কোরআন শপথ করিয়ে ডাকাতের পকেট থেকে স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করলো ডাকাত সরদার! কোরআন শপথ করিয়ে ডাকাতের পকেট থেকে স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করলো ডাকাত সরদার! - ajkerparibartan.com
কোরআন শপথ করিয়ে ডাকাতের পকেট থেকে স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করলো ডাকাত সরদার!

3:12 pm , April 30, 2025

কুয়াকাটা প্রতিবেদক ॥ কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুস সালাম আকনের বাড়িতে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হানা দেয় ১০/১২ জনের একটি ডাকাত দল। অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে লুট করে নগদ ২ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণালংকার। লুট হওয়া স্বর্ণালংকারের মধ্যে ছিলো ১১টি স্বর্ণের চেইন। এত সোনা দেখে লোভ সামলাতে পারেননি একজন ডাকাত সদস্য। ওই ঘরে বসেই লুট হওয়া ১১টি চেইনের মধ্য থেকে একটি লুকিয়ে ফেলেন নিজের পকেটে। বিষয়টি কেউ বুঝতে না পারলেও সন্দেহ হয় ডাকাত সরদারের। এরপর প্রথমে তিনি গৃহকর্তীর একহাতে কোরআন মাজীদ আর অপর হাত ছেলের মাথায় রেখে শপথ করিয়ে প্রথমে নিশ্চিত হন ঘরে ১১টি স্বর্ণের চেইন ছিলো। এক পর্যায়ে সব ডাকাত সদস্যদের হাতে কোরআন মাজীদ ধরিয়ে যখন জানতে চাওয়া যায় বাকী চেইন কে নিয়েছে। ঠিক সেই মুহূর্তে একজন ডাকাত সদস্য তার পকেট থেকে চোরাই স্বর্ণের চেইনটি বের করে তুলে দেন ডাকাত সরদারের সাথে। লুট করা মালামাল ভাগ-বণ্টনের আগেই ডাকাত সরদারের সাথে ডাকাত সদস্যের এমন কান্ড আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে।
আব্দুস সালাম আকনের ছোট ছেলে লুনা আকনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার তাসমি জানান, আমার সন্তানের মাথায় হাত দিয়ে বার বার শপথ করিয়ে অন্যান্য স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি আমাদের পরিবারের ১১টি স্বর্ণের চেইন নিয়ে নেয় ডাকাতরা। কিছুক্ষণ পরে তারা গণানা করে ১০টি চেইন দেখতে পায়। এসময় আমাকে আবার শপথ করায়। তারা ১১টা নিশ্চিত হয়ে ডাকাত সদস্যদের সবাইকে এক জায়গায় করে কোরআন শপথ করিয়ে সেই চেইন একজন ডাকাতের কাছ থেকে উদ্ধার করে।
এসময় তাদের দলনেতা বলেন ‘কেউ বেঈমানি করবানা। যেসব মোবাইল আমরা জব্দ করেছি সবগুলো কাজ শেষে পেছনের পুকুরে ফেলে দিবা। কেউ একটা মোবাইল সাথে নিবা না।
এসময় সেই দলনেতা কোনো কোনো একজনকে ফোন করে বলে কিরে কি তথ্য দিলি ‘এই বাড়িতে তেমন কিছুতো পাইলামনা।
আবদুস সালাম আকনের ছোট ছেলে লুনা আকন বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে ঘরের মূল গেট সহ দরজা ভেঙ্গে ১০-১২ জন লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় আমাদের ঘরের সব কক্ষগুলোতে ঢুকে পড়ে। আমাকে সহ ঘরে থাকা আমার স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধা মা,ভাই সবাইকে বেধে ফেলে। আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। পুরো ঘরের মালামাল তছনছ করে ফেলে। রাত সোয়া একটার দিকে শুরু করে ঘন্টাব্যাপি চলে তাদের ডাকাতি।
লুনা আকন আরো জানান, তাদের প্রত্যেকের মুখে কাপড় থাকায় আমরা কাউকে চিনতে পারিনি। তবে এদের মধ্যে যে দুজন কথা বলেছে তাদের কণ্ঠ অপরিচিত মনে হয়েছে। বাকিরা সবাই ইশারায় কাজ করেছে। ডাকাতরা বাড়ির পেছন থেকে ঢুকছে আবার সেদিকেই চলে গেছে। দলের প্রধানের হাতে একটা সটগান দেখেছেন, অন্যদের হাতে গরু জবাইয়ের বড় বড় ছুরি ছিলো। ডাকাতির সময় পরিবারের সবার মোবাইল কেড়ে নিলেও ডাকাতি শেষে ঘরের পেছনে ফেলে রেখে যায়।
মরহুম আব্দুস সালাম আকনের স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন, আমি বৃদ্ধা ও অসুস্থ তবুও ডাকাতরা আমার দুই হাত বেধে রাখে। এই বাড়িতে কোন দিন ডাকাতি হয়নি। আজ আমাদের সব কিছু নিয়ে গেলো।
এ ব্যাপারে মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম বলেন, রাতে সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরিবারের সবার কথা শুনেছি। অভিযোগ দায়েরের পর আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT