2:44 pm , April 26, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মেরিন একাডমি’তে কৃতিত্বের সাথে ভর্তির যোগ্যতা অর্জনকারি মেধাবী সুলাইমান মল্লিকের শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার কবলে। ৫ম শ্রেণি ও ৮ম শ্রেণিতে বৃত্তি নিয়ে পাওয়া সুলাইমান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ নিয়ে কৃতীত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে এবার বরিশাল মেরিন একাডেমিতে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রী অর্জন করে মেরিন টেকনোলজিতে আরো উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পরে সমুদ্রগামী জাহাজে সারা বিশ^ ঘুরে বেড়াবার স্বপ্ন রয়েছে সুলাইমানের।
তবে সবকিছুর আগে মায়ের মুখে হাসি ফোটানোকেই তার প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য মনে করছেন সুলাইমান। একমাত্র ছোট বোন সুরাইয়া মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে এখন বরিশালের সাহেবের হাট শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজে পড়াশোনা করছে।
অত্যন্ত মেধাবী ভাই-বোন শৈশবেই পিতার ¯েœহ ও ভালাবাসা থেকে বঞ্চিত। অজ্ঞাত কারণে বাবা তাদের ফেলে চলে যাবার পরে আর কোন খোঁজ খবর রাখেনি।
স্বামীর এ আচরনে মা হাসিনা বেগমের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লেও সে হাল ছাড়েনি। অসহায় অবস্থায় দুই সন্তান সহ বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের খোন্তাখালী গ্রামে বাবা মোমিন আলী হাওলাদারের বাড়ীতে ওঠেন হাসিনা। দুস্থ মোমিন আলী কোন উপায় না দেখে মেয়ে ও দুই নাতী-নাতনীকে তাদের প্রাপ্য ১ শতাংশ জমি নির্দেষ্ট করে সেখানে কোনমতে একচালা ঘর তুলে বসবাসের ব্যবস্থা করেন।
হাসিনা পিতার সান্নিধ্যে দুই সন্তানকে আগলে রেখে পড়াশোনা চালিয়ে যান। কিন্তু কে তাকে সহায়তা করবে । ৩টি উদর পূর্তি করার মত কোন সামর্থ্য না থাকায় এবং দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ চালাতে অসহায় হাসিনা এক পর্যায়ে মানুষের বাড়ীতে কাজ করতে থাকেন।
এ অবস্থাতেই দুই ছেলে-মেয়ে ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়ে এগিয়ে যেতে থাকে। গত বছর ছেলে সুলাইমান সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে এখন বরিশাল মেরিন একাডেমির ছাত্র।
তবে বহু কষ্টে বিভিন্ন মানুষের সহায়তায় সে একাডেমিতে ভর্তি হলেও পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছে না। সেমিষ্টার ফি এবং আবাসিক হলে থাকার মত খরচ চালানোর কোন পথ সে খুঁজে পাচ্ছে না।
অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী দুই সন্তান নিয়ে মা হাসিনা ও নানা মোমিন আলী অনেক স্বপ্ন দেখলেও অভাব এবং অসচ্ছলতা প্রতিনিয়ত তাদের স্বপ্নকে অনিশ্চিত করে তুলছে।