসাগর দিঘি ঘুরে দেখতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর হৃদয় সাঁতার কেটে দিঘির মাঝে থাকা উঁচু জমিতে পৌঁছাতে পারবে বলে তাদের সঙ্গে ২০০ টাকা বাজি ধরেছিল। এরপর সে জামা-প্যান্ট খুলে লুঙ্গি পরে দক্ষিণ পাড় থেকে সাঁতার শুরু করে। অর্ধেক যাওয়ার পর হৃদয় হাত উঁচিয়ে বন্ধুদের কী যেন বলছিল। এরপর তাকে আর দেখা যায়নি। হৃদয় দিঘির মাঝখানের উঁচু জমিতে পৌঁছার আগেই ডুবে যান। দুপুরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তার সন্ধানে তল্লাশি শুরু করে। প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা চেষ্টার পর হৃদয়ের লাশ উদ্ধার হয়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT