3:01 pm , April 18, 2025

জুম্মাবার

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ গাজা ও ফিলিস্তিনের পক্ষে এতবড় সমাবেশ করার পরও যুদ্ধ  বন্ধ হয়নি বরং বেড়েছে আরো। নতুন করে ইয়েমেন আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে এবার আমেরিকা তাদের যুদ্ধ জাহাজ থেকে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে। ভারতে মসজিদ ভেঙে ফেলা হচ্ছে, সারাবিশ্বে একধরনের মুসলিম নির্যাতনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আমতলা মোড়ের সড়ক ও জনপথ জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা আবুল বাসার বলেন, আর এটা ততদিন চলতে থাকবে যতদিন না মুসলমানরা নিজেদের পরিশুদ্ধ না করবে। পবিত্র কুরআন আঁকড়ে ধরে সে অনুযায়ী জীবন-বিধান পরিচালনা করাই হচ্ছে মুসলমানদের পরিশুদ্ধতা। নবী করিম (সা:) এর অনুসরণই মুসলমানদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। তিনি এসময় পবিত্র কুরআন থেকে আয়াত পাঠ করে বলেন,  আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘আর তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিভক্ত হয়ো না। আর তোমাদের প্রতি আল্লাহর সেই অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে; তখন তিনি তোমার হৃদয় প্রীতির বাঁধনে বেঁধে দিলেন এবং তোমরা তারই অপার অনুগ্রহে ভাই ভাই হয়ে গেলে। আর তোমরা এক অগ্নিকু-ের কিনারায় ছিলে, তিনি তোমাদের তা থেকে রক্ষা করলেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন যেন তোমরা হেদায়াত লাভ কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১০৩)
আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে জীবন পরিচালনায় সব ধরনের মতভেদ, অনৈক্য আর পরস্পরের মাঝে বিভক্তি থেকে বিরত থেকে আল্লাহর রুজ্জু তথা পথে স্থির থাকার কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা পবিত্র কুরআনের শিক্ষা এবং বিশ্বনবির আদর্শের ওপর আমল করছিনা বলেই এত অনৈক্য আর সমস্যা।
পবিত্র কুরআনের শিক্ষার ওপর আমল করলেই আমাদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত থাকবে দাবী করে মুগা খান জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা আবুল বাসার বলেন, জাতীয় ও ধর্মীয় সব ধরনের ঐক্য সুপ্রতিষ্ঠিত হবার একমাত্র পথই হচ্ছে আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুসরণ । আর এ ঐক্য-ই আমাদের এক উম্মতে পরিণত হবার নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারে। যার ফলে আমরা এক শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হতে পারব।
একই দাবী ও আহ্বান জানিয়ে ফারহান তালুকদার জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা মোকলেছুর রহমান বলেন, মুসলিম উম্মাহকে পুনরায় এক শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হতে হলে অবশ্যই আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে এবং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিপূর্ণ অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। কেননা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ দিয়েছেন-‘তুমি বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাস তাহলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। (এমনটি হলে) আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসবেন।’
(সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)
এভাবেই ১৮ এপ্রিল  শুক্রবার  জুম্মাবারের আলোচনা শুরু করেছিলেন সড়ক ও জনপথ মসজিদের ঈমাম মাওলানা আবুল বাসার, মুগা খান জামে মসজিদের ঈমাম আবুল বাসার এবং ফারহান তালুকদার জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা মোকলেছুর রহমান সহ আরো অনেকে। সকলেই তাদের বক্তব্যে ন্যায় পরায়ন শাসন ব্যবস্থা এবং ইসরাইল ও ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানান ।
মুগা খান মসজিদের মুল আলোচ্য বিষয় ছিলো হজ্জ্ব। কিন্তু হজ্জের আলোচনাকে ছাপিয়ে সেখানে স্পষ্ট হয়ে ওঠে মুসলমানদের ঐক্য সৃষ্টি এবং ইসরায়েল ও ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান। ঈমাম আবুল বাসার বলেন, একজন ব্যক্তি হজ্জে যাবেন কিন্তু তার প্রতিবেশীরা বিপন্ন, তার মুসলিম ভাই নির্যাতিত। এমতাবস্থায় তার হজ্জের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রতিবেশীকে বিপদ মুক্ত করা। এ বিষয়ে অনেকগুলো হাদিস এর উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি।
ফারহান তালুকদার জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা মোকলেছুর রহমান বলেন, আমাদের সমাজে ইসলামের আইন বাস্তবায়ন এখন জরুরী হয়ে উঠেছে। এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকেও মুসলিম শাসক চাইলে ইসলামের আইন বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে পারেন।
সড়ক ও জনপথ মসজিদের ঈমাম মাওলানা আবুল বাসার বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আজ পর্যন্ত কি কোনো অমুসলিম শাসক এসেছে, আসেনি? যারা শাসক ছিলেন এবং এখনো আছেন,  সবাই মুসলমান। সবাই কোরআন পড়েন এবং কোরআন বিশ্বাস করেন,  তাহলে কোরআনের আইন কেন বাস্তবায়ন হয়না? কেন মানুষ রচিত সংবিধানকে এতো গুরুত্ব দেয়া হয়? আল্লাহর উপরে কোনো বিধান হতে পারে না। পবিত্র কুরআন হচ্ছে  আল্লাহর আইন ও বিধান।  যা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত মুসলমানরা সারাবিশ্বে নির্যাতিত হতেই থাকবে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চুরি করলে হাত কেটে দেয়া এবং ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদ- নিশ্চিত করার মাধ্যমে পবিত্র কুরআন এর কিছু আইন বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান ।