4:10 pm , June 29, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশে উদ্ভাবিত হাইব্রিড জাত সহ নানা জাতের আম উৎপাদন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আমানত গ্রীন এগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. সাদিক হোসাইন। সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের দিনার গ্রামে সখের বশে গড়ে তোলা এগ্রো প্রজেক্ট থেকে এবার তিনি বানিজ্যিকভাবে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। ১ একর ১৪ শতাংশের সাজানো গোছানো প্রজেক্ট থেকে বিগত ২-৩ বছর সবুজ মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছিল বলে জানান তিনি। তবে এবার শুধুমাত্র আমের চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১’শ মণ আম গোটা দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে বিক্রি করেছেন। আরো ২০-৩০ মণ মান সম্মত আম রয়েছে যা সুলভ মূল্যে বরিশালের বাজারে বিক্রি করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। শতভাগ অর্গানিক এই আম চাষ করেছেন আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রন পদ্ধতিতে।
আমানত গ্রীন এগ্রোর স্বত্বাধিকারী সাদিক হোসাইন পরিবর্তনকে জানান, ১০ বছর আগে পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে অবকাশ যাপন এবং নিছক সখের বশেই গড়ে তুলেছিলেন এই প্রজেক্ট। তবে ধীরে ধীরে তা বানিজ্যিক রুপ লাভ করেছে। বিগত বছরগুলোতে মাল্টা চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছিলেন। এবার ১ একর ১৪ শতাংশের প্রজেক্টে ৪’শ এর বেশি নানা জাতের আমের গাছ রোপন করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তার বাগানে বারি-৪, মল্লিকা, গোপাল ভোগ, হাড়িভাঙ্গা, আ¤্রােপালি, কাঠিমন, কাচামিঠা, চারকেজি সাইজ সহ ১০টির বেশি জাতের আমগাছ রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট এর উদ্ভাবিত হাউব্রিড জাত বারি-৪ আমের বেশ ভাল ফলনের কথা জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া ক্রেতাদের অন্যতম পছন্দের জাত আ¤্রােপালির বেশ ভাল ফলন হয়েছে। পরিক্ষামূলকভাবে এই প্রথম চাষ করেও তুলনামূলক সফল হয়েছেন বলে জানান সাদিক হোসাইন। মাত্র চারমাসে এই আমের ফুল থেকে পরিপক্কতা আসে। ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতির মাধ্যমে তার বাগানের আমের মান নিয়ন্ত্রন করেছেন এবং সফলতা অর্জন করেছেন। এ বছর ১ হাজার আমের ফ্রুটব্যাগিং করা হয়েছে এবং আগামিতে তা ১৫ হাজার আমের জন্য করা হবে বলে জানিয়েছেন। তবে প্রথমবারে এই সফলতা অর্জনের পথে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হয়েছেন তিনি। ভাল মানের আমের ফলনের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা পোকার আক্রমন। কলমের গাছ হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে তেমন ক্ষতি হয়না তবে পাখির কারনে পাকা আমের কিছুটা ক্ষতি হয়ে থাকে। এজন্য তিনি ফ্রুটব্যাগিং পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। ভবিশ্যতে সকল আমই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে চাষ করার কথাও জানান সাদিক হোসাইন।
তিনি বলেন, পূর্বে দক্ষিনাঞ্চলের বাসিন্দারা রাজশাহি, পঞ্চগড় সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা আমের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তবে কৃষি গবেষনায় উন্নয়নের সাথে সাথে চাষে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন শুরু হয়েছে বর্তমানে। তাই এখন আর শুধু আমদানি করা আমের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হবেনা। বরিশালে এখন ব্যাপকহারে সব ধরনের আমের চাষ শুরু হয়েছে। সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন এবং যথাযত তদারকি থাকলে আমাদের এখানেও বিখ্যাত ও সেরা স্বাদের সব ধরনের আমের ফলন সম্ভব। কারন আমাদের এ অঞ্চলের মাটি বেশ উর্বর। তিনি ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে আমের চাষ করবেন বলে জানান। বরিশালের ক্রেতাদের সূলভমূল্যে সম্পূর্ন অর্গানিক আম সরবরাহ করাই তার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।