4:46 pm , April 21, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ গত পহেলা বৈশাখ থেকে প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু বৃষ্টিপাত হচ্ছে, হয় দিনে নয়তো রাতে। তারপরও বরিশাল নগরীর ৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার কোথাও থেকে জলাবদ্ধতার কোনো সংবাদ হয়নি। কারণ একটাই বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসক রায়হান কাওছার এর কঠিন নজরদারি এখন মহানগরীর অলিগলি সহ সবখানে। সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন সড়কের পাশের ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখার কাজে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের রীতিমতো প্রতিযোগিতা করতে দেখা গেছে । পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেল, যেকোনো মুহূর্তে এগুলো পরিদর্শন করতে আসবেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক রায়হান কাওছার ও সিইও রেজাউল বারী। এরকম সড়ক সংলগ্ন ড্রেন পরিষ্কার করে পাশেই ময়লার স্তুপ করে রাখার কারণে প্রশাসকের ধমকও শুনতে হচ্ছে তাদের। নবগ্রাম রোডের মনসুর কোয়ার্টার সংলগ্ন সড়কের পাশে এরকম ময়লা দেখে রেগে আগুন হলেন বিসিসি প্রশাসক। মঙ্গলবার পুনরায় এই ড্রেন পরিষ্কার করার নির্দেশ দিলেন তিনি।
সোমবার সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ইউসুফ আলীকে দেখা গেল নগরীর ২৩ নং ওয়ার্ড সাগরদি খাল ও আশেপাশের ড্রেনেজ ব্যবস্থার ছবি ও ভিডিও করতে। জানালেন, নগরবাসীকে মশার যন্ত্রণা থেকে বাঁচাতে সবগুলো খাল ও খাল সংলগ্ন ড্রেনেজ ব্যবস্থার কি অবস্থা তা জানতে চেয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার। দরগাবাড়ি ও তার আশেপাশের খালগুলো তখন রীতিমতো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আছে দেখা গেল। অথচ মাত্র তিনমাস আগেই এগুলো পরিষ্কার করা হয়েছিলো।
এসময় কয়েকজন পথচারী অভিযোগ তুলে জানালেন, ১৩ নং ওয়ার্ডের খান সড়কের পিছনের এলাকার বাসিন্দারা যেন নিজেরাই মশার চাষাবাদ করছেন। প্রতিটি বাড়ীর পিছনে ড্রেনগুলো ভয়ংকর অবস্থা। আবার সরাসরি পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থাও এই খালের সাথে সংযুক্ত আর ২৩ নং ওয়ার্ডের মানুষ নিজেরাই নিজেদের জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী হবেন। কেননা তাদের বাসাবাড়িতে প্রবেশের পুল ও কালভার্টের কারণে এভাবেই ময়লা আবর্জনা আটকে বন্ধ হচ্ছে খালের গতিপথ।
এদিকে সড়কের সংষ্কার কাজও চলমান দেখা গেল কালু শাহ সড়ক থেকে নিউ সার্কুলার রোড, ডিসিঘাট সড়কসহ অনেক সড়কে।  আবার ব্যস্ততম বাংলাবাজার সড়কের খানাখন্দ সংষ্কার হয়ে গেছে জানিয়ে বিসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব বলেন, উপজেলা পরিষদের পিছনের এলাকা ইসলাম পাড়া সড়কের কাজ রি-টেন্ডার দেওয়া হয়েছে এবং এটির কাজ শুরু হতে আরো প্রায় তিনমাস লাগবে।
এদিকে প্রতিদিন সকাল কিংবা বিকেলে নগর ভবনের প্রশাসক ও সিইও নগরীর বিভিন্ন সড়ক এবং এলাকায় পরিদর্শন করছেন বলে জানালেন সিইও রেজাউল বারী। তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই সবগুলো সড়ক ও সড়ক সংলগ্ন ম্যানহোলের ঢাকনা বসিয়ে দিয়েছি। সড়ক সংষ্কারের পাশাপাশি প্রতিটি ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা হচ্ছে। তবে নগরবাসীর উন্নয়নে বড় বাধা এখানের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। তারা অবৈধ উচ্ছেদে বাধা সৃষ্টি করে সড়কের প্রশ্বস্ততার কাজ আটকে দেন।
আবার নগরীর দোকানপাট, বাসাবাড়ির সামনে ও পিছনের ময়লা আবর্জনাতো সিটি করপোরেশন পরিষ্কার করবেনা। এগুলো নিজেদের পরিষ্কার রাখার আহ্বান জানিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক রায়হান কাওছার বলেন, মশার অন্যতম উৎপত্তিস্থল হচ্ছে ময়লা আবর্জনা, নোংরা জমাট পানি। যার যার বাসাবাড়ির পিছনে এবং আশেপাশের ময়লা পরিষ্কার রাখা নাগরিক দায়িত্ব। আমরা আগামী কয়েকদিন দেখবো, আমাদের সংষ্কার কাজগুলো শেষ হওয়ার পর বাসাবাড়ি ও দোকানপাট, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে ময়লা আবর্জনা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে।