4:35 pm , March 25, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আসন্ন ঈদ উল ফিতরের আগে-পরে রাজধানী সহ সারা দেশ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ঘরে ফেরা ও কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার এখন প্রধান অন্তরায় বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল-ভাঙ্গা অংশের অপ্রশস্ত মহাসড়ক। দেশের ৮নম্বর এ জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল-ভাঙ্গা অংশের ৯১ কিলোমিটার মহাসড়ক এখনো ১৮-২৪ ফুট প্রশস্ত। একই মহাসড়কের বরিশাল-পায়রা-কুয়াকাটা অংশটি মাত্র ১৮ ফুট প্রশস্ত।
ফলে রাজধানী সহ চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের যানবাহন সমূহ পদ্মা সেতু অতিক্রম করে ভাঙ্গা হয়ে বরিশালের অংশে প্রবেশের পরেই শুরু হচ্ছে নানামুখি বিড়ম্বনা। এমনকি সমগ্র উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগও বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের ভাঙ্গা-বরিশাল অংশের ওপর নির্ভরশীল।
ঈদকে সামনে রেখে দেশের ৮নম্বর এ জাতীয় মহাসড়কটিতে ইতোমধ্যেই চাপ বাড়তে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরেই মহাসড়কটির বিভিন্ন অংশে তীব্র যানযটে নাকাল যাত্রীরা।
২৮ মার্চ ঈদের ছুটি শুরু হচ্ছে। কিন্তু ইতোমধ্যেই মহাসড়কটির ভূরঘাটা, গৌরনদী, টরকি, বাটাজোর, মাহিলারা, মোস্তফাপুর, টেকেরহাট,বড়ইতলা হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত নিত্যযানজটের সাথে ঈদে ঘরেফেরা বাড়তি যানবাহন নিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ। আগামী কয়েকদিন পরিস্থিতি আরো অবনতির আশংকা করছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিক সহ সাধারন যাত্রীরা। মঙ্গলবারও এ মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে যানজট ছিল অসহনীয়। ২৮ মার্চ থেকে ঈদের ছুটি শুরু হলে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছবে, তা নিয়ে রীতিমত শংকিত হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি বরিশাল জেলা ও মহানগর পুলিশও। এসব স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে জেলা ও মহানগর পুলিশের সাথে আর্মড পুলিশও নিয়োগ করা হয়েছে। রয়েছে হাইওয়ে পুলিশের নিয়মিত টহলও। কিন্তু যানজট এড়ান যাচ্ছে না। কারন মহাসড়কের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশী।
বিভাগীয় সদর বরিশাল সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সাথে এ মহাসড়কটির মাধ্যমেই রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ নির্ভরশীল। ১৯৬০ থেকে ৬৬ সালের মধ্যে বরিশালÑফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়ক নির্মানের দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দি পরেও এর তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। ফলে নিত্য যানজট এ মহাসড়কের নিত্য সঙ্গী। ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালুর পরে এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ প্রায় ৩গুন বেড়েছে। কিন্তু সড়কটির তেমন কোন উন্নতি হয়নি।
অপরদিকে কুয়াকাটা-বরিশালÑফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল-ফরিদপুর অংশের ২১১ কিলোমিটার মহাসড়ক সার্ভিস লেন সহ ৬লেনে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থে ২০১৫ থেকে ’১৮ সালের মধ্যে এবটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও পথনকশা প্রনয়ন করা হলেও আলোর মুখ দেখেনি। সম্ভাব্য প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ের সে প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে সরকারি নিজস্ব অর্থে ২০১৮ সালে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যায় সাপেক্ষ আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। ২০২১ সালের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু হলেও তা এখেনো শেষ হয়নি। মূল প্রকল্প বাস্তবায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আশ^স্ত করলেও এখন নতুন করে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সহ নতুন এ্যলাইনমেন্ট অনুযায়ী ডিপিপি তৈরী করতে বলেছে। সে লক্ষ্যে গত একবছর ধরে কাজ চলছে খুবই ধীরলয়ে। ফলে বরিশাল বিভাগীয় সদর সহ দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী বরিশালÑফরিদপুর ৬ লেন মহাসড়ক প্রকল্পটির ভবিষ্যত অনেকটাই অন্ধকারে।