4:28 pm , May 29, 2025

চরফ্যাসন প্রতিবেদক ॥ ভোলার চরফ্যাসনে বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট লঘু চাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরফলে মাছের ঘের-পুকুর ডুবে কয়েক লাখ টাকা মাছ এবং গবাদী পশু পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া বুধবার রাতে ঝড়ো হাওয়ায় বিভিন্ন স্থানের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চরফ্যাসন বেতুয়া মেঘনা পাড়ের বাসিন্দারা জানান, জোয়ারের পানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় পানি অনেক বেড়েছে। এবং মেঘনা নদীতে উত্তাল ঢেউ রয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মেঘনা পাড়ের বাসিন্দারা।
সরেজমিন উপজেলার মাদ্রাজ, হাজারীগঞ্জ, জাহানপুর, ও চরমানিকা ইউনিয়ন সহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লঘুচাপের প্রভাবে বেড়িবাঁধের বাইরের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষের ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, পুকুর তলিয়ে গেছে। এসব এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রের স্বল্পতা রয়েছে, যা আছে তাতে সবার স্থান সংকুলান হয় না বলে জানান এলাকাবাসী।
উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইব্রাহিম মোল্লা বলেন, বুধবার রাতে ঝড়ো হাওয়ার প্রভাবে আমার বসতঘরের টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। আমার স্ত্রী-সন্তানরা বৃষ্টিতে ভিজে রাত্রি যাপন করেছে। রাতে কিভাবে ঘরে থাকবো সেই চিন্তায় রয়েছি।
উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর ইউনিয়নের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মাতব্বর মুঠোফোনে বলেন, আমাদের এখানে বেড়িবাঁধ নাই। চরবাসির অবস্থা একেবারে নাজুক। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে পুরো ঢালচরটি। এই চরে কোনো আশ্রয় কেন্দ্র নাই। যার কারণে আমরা আতঙ্কে রয়েছি।
চরফ্যাসন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম করেনি।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি নি¤œচাপে পরিনত হয়েছে। এতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। আমরা চরফ্যাসব উপজেলার বিভিন্ন মৎস্য ঘাটে বুধবার সকাল থেকে প্রচারণা চালিয়েছি। যাতে মৎস্যজীবিরা নিরাপদ স্থানে অবস্থান করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা শারমিন মিথি বলেন, বঙ্গোপসাগরের লঘু চাপের প্রভাবে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব অঞ্চলের মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য সিপিপি ৪২০ জন সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া উপজেলায় ১৬৯ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবং ফায়ার সার্ভিস, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ও সিভিল ডিফেন্স, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
বুধবার প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়ার ফলে অনেক স্থানে বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে শুনেছি। এসব এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হবে। এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে সহয়তা প্রদান করা হবে।নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মাছের ঘের-পুকুর ডুবে কয়েক লাখ টাকার মাছ এবং গবাদী পশু পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া বুধবার রাতে ঝড়ো হাওয়ায় অনেক স্থানের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে।