4:06 pm , June 22, 2025

কাউখালী প্রতিবেদক ॥ কাউখালীর দিনমজুর ওমর আলী ৫ সদস্যদের পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন একটি পলিথিনের ছাপরা ঘরে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসুরী গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ আলী খানের ছেলে দিনমজুর ওমর আলী বাবার রেখে যাওয়া জমিতে দীর্ঘদিন পলিথিনের জরাজীর্ণ ছাপরা ঘরে বসবাস করছেন।
তিন বছর আগে পলিথিন ও প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ঘর তৈরি করে কোন মতে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে বসবাস করছে।
দিনমজুর ওমর আলী (৪৮) ভ্যান চালিয়ে
কোনো রকম সংসার চালায়। ওমর আলীর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। টাকার অভাবে এক ছেলেকে লেখাপড়া করাতে পারেনি। বর্তমানে এক ছেলে ও এক মেয়েকে সরকারি স্কুলে লেখাপড়া করার।
থাকার জায়গাটি দেখলেই মনে হয় এখানে কোন মানুষ থাকতে পারে না। পলিথিনের ছাপরা ঘরেই তারা মানবেতর জীবন যাপন করে আসছেন। এলাকার বিত্তশালীদের নজরে পড়েনি। এগিয়ে আসেনি কেউ।
ওমর আলী জানান, তার একটা ভ্যান ছিল। হঠাৎ করে তার ভাই অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই ভ্যান বিক্রি করে ভাইয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। প্রতিদিন দিনমজুরি কাজ পেলে তাহলে আহার জোটে। কাজ না পেলে কোন বেলা না খেয়ে থাকতে হয়।
ওমর আলীর ইচ্ছা স্ত্রী, সন্তান নিয়ে অন্তত থাকার ঘরটিই বসবাসের উপযোগী হলে শান্তিতে ঘুম দিতে পারতো খেয়ে না খেয়ে। শীতের তীব্রতা আর গ্রীষ্মের প্রখরতা এবং বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজে বাধ্য হয়েই কোন রকম দিনানিপাত করছে এই পরিবারটি। দিনমজুরের কাজ করে তাদের সংসারের খরচই চালাতে পারেন না। যার ফলে ঘরও উত্তোলন করতে পারেন না।
বৃষ্টি হলেই সব পানি ঘরের মেঝেতেই পড়ে। মানুষের পাড়ায় এ যেন অমানবিক চিত্র। এমন মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে ওমর আলী স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুর দিন আনে দিন খায়। কাজ করলে পেটে ভাত জোটে। তিনটা সন্তান আছে আমাদের। তাদের অসুখ হলে ভালোমতো চিকিৎসা করাতে পারি না। থাকার জায়গাটা ছাড়া আর কোন সম্বলও নাই। বিত্তবানদের সহযোগিতায় যদি ঘরটিতে থাকার মতো সংস্কারের ব্যবস্থা হয় তাহলে তিনটি সন্তান নিয়ে একটি মাথা গোঁজার পরিবেশ হতো।
সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা দিনমজুর ওমর আলীর বাড়িতে ছুটে যান এবং তাৎক্ষণিকভাবে ঘর তৈরি করার জন্য টিনের ব্যবস্থা করে দেন। এবং ঘরটি মেরামত করার জন্য আশ্বাস প্রদান করেন।
কাউখালী উপজেলা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওমর আলী সমস্যার কথা শুনে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি সরকারিভাবে একটি ঘর তৈরি করার জন্য।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি আমি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে ওমর আলী বাড়িতে ছুটে যাই। তাদের বসতঘরের অবস্থা দেখে আমার খুবই খারাপ লেগেছে। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই ওমর আলীকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেব।