পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন ৪৪ ইঞ্চি আল আমিন ও ৩৩ ইঞ্চির শাম্মী দম্পতি পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন ৪৪ ইঞ্চি আল আমিন ও ৩৩ ইঞ্চির শাম্মী দম্পতি - ajkerparibartan.com
পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন ৪৪ ইঞ্চি আল আমিন ও ৩৩ ইঞ্চির শাম্মী দম্পতি

4:38 pm , May 19, 2025

কারো সহযোগী না পাওয়ায় ক্ষোভ

গৌতম কুমার, স্বরূপকাঠি প্রতিবেদক ॥ ‘অনেক কষ্টে মা হয়েছি ঠিকই, সন্তানের দুধ কেনার টাকা নেই! ক্যামেরার সামনে ইন্টারভিউ দিয়ে কি হবে; এখন আর ভাইরাল হওয়ার ইচ্ছে নেই। বিয়ের সময় অনেক সাংবাদিক দেখেছিলাম এখন আর কেউ আসে না। মরে গিয়েও বেঁচে আছি। উপজেলা প্রশাসন থেকে সব যায়গায় দৌঁড়েছি কেউ এক টাকাও সাহায্য করেনি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।’ সাংবাদিকদের সামনে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন পিরোজপুরের আলোচিত বামন দম্পতি।
গত সোমবার ঢাকার পিজি হাসপাতালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে এক পুত্র  সন্তানের জন্ম দেন গৃহবধূ ৩৮ ইঞ্চির শাম্মি আকতার। আত্মীয়-স্বজন ও দরিদ্র বাবা-মায়ের সহযোগিতায় এ যাত্রায় বেঁচে গিয়ে সরকারের প্রতি কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার স্বরূপকাঠী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর ছারছিনা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে আল আমিনের (২৫) সঙ্গে একই উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শাহজাহানের কন্যা শাম্মী আক্তারের (২৩) বিয়ে সম্পন্ন হয়।
আলা আমিন ও শাম্মী আক্তার বামন প্রকৃতির লোক হওয়ায় তেমন কোনো ভারী কাজ করতে পারেন না। গ্রামবাসী তাকে আগ্রহ করে কোনো কাজেও নেয় না।
শাম্মী আক্তারের মা শিরিন বেগম বলেন, আমার মেয়ে শাম্মী আক্তার উচ্চতায় ছোট হওয়ায় বিয়ে দিয়েছিলাম বামন আল আমিনের সঙ্গে। আলামিন কোনো কাজ করতে পারে না। আমরাও অসহায় ও দরিদ্র। ওদের দেখাশোনা করতে পারি না। ৮ দিন আগে ওদের ঘরে একটি ফুটফুটে সন্তান হয়েছে। হাসপাতালে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ধারদেনা করে কোনো রকম মা ও সন্তানকে বাঁচিয়ে এনেছি। কীভাবে যে এই ধারের টাকা পরিশোধ করব বুঝতে পারছি না। সরকার যদি ওদের একটু সহযোগিতা ও ব্যবসার ব্যবস্থা করে দিত; তাহলে ওরা খেয়ে পরে ভালো থাকতে পারতো।
আলামিন বলেন, বিয়ে হয়েছে আমাদের প্রায় চারবছর হয়ে গেল। আল্লাহ মুখ তুলে চেয়েছে বলে আজ আমি সন্তানের বাবা হয়েছি। সবাই আমাকে দেখে উপহাস করে কেউ কাজে নেয় না। সরকার যদি আমাকে একটু সহযোগিতা করত অথবা ব্যবসার ব্যবস্থা করে দিত তাহলে অন্যের উপর নির্ভর করতে হতো না। এ বিষয়ে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি সব সময় শাম্মী-আল আমিনের খোঁজখবর নিয়েছি। যখন যেটুক পেরেছি সহযোগিতা করেছি। কিছু দিন পূর্বে শাম্মী আমাকে কলদিয়ে বলেছিলো কাকা, আমাকে মাতৃত্বকালীন ভাতার একটা কার্ড করে দিবেন? কিন্তু প্রতিবন্ধীদের আইডি কার্ড দিয়ে ভাতার কার্ড করা যায় না। নির্বাচন অফিসার এর সাথে কথা বলে ওদের দুজনের জন্য আইডি কার্ড এর ব্যবস্থা করলাম। কিন্তু মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ডের সময় শেষ হয়ে গেছে কার্ড হাতে পাওয়ার আগেই। এদিকে  ডেলিভারির সময় হয়ে আসছে কিন্তু স্থানীয় কোন ডাক্তার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছিলো না সিজার করার। তারা বলছিলেন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেলে নিয়ে যেতে। শাম্মীর দেগের গঠন অনুযায়ী তার গর্ভের সন্তানও ছোট এবং পুষ্টিকম হয়েছে। তাছাড়া শাম্মী খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে; অক্সিজেন নিয়ে চলতে হয়। ডাক্তারের পরামর্শে ঢাকা পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গত ১২ মে শাম্মীর একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া মা-ছেলে দুজনে ভালো আছে। আমরা যদি সকলে মিলে ওদের পরিবারটিকে একটু সাহায্য সহযোগিতা করি  তাহলে পরিবারটি ভালো থাকবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ দম্পতি সম্পর্কে আমার সঙ্গে কেউ আলাপ করেনি। তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি দু:খজনক। তারা যদি সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের যোগ্য হয় অবশ্যই তাকে সহযোগিতা করা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT