আষাঢ়ের বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত আষাঢ়ের বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত - ajkerparibartan.com
আষাঢ়ের বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত

3:30 pm , June 18, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আষাঢ়ের প্রথম বর্ষণে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবনে যথেষ্ট বিপর্যয় নেমে এলেও কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। মাঠে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তা কেটে গেছে। প্রায় ২৪ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষে এ অঞ্চলের কৃষিযোদ্ধারা আমন বীজতলা তৈরী শুরু করলেও চলতি খরিপ-২ মৌসুমে কাঙ্খিত বৃষ্টির অভাব কিছুটা প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে। এ মাঝারী থেকে ভারী বর্ষণে উম্মুক্ত এলাকার করোনা ভাইরাস সহ এডিস মশার লার্ভা নিমূলে সহায়ক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
তবে এরই মাঝে আষাঢ়ের শুরুতেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিনত হয়ে বরিশাল উপকূল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে বলে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বরিশাল সহ সংলগ্ন এলাকায় সক্রিয় থাকার পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। ফলে বুধবার সকাল ১০টা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত টানা ৭২ ঘন্টা বরিশাল সহ সমগ্র উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া বিভাগ। এসময়ে বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকায় ২৪ ঘন্টায় ৪৫ মিলিমিটার থেকে ৮৮ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশংকার কথাও বলেছে আবহাওয়া অফিস। একই সাথে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদী বন্দরগুলোকে ১নম্বর সতর্ক সংকেতের আওতায় রেখেছে আবহাওয়া দপ্তর। পাশাপাশি সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বজ্রমেঘ তৈরীর পাশাপাশি বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্যের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর সহ উপকূলীয় এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি সহ দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবার আশংকায় পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বরিশাল উপকূল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরারত সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস ।
বঙ্গোপসাগর থেকে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা ধেয়ে এসে বুধবার সকাল ৯টার পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দেশের সর্বাধিক বৃষ্টি ঝড়িয়েছে বরিশাল সংলগ্ন খেপুপাড়াতে ৮৬ মিলিমিটার। এসময়ে বরিশালে ৩৭, ভোলাতে ৫৬ ও পটুয়াখালীতে ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশালে আরো প্রায় ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে সকাল ৯টা থেকে ১২টার মধ্যেই ৮ মিলিমিটারের বেশী বৃষ্টি হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল ১৪ মিলিমিটার।
সন্ধ্যা ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বরিশাল সহ সমগ্র উপকূল এলাকা কালো মেঘে ঢেকে থাকার পাশাপাশি থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। তবে নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী পাঁচদিন মাঝারী ধরনের অতিভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি পরবর্তি ৫ দিনেও বৃষ্টিপাতের প্রবনতা অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
তবে মাঝারী থেকে ভারী বর্ষণ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রবনতাকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে কিছুটা হলেও সহায়ক হতে পরে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। কিন্তু এ বর্ষণ ডেঙ্গু মশার বংশ বিস্তার না নির্মূল করবে তা সময়ই বলতে পারবে। কারণ ভারী বর্ষণ এডিস মশার লার্ভা নষ্ট করলেও হালকা-মাঝারী বৃষ্টিপাত তার বংশ বিস্তারে সহায়ক হতে পারে। একই সাথে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে গ্রীষ্মকালীন ডায়রিয়ার প্রবনতাকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়ক হবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল মহল।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT