সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম - ajkerparibartan.com
সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম

4:28 pm , July 4, 2025

কিছুটা স্বস্তি ডিম-মুরগিতে

জুবায়ের হোসেন ॥ কিছুদিন স্বস্তিতে থাকলেও আবারো নানা অজুহাতে বেড়ে চলেছে সবজির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন বাজারে ৬০ থেকে ৮০ টাকার নিচে সবজি মিলছে না। বিক্রেতারা বলছেন গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ ভালো তবে টানা বর্ষনে সবজি চাষের নিচু জমি গুলোতে জলাবদ্ধতার কারনে দাম বাড়তি। এছাড়া দেশের সবজির মুল জোগানদাতা জেলা যশোর থেকেও আগের পরিমানে সরবরাহ আসছে না কয়েকদিন থেকে। তাদেরও বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে বলে কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে সবজির দাম বাড়তি থাকলেও দাম অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও গরুর মাংসে। যে কারণে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারা। ব্রয়লার মুরগীর ডিমের দাম কিছুটা কম। তবে মাছের দাম চড়া দেখা গেছে। শুক্রবার নগরীর পোর্ট রোড, বাজার রোড, চৌমাথা, বটতলা, নতুন বাজার, বাংলাবাজার সহ বিভিন্ন কাচাবাজার ঘুরে এমন চিত্রের দেখা মিলেছে।
এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লালশাক ২০ টাকা আঁটি, লাউশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কলমিশাক ২ আটি ২০ টাকা, পুইশাক ৩০ টাকা ও ডাটাশাক দুই আটি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন প্রকারভেদে ৮০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর মুখী ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে সাজনা কেজিতে ১৪০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেপে মিলছে ৪০ টাকা কেজি দরে। লেবুর হালি মিলছে ১০ টাকায়, কাচাকলার হালি মিলছে ২০ টাকায়। ধনেপাতা ৩২০ টাকা কেজি ও কাচামরিচ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে। কাচা আমও কিনতে দেখা গেছে ৫০-৭০ টাকা দরে। শসার দাম বেশ বাড়তি। দেশি শসা ৫০ টাকা ও হাইব্রিড শসা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে বিভিন্ন বাজারে। বাজারে আকারভেদে প্রতি পিস চালকুমড়া ৪০-৫০ টাকা, লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে অসময়ের টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায় ও মুলা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারে দাম বেশ চড়া দেখা গেছে। এসব বাজারে রুই দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙাশ ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশি শিং ১ হাজার টাকা, চাষের কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষের পোয়া, পাবদা ও তেলাপিয়া মিলছে যথাক্রমে ৪০০, ৩৫০ ও ২২০ টাকায়। তবে এসকল মাছের দাম বেশিরভাগই আকারভেদে কম বেশি রাখা হচ্ছে। ছোট মাছের মধ্যে মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকায় ও পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে মাছের রাজা ইলিশের দাম যথারীতি চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ৭০০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ২ হাজার ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে বাজারে সোনালি কক মুরগি ৩০০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড মুরগি ২৭০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ২৯০ টাকা, সাদা লেয়ার মুরগি ২৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা ও দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক ডজন লাল ডিম মিলছে ১২০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২১০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির মাংস কেজিপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আলু ২৫ টাকা, দেশি পেয়াজ ৫৫ টাকা ও ইন্ডিয়ান পেয়াজ ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পোর্ট রোড বাজারের কাচা তরকারি বিক্রেতার আনোয়ার মুন্সি জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় এসপ্তাহে দাম বাড়তি। বরিশালে আশপাশের জেলা থেকে যে সবজি আসে তাতে চাহিদা পূরন হয়না। যোগানের বেশিরভাগ সবজি আসে যশোর থেকে। কিন্তু টানা কয়েকদিনের বর্ষায় চাষের নিচু জমিগুলোতে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় সবজি আসছে কম। এজন্যই দাম বেড়েছে। যোগান বাড়লে আবারো দাম কমে যাবে বলে জানান এই ব্যাবসায়ী।
অন্যদিকে শুক্রবার বেশিরভাগই সাপ্তাহিক বাজার করতে আসা ক্রেতারা বাড়তি দামে কিছুটা বিব্রত অবস্থায় পরেছে। এমন এক ক্রেতা মিতালী সরকার বলেন, ছুটির দিনে পরিবারের সাপ্তাহিক বাজার করেন তিনি। বাজারে এসে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই বাড়তি দেখেছেন। চাহিদা সম্পন্ন বেশিরভাগ সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার ঘরে। তবে ডিম ও ব্রয়লার মুরগীর দাম ঠিক রয়েছে। মাছের দামও বেশ চড়া বলে জানান এই নারী। বৃষ্টির কারনে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি বলে বিক্রেতারা জানাচ্ছে। তবে বৃষ্টি কমলেও এই দাম আর কমবে কিনা এমন সন্দেহ প্রকাশ করেন এই নারী ক্রেতা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT