এটিএম বুথে মাসুল বাড়লেও গ্রাহক সেবা কমেছে এটিএম বুথে মাসুল বাড়লেও গ্রাহক সেবা কমেছে - ajkerparibartan.com
এটিএম বুথে মাসুল বাড়লেও গ্রাহক সেবা কমেছে

4:02 pm , June 20, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ টাকা উত্তোলন ব্যায় বাড়লেও বরিশালে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথে গ্রাহক সেবা বাড়েনি। ঈদের টানা ১০ দিনের বন্ধে বুথগুলোতে দুর্ভোগ ছিলো সব বর্ণনার বাইরে। তারল্য সংকট আড়াল করতে গত আগষ্ট থেকে বিভিন্ন ব্যাংক নানা অজুহাতে এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকদের টাকা প্রদান সীমিত করণের পাশাপাশি নানাভাবে নিরুৎসাহিত করছে। যা গ্রাহক হয়রানিকে ক্রমশ বৃদ্ধি করে চললেও বিষয়গুলো নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেকটাই নির্বিকার। এমনকি বরিশাল অঞ্চলের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ঠিক কতগুলো এটিএম বুথ রয়েছে তাও জানে না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরিশাল অফিস। বিদ্যমান বুথগুলোতে গ্রাহক হয়রানির বিষয়গুলোও কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির কাছে অনেকটাই অবান্তর বলেই মনে হয়েছে।
তবে একাধিক সূত্রের মতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বরিশাল অফিসের আওতাভূক্ত এলাকায় সরকারি-বেসরকারী ৩৬টি ব্যাংকের সহ¯্রাধিক এটিএম বুথে প্রতিদিন লক্ষাধিক গ্রাহক নগদ টাকা উত্তোলন ও জমা করে থাকেন। কিন্তু গত দেশের পট পরিবর্তনের পরে প্রায় সব ব্যাংকই অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। এখন একবারে দশ হাজার টাকার বেশী প্রদান করা হচ্ছেনা বুথগুলো থেকে। এমনকি নিজ ব্যাংকের বাইরে অন্য ব্যাংকের বুথ থেকে গ্রাহকদের আগে প্রতি ২০ হাজার টাকা উত্তোলনে ২০ টাকা চার্জ ধার্য্য থাকলেও এখন ১০ হাজার টাকা উত্তোলনেই ২০ টাকা চার্জ প্রদান করতে হচ্ছে। কিন্ত সে চার্জ প্রদান করেও এখন বেশীরভাগ ব্যাংকের বুথ থেকে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকরা টাকা তুলতে পারছেন না।
শুধুমাত্র ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ ও ফাষ্ট ট্র্যাকের এটিএম ও সিআরএম মেশিন থেকে প্রায় সব ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা প্রদান করা হলেও সেসব স্থাপনায়ও রাত ৯টার পরে একটি মেশিন চালু রেখে অন্যগুলোতে গ্রাহকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়। গত ৫ জুন ঈদের ছুটি শুরু হবার পরে ৬ জুন রাত ৯টা থেকে ব্যাংকটির সব ফাষ্ট ট্র্যাকেই মাত্র ১টি করে সিআরএম মেশিন চালু রেখে অন্য সবগুলোই আটকে দেয়া হয়েছিলো। ডাচ-বাংলার বুথ ও ফাষ্ট ট্রাকগুলোতে প্রায় সব ব্যাংকের কার্ডের বিপরীতে টাকা প্রদান করা হলেও তা ইতোপূর্বে ২০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১০ হাজার টাকায় সীমিত করা হয়েছে। ব্যাংকটির ফাষ্ট ট্র্যাকগুলোতে সকাল ৯টা পর্যন্ত  একটি করে সিআরএম মেশিনই চালু থাকছে।
ডাচ-বাংলার পরে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে’এর এটিএম বুথের সংখ্যা বেশী থাকলেও গত আগষ্ট থেকে সেখানে অন্য সব ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে টাকা প্রদান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় রূপালী ব্যাংকের হাতেগোনা কয়কটি বুথে বেশীরভাগ ব্যাংকের কার্ডের বিপরীতে টাকা পরিশোধ করা হলেও অনেক নামিদামী ব্যাংগুলো এক্ষেত্রে রক্ষনশীল ভূমিকা পালন করায় সাধারন মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সীমিত কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে অন্যসব ব্যাংকের এটিএম কার্ডের বিপরীতে টাকা পরিশোধ করা হলেও কোন বুথ থেকেই এককালীন ১০ হাজারের বেশী টাকা প্রদান করা হচ্ছে না।  সীমিত সংখ্যক বুথে অন্য ব্যাংকের কার্ডের বিপরীতে টাকা প্রদান করা হলেও সেসব বুথে বাড়তি চাপে  গ্রাহক হয়রানী বাড়ছে।
ডাচ-বাংলা সহ কয়েকটি ব্যাংকের বুথে দিন-রাতই গ্রাহকের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়না। এসব বুথে নারী ও তাদের সাথে থাকা শিশুরা অনেক সময়ই অস্বস্তিকর অবস্থা পড়েন। বিশেষ করে ডাচ-বাংলার ফাষ্ট ট্র্যাকগুলোতে গত ৬ জুন রাত ৯টা থেকে ১টি মাত্র সিআরএম মেশিন চালু থাকায় বেশীরভাগ গ্রাহককেই এটিএম বা সিআরএম মেশিন পর্যন্ত পৌঁছতে রোদ-বৃষ্টিতে দীর্ঘ সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বরিশাল অফিসের সদ্য বিদায়ী নির্বাহী পরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথ ও ফাষ্ট ট্র্যাকের অনুমোদন সহ সার্বিক বিষয়টি কেন্দ্রীয় বাংকটির সদর দপ্তর থেকে দেখাশোনা করা হয়।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তার কারনে তাদের প্রায় সব এটিএম বুথ বন্ধ করে বিশেষ বিশেষ স্থানে ৫-৬টি এটিএম ও সিআরএম মেশিন নিয়ে ফাষ্ট ট্র্যাক চালু করা হয়েছে। যেখানে গ্রাহকরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা জমাও করতে পারছেন। পাশাপাশি হিসাব খোলা থেকে শুরু করে অনেকগুলো ব্যাংকিং কাজও এসব ফাষ্ট ট্র্যাকে সম্পন্ন হচ্ছে। ফলে গ্রাহকরা তার সুবিধাজনক স্থানে বেশীরভাগ ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT