3:59 pm , June 4, 2025

তরিকুল ইসলাম, পিরোজপুর প্রতিবেদক ॥ ভা-ারিয়ায় জমে উঠেছে পশুর হাট। উপজেলার পোনা নদীর পশ্চিম পাড়ে নদমুলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শিয়ালকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ ও লিয়াকত মার্কেট থেকে ধাওয়া ইউনিয়নের ফুলতলা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে রাস্তার দুই পাশে বিক্রেতারা কুরবানীর গরু নিয়ে বসেছে বিক্রির জন্য। হাটে দেশি ও বিদেশি জাতের গরুর সমাগম ঘটেছে। স্থানীয় খামারিরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বেপারীরা তাদের পশু নিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর চাহিদা বেশি দেখা যাচ্ছে।
গরুর দাম আকার ও জাতভেদে ৬০ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত হয়েছে। তবে ক্রেতারা জানান, গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও পরিবহন খরচের কারণে পশুর দাম কিছুটা বেশি। তারা আশা করছেন, ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসবে, দাম কিছুটা কমতে পারে।
স্থানীয় খামারিরা জানান, তারা সারা বছর ধরে পশু লালন-পালন করে এই হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন। তারা আশা করছেন, ভালো দাম পেলে তাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।
ভা-ারিয়ার জেকে ডেইরিফার্মের প্রায় ১৫ মণ ওজনের একটি গরুর দাম হাকা হয়েছে ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এ ফার্মের ফয়সাল হোসেন জানান, তারা ফার্ম থেকেই বেশির ভাগ গরু বিক্রী করে থাকেন। খোঁজ খবর নিয়ে ত্রেতারা ফার্মে এসে গরু কিনে নিয়ে যায়। এ ফার্মের মালিক জাকির হোসেন নিজাম এর ফার্মে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৭০ থেকে ৮০ টি গরু রয়েছে।
এ পশুর হাট ঘুরে স্থানীয় খান এগ্রোফার্মের সবচেয়ে বড় ৩৫০ কেজি ওজনের গরুটির দাম হাকা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা বিক্রেতা ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। ১৭০ কেজি ওজনের অন্য গরুটির দাম হাকা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এ ফার্মের মালিক ফোরকান খান সৈকত জানান, তার ফার্মে মোট ২৫টি গরু আছে। এ গরু ৮ মাস ধরে লালন পালন করে বড় করতে প্রতিদিন খরচ পড়েছে ৮ হাজার টাকারও বেশি।
হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। জালনোট শনাক্তকরণ মেশিন, মেডিকেল টিম ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
গরু ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, এ হাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় তৎপর থাকে। তাই দূর দূরান্ত থেকে ক্রেতা-বিক্রেতা আসে। কোরবানীর জন্য ১৪ টি গরু হাটে নিয়ে এসেছি। এরমধ্যে বড়টির মূল্য হাকা হয়েছে ৩ খাল ২০ হাজার টাকা।
ক্রেতা আব্দুর রহিম জানান, ছোট ও মাঝারি গুরুর দাম একটু বেশি। ৮০ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। কাঠালিয়া থেকে আগত ক্রেতা শাকিবুজ্জামান বলেন, হাটে জেলা ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে গরুর রোগ নির্ণয়ের ক্যাম্প ও জাল টাকা শনাক্ত করার বুথ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহেনা আক্তার বলেন, কুরবানী উপলক্ষে পশুর হাটে বিশেষ নিরাপত্তা এবং পশু জবাইয়ের পর বর্জ্য অপসাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।