4:33 pm , July 2, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশালের বড় কলেজগুলোতে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এসব কলেজে প্রচুর সংখ্যক শিক্ষার্থি জিপিএ-৫ নিয়ে ভর্তি হলেও একই ফলাফল নিয়ে আর বের হতে পারে না, বের হতে হয় জিপিএ হারিয়ে। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডেও প্রতিবছর এসএসসি থেকে এইচএসসিতে জিপিএ কমছে ৫০% থেকে ৬০%। কিন্তু কোথাও কোন জবাবদিহিতা না থাকায় পরিস্থিতি ক্রমেই নাজুক হচ্ছে। ভর্তি হবার পর কলেজগুলোতে শিক্ষা নামক কিছুই থাকছে না।
নগরীর একটি বেসরকারি কলেজে ২০২৩ সালের পরীক্ষার্থীদের ভর্তির সময় ৪০৩ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। অথচ এইচএসসির ফলাফলে দেখা যায় ২২০ জন তাদের জিপিএ ধরে রাখতে পারেনি। একই কলেজে ২০২৪ সালের পরীক্ষার্থীদের ভর্তির সময় ৪০৩ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় অথচ এইচএসসির ফলাফলে দেখা যায় ২৪৬ জন তাদের জিপিএ ধরে রাখতে পারেনি।
একই অবস্থা সরকারি মহিলা কলেজ ও সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে, মডেল স্কুল এন্ড কলেজের। এসব কলেজেও ৩৩% থেকে ৫০% জিপিএ-৫ প্রাপ্তরা এইচএসসিতে তাদের শিরোপা হারায়। অভিভাবকরা বলেছে কলেজের শিক্ষকরা ক্লাশে মনোযোগী না। তারা কলেজের চেয়ে তাদের কোচিং এ বেশি মনোযোগী। সব শিক্ষার্থীর এতো টাকা নেই যে শিক্ষকদের চাহিদা মতো কোচিং করবে। তাছাড়া সাইন্স এর প্রান হলো প্রাক্টিক্যাল। এই প্রাক্টিক্যাল ক্লাশ নেয়া বাবদ বড় অংকের টাকা নেয়া হলেও নির্লজ্জভাবে শিক্ষকরা তেমন একটা প্রাক্টিক্যাল ক্লাশ নেয়নি। পরীক্ষার সময় শিক্ষকরা প্রকাশ্যে প্রাক্টিক্যালের নম্বর ক্যাশ টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে। অভিভাবকরা বলছেন জিপিএ-৫ কেন কলেজগুলো হারাচ্ছে এ নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার। কোন কলেজে ভর্তির চেয়ে পরবর্তীতে কেন তা কম এলো তার জবাবদিহিতা আসতে হবে। অভিভাবকরা আরো বলেন, কলেজ শিক্ষকদের জিপিএ বানিজ্য বন্ধে দুদকের অভিযান দরকার। এ ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ডের বক্তব্য হলো-প্রকৃত মেধাবীরা জিপিএ তে সীমাবদ্ধ থাকে না। সে ক্ষেত্রে জিপিএ মেধার একক নয়। তবে কলেজগুলোতে মেধার বিপর্যয় রোধ করা হবে এবং এজন্য মনিটরিং আরো জোরদার করা হবে।