4:02 pm , May 16, 2025

মো. জসিম জনি, লালমোহন প্রতিবেদক ॥ ভোলার লালমোহনে নকল হাইব্রিড ধানের ফাঁদে পড়ে কৃষকদের ৩২ একর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এই ধান চাষ করে ২০ জন কৃষকের এখন মাথায় হাত পড়েছে। উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের কাজিরাবাদ গ্রামে চলতি মৌসুমে কৃষকরা হাইব্রিড ধান রোপণ করেন। কিন্তু চারা থেকে ধান বের হওয়ার পর শীষ শুকিয়ে সব ধান সাদা হয়ে ক্ষেতে নেতিয়ে পড়েছে। উচ্চ ফলনশীল মনে করে তারা নকল ধানের ফাঁদে পড়ে বড় ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের কাছেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, দেবীরচর বাজারের বীজ ব্যবসায়ী কামালের কাছ থেকে কৃষকরা এই ধান ক্রয় করেন। ধান নষ্ট হওয়ার পর কৃষকরা বুঝতে পারেন এগুলো নকল হাইব্রিড ধান। মাদার এগ্রোসিভ কোম্পানীর হাইব্রিড ধান-২ (উইন ৩০৫) জাতের প্যাকেট নকল করে একটি চক্র এই ধানের বীজ বিক্রি করেন সারা দেশে। বীজ ব্যবসায়ী কামাল জানান, তিনি উপজেলার ডাওরী বাজারের জসিম ডিলারের দোকান থেকে এই ধান পাইকারি কিনে নিয়ে বিক্রি করেছিলেন। তিনি বুঝতে পারেননি এগুলো নকল ছিলো।
বদরপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাজিরাবাদ গ্রামের মাহবুব মাতাব্বর জানান, তিনি প্রায় ১ একর জমিতে এই ধান চাষ করেছিলেন। এরমধ্যে প্রতি গন্ডায় স্বাভাবিকভাবে ধান হওয়ার কথা ৭ থেকে ৮ মন করে। সেখানে এই ধান চাষ করে ধান পেয়েছেন প্রতি গন্ডায় দেড় মনের মতো। একই অভিযোগ করেন আমির হোসেন আব্বাস নামে আরেকজন কৃষক। তিনি ৬ গন্ডা জমিতে এই ধান রোপণ করেন। ধান বের হওয়ার পর এই অবস্থা দেখে তিনি ক্ষেত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত কোন ধান কাটেননি। ক্ষেতের মাঝেই তার সাথে কথা হয়। অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সর্বনাশ করেছে এই নকল ধান বিক্রি করে। প্রতি কেজি ধান ৪৭০ টাকা করে কিনেছিলেন। এই ধান হাইব্রিড জাতের বলা হয়েছিলো। ১ কেজি ধান ২ গন্ডা জমিতে রোপণ করা যায়। প্রতি গন্ডায় ৭ থেকে ৮ মন ধান হওয়ার কথা। এখন ধান সর্বোচ্চ দেড় মন থেকে ২ মন হতে পারে। ক্ষেতের মাঝেই আরেক কৃষক নয়ন মিয়া বলেন, এই পর্যন্ত জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত যা খরচ হয়েছে সবই লোকসান হলো এই ধানের বীজের কারণে। অধিকাংশই শীষ কাত হয়ে ক্ষেতে পড়ে আছে।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার আবু হাসনাইন বলেন, কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে এবিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। প্যাকেট নকল করে হাইব্রিড জাতের ধান বলে বিক্রি করা হলেও আসলে ছিলো উফশী জাতের ধান। ওই ধানের ফলন এখন এ অঞ্চলে হয়না।