2:46 pm , April 10, 2025

বাকেরগঞ্জ প্রতিবেদক ॥ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে অর্থের যোগানদাতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গারুড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এএসএম জুলফিকার হায়দারকে র্যাব আটক করেছে।
বুধবার রাতে ঢাকার মিরপুর থেকে র্যাবের একটি টিম তাকে আটক করে। পরবর্তীতে র্যাব বাকেরগঞ্জ থানায় খবর দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে পুলিশ রীতিমত নাটক শুরু করে। সুত্রে জানা গেছে, র্যাবের হাতে আটক আওয়ামী লীগ নেতা জুলফিকার হায়দারকে ঢাকা থেকে আনার জন্য বৃহস্পতিবার রাতেই এসআই তোফাজ্জলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঢাকায় যায়। পরের দিন তাকে মাইক্রোবাসযোগে ঢাকা থেকে বরিশালে নিয়ে আসলেও বাকেরগঞ্জ থানায় হাজির না করে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে বরিশাল আদালতে প্রেরণ করে।
আটককৃত জুলফিকারকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে সাংবাদিকরা এ বিষয় ওসি শফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, থানায় আনার পরেই বলা যাবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও আটককৃত জুলফিকারকে বাকেরগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়নি। পরবর্তীতে ওসির কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন অন দ্যা ওয়ে আসামিকে নিয়ে আসা হচ্ছে। তার একটু পরেই বলেন থানায় আসামি নিয়ে এসে বরিশালে চালান দেয়া হয়েছে।
এসআই তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা জুলফিকার হায়দারকে গারুড়িয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মামলার বাদী হাসান সিকদার বিপ্লব বলেন, জুলফিকার হায়দারকে গ্রেপ্তারের বিষয় আমি কিছুই জানি না।
কলসকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আল আমিন মোল্লা বলেন, ওসি শফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের নামে মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করছেন। যে কারনে মাটি কাটার ঘটনায় তারমত বিএনপি নেতাদের নামে থানায় মিথ্যা মামলা রেকর্ড করেছে। অথচ ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর জুলফিকারের মত নেতারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে গড়িমসি করে।
সুত্র জানায়, ‘ঘরে ঘরে খবর দে, এক দফার কবর দে’ স্লোগান দিয়ে কোটা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়া জুলফিকার হায়দার ঢাকার মিরপুর-১০ গোলচত্বরে তার একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অন্তরালে ছাত্র-জনতাকে হত্যায় সহায়তাকারী ও অর্থের যোগান দেয়। এমনকি তিনি দলের নেতাকর্মীদের নিজ উদ্যোগে ঢাকায় নিয়ে তার অফিসে রেখে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাসহ ছাত্র জনতাকে হত্যার ছক এঁকেছেন। আবার ৫ আগস্টের পরেও তিনি শত শত শহীদের রক্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দাপটের সাথেই ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করেছেন, প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সেই সাথে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য গোপনে কাজ করে চলেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি তাহসিন আহমেদ রাতুল বলেন, ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকার পালিয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদ সরকারের অন্যতম দোসর বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করতে অর্থের যোগানদাতা জুলফিকার হায়দার এখনো বহাল তবিয়তে প্রকাশ্যে তার ব্যবসা ও অন্যান্য কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। যা লজ্জাজনক এবং আমাদের ভয়ের কারণ।