3:20 pm , March 24, 2025

মোঃ জসিম জনি, লালমোহন প্রতিবেদক ॥ লালমোহন ধলিগৌরনগর মঙ্গলসিকদার লঞ্চঘাটে যাত্রীদের জন্য নির্মিত ৩০ লাখ টাকার বিশ্রামাগার ব্যবহার করতে পারছে না যাত্রীরা। এতে দুটি টয়লেট এবং বসার জন্য দুটি কক্ষ থাকলেও এগুলো এখন যাত্রীদের কোন কাজেই আসছে না। প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মনপুরার শত শত যাত্রী এই ঘাট দিয়ে চলাচল করছে। লঞ্চঘাটে আসার পূর্ব পর্যন্ত এখানে যাত্রীদের থাকতে হয় দাঁড়িয়ে। রোদ বা বৃষ্টি হলে যাত্রীদের ভরসা বিভিন্ন দোকানের ছাউনি, কিংবা টার্মিনালের ছাদ। যাত্রীদের টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন হলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় মহিলা যাত্রীদের। অনেকটা বাধ্য হয়ে মহিলাদের পাশর্^বর্তী বিভিন্ন বাসা বাড়িতে সাহায্য চাইতে হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলসিকদার লঞ্চঘাট টার্মিনাল সংলগ্ন একটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট টিনসেড ভবন করা হয়েছে যাত্রীদের বসার জন্য। বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্যোগে প্রায় ৫ বছর আগে এই ভবনটি নির্মাণ করা হয় বলে স্থানীয়রা জানান। এর নির্মাণ কাজে বরাদ্দ হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা। বরাদ্দের কতভাগ খরচ হয়েছে তা ভবনটি দেখলেই অনুমান করা যায়। নির্মাণের পর থেকে যাত্রীদের কোন কাজে লাগেনি এই ওয়েটিং রুম বা বিশ্রামাগারটি। রুমে লঞ্চের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের বসার জন্য বেঞ্চ করা হয়েছে। দুই রুমেই টয়লেট নির্মাণ করলেও তা ব্যবহার উপযোগী করে দেওয়া হয়নি। মাথার উপর টিনের চাল দিলেও সিলিং এর কাজ সমাপ্ত করা হয়নি। দেওয়া হয়নি ফ্যান। ব্যবহার অনুপোযোগী হওয়ায় টয়লেট থাকে তালাবদ্ধ। সেখানে এখন টার্মিনালের অব্যবহৃত কিছু টিন রাখা হয়েছে। আর যাত্রীদের বসার রুমে ব্লক নির্মাণের ঠিকাদারের শয়নকক্ষে চলছে শ্রমিকদের রান্না বান্না। ব্যবহারের অনুপোযোগী হওয়ায় দীর্ঘ কয়েক বছর আগে নির্মিত এই যাত্রী বিশ্রামাগারটি এখন যে যেভাবে পারছে ব্যবহার করছে। যাদের জন্য নির্মিত হয়েছে তাদের কোন কাজে আসছে না। বিকেলে ঢাকাগামী যাত্রীদের পাশ^বর্তী উপজেলা চরফ্যাশনের বেতুয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চের অপেক্ষায় থাকতে হয়। কখনো রোদ, কখনো বৃস্টি এরই মধ্যে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঘাটের বিভিন্ন দোকানে। ঘাটের এক দোকানদার জানান, নারী যাত্রীদের পায়খানার বেগ পেলে তারা লজ্জা সংবরণ করে সাহায্য চাইতে বাধ্য হন। তখন তাদের পাশের বিভিন্ন বসত ঘরে পাঠিয়ে দেন। টার্মিনালের মধ্যে যে টয়লেট রয়েছে তাও ব্যবহারের অনুপোযোগী। এই অবস্থায় দ্রুত টার্মিনাল সংলগ্ন যাত্রী বিশ্রামাগারটি পুন:সংষ্কার করে দ্রুত ব্যবহারের উপযোগী করার দাবী যাত্রীদের।
এবিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র ভোলা অফিসের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেনের জানান, লঞ্চঘাটে যাত্রীদের বসার জন্য এই রুম নির্মাণ করা হয়েছিল। এখানে কি হয়েছে তা বিআইডব্লিউটিএ’র ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ বলতে পারবে। তবে ঘাট যারা ইজারা নেয় তারা এটি সংরক্ষণ করার কথা।