শেবাচিমের বহি:বিভাগে চিকিৎসাসেবায় বিড়ম্বনা শেবাচিমের বহি:বিভাগে চিকিৎসাসেবায় বিড়ম্বনা - ajkerparibartan.com
শেবাচিমের বহি:বিভাগে চিকিৎসাসেবায় বিড়ম্বনা

3:29 pm , June 18, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ রোগীর চাপে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহি:বিভাগে চিকিৎসা সেবা অনেকটাই বিপর্যয়ের কবলে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় দু’হাজার রোগী এ হাসপাতালটির অন্তত ২২টি বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসলেও চিকিৎসক পর্যন্ত পৌঁছতে তাদের  নানা ধরনের ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। ৫শ শয্যার জনবল নিয়ে ১ হাজার  শয্যায় উন্নীত করা এ হাসপাতালে ২২৪ জন চিকিৎসকের অন্তত ৩০টি পদে কোন জনবল নেই। এমনকি হাসপাতালটির জরুরী বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭শ রোগী আসলেও সেখানেও মাত্র ১০জন ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসারের ৩টি পদ শূন্য। ৫শ শয্যার অবকাঠামো জনবল নিয়ে হাসপাতালটিকে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও  প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১৮শ রোগী ইনডোরে চিকিৎসাধীন থাকছেন। অথচ সাধারন জনবল সহ চিকিৎসক আছেন মাত্র ৩শ রোগীর।
ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ সরকারি হাসপাতালটি এখন আর সাধারন মানুষকে চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট করতে পারছে না। ১৯৬৮ সালে নির্মান কাজ শুরু করে ১৯৭৮ সালে এ হাসপাতাল ভবনে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু হবার পরে এর কলেবর আর বাড়েনি। কিন্তু ১৯৭৮ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের জনসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশী।
হাসপাতালটির নিচতলার ৩টি ব্লকে ২২টি বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণে শুধু বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলাই নয়, মাদারীপুর,শরিয়তপুর ও গোপালগঞ্জ থেকেও প্রতিদিন রোগী আসছেন।
কিন্তু শরীর ও মনের অত্যন্ত দুর্বল সময়ে যে মানুষগুলো একটু চিকিৎসা সেবার  জন্য এ হাসপাতালে আসছেন, সেখানে তাদের নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।  সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বহি:বিভাগ সব ধরনের রোগীদের জন্য উম্মুক্ত থাকার কথা। কিন্তু অনেক বিভাগের চিকিৎসকরা সাড়ে ৮টার আগে আসেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার দুপুর ১টার আগেই টিকেট কাউন্টারগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে অনেক সময়ই দূর  থেকে আসা রোগীরা কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
হাসপাতালটির নিচতলার বারান্দার বিহ:বিভাগে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছার আগেই অনেক রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিপুল সংখ্যক রোগীর স্বাচ্ছন্দে বসা সহ শৌচাগারের ব্যবস্থাও এখানে অনুপস্থিত।
এমনকি বহি:বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা প্রায় ২ হাজার রোগীর টিকেট সংগ্রহের জন্য কাউন্টার মাত্র ১টি। হাসপাতাল ভবনের নিচতলার পূর্ব প্রান্তের কাউন্টারে ৩টি বুথে টিকেট প্রদানের ব্যবস্থা থাকলেও কখনোই সেখানে দু’জনের বেশী কর্মীকে দেখা যায়না। ফলে এ হাসপাতালের বহি:বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষগুলোকে সরকারি ফি দিতে গিয়েই প্রথমে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। সকালের দিকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ নারী-পুরুষ ও শিশুদের টিকেট সংগ্রহের বিড়ম্বনা রোগ ভোগের চেয়েও অনেক কষ্টকর হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। অথচ এ হাসপাতালের আউটডোরে টিকেট প্রদানের জন্য নির্ধারিত ৬কর্মীর সাহায্যেই নিচতলার তথ্যকেন্দ্র সহ পশ্চিম প্রান্তে আরো দুটি টিকেট কাউন্টার স্থাপন করলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব।
উল্লেখ্য, প্রায় ৫০ বছর পূর্বে স্থাপিত দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটির বহি: বিভাগে বর্তমানে অর্থোপেডিক, মানসিক, সার্জারি, ইউরোলজী, শিশু রক্ত রোগ ও ক্যন্সার, নেফ্রোলজী, কার্ডিও ভাসকুলার এন্ড থেরোসিক সার্জারী, রিউমাটোলজী,  হৃদরোগ, গ্যাস্ট্রাএন্টারোলজী, চর্ম ও যৌন রোগ, নাক-কান-গলা, চক্ষু, দন্ত, শিশু, গাইনী বহি:বিভাগ, নিউরো সার্জারী, নেফ্রোলজি, হেপাটোলজি ও নিউরোলজি বহি: বিভাগে  বিপুল সংখ্যক মানুষ চিকিৎসার জন্য আসছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT