5:02 pm , May 10, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বিএম কলেজ অর্থনীতি বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা গতকাল শনিবার কলেজের শিক্ষক সম্মেলন কক্ষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত এবং ভবিষ্যতে এই অ্যাসোসিয়েশনের যেকোনো কর্মকান্ডে সার্বিক সহযোগিতা করবো।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর মো. ইসহাক আলী খন্দকার।
সকাল সাড়ে ৯টায় রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম ব্যাচ (১৯৬৪-৬৫ শিক্ষাবর্ষ) থেকে শুরু করে মোট ৫১টি ব্যাচের প্রায় ২১০ জন অ্যালামনাস রেজিস্ট্রেশন করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে সকাল ৯টায় সংগঠনের কয়েকজন সিনিয়র অ্যালামনাই অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. হানিফ ও প্রফেসর মাকসুদা বেগমসহ অর্থনীতি বিভাগের প্রয়াত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কবর জিয়ারত করেন এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করেন।
সভা শুরু হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতাপাঠের মাধ্যমে। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রফেসর পরিমল চন্দ্র কর্মকার (১২তম ব্যাচ)। বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (৯ম ব্যাচ), আবুল কাশেম, আজিজুল হক আক্কাস প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অর্থনীতি বিভাগের মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রফেসর মাকসুদা-ইসহাক কল্যাণ তহবিল থেকে ১৬ জন শিক্ষার্থীকে মোট ৮০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়। ইতোপূর্বে এই তহবিলে অধ্যক্ষ প্রফেসর ইসহাক আলী খন্দকার ২০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন। তিনি প্রথম ব্যাচের (১৯৬৪-৬৫) একজন অ্যালামনাই।
৯ম ব্যাচের মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী নূরুন্নাহারের নামে এককালীন ২৫ লাখ টাকার শিক্ষা সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন। এবছরও ‘নূরুন্নাহার-আলাউদ্দিন শিক্ষা বৃত্তি’ তহবিল থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী মোট ১ লাখ টাকা বৃত্তি পেয়েছেন।
৬ষ্ঠ ব্যাচের অ্যালামনাই নাদিরা কাসেম নতুনভাবে ৫ লাখ টাকার একটি শিক্ষা সহায়তা তহবিল গঠনের জন্য চেক প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যাচের অ্যালামনাইরা স্মৃতিচারণা করেন, যা অনুষ্ঠানকে আবেগঘন করে তোলে।
সাংগঠনিক আলোচনায় সাধারণ সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান খান বিগত বছরের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি তিন বছর অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচন ২০২৬ সালের বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে তরুণ নেতৃত্ব এই সংগঠনকে আরও গতিশীল ও কল্যাণমুখী করবে।
অর্থ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম সংগঠনের বিগত সময়ের বিস্তারিত আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন, যা সভায় কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয়।
সবশেষে, উপস্থিত সবার অংশগ্রহণে লটারির আয়োজন করা হয়, যা অনুষ্ঠানের পরিবেশকে আরও আনন্দঘন করে তোলে। ২০ জন পুরস্কার বিজয়ী হন।
অ্যালামনাসদের গান, কবিতা, আবৃত্তি, অভিনয় অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা আনে। দিনের শেষভাগে অ্যালামনাইদের ৩টি গাড়িতে করে কীর্তনখোলা নদী তীরবর্তী ৩০ গোডাউন বধ্যভূমি এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে এক মিলনমেলায় অনুষ্ঠান পরিসমাপ্ত হয়। সন্ধ্যার আলো-আধারিতে প্রাণবন্ত পরিবেশে সভার সমাপ্তি ঘটে।