3:06 pm , March 24, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সেনাপ্রধান আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন করতে চায় বিষয়টি নিয়ে ছাত্র নেতাদের সাথে কথা হয়েছে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র নেতারা আগ্রহ নিয়ে সেনাপ্রধানের কাছে গিয়েছিলেন, সেনাপ্রধান তাদের ডাকেননি। গতকাল সোমবার দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে কর্মী সভার পূর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। নুর আরো বলেন, গণ-অভুত্থানে সেনাপ্রধান শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। সেই সেনাপ্রধানকে বিতর্কিত করা কিংবা সেনাবাহিনীকে জনগনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়া এর পিছনে কোন চক্রান্ত আছে কিনা তা পরিস্কার করতে যারা কথাগুলো বলেছেন তাদের আহবান জানান। তিনি বলেন, হাসানাত ও সারজিসের সাথে কি আলোচনা হয়েছে। তারা কেন সেখানে গিয়েছিলেন সে বিষয়গুলো তাদের কাছ থেকে জানা দরকার। হাসানাত-সারজিস সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। ছাত্রনেতা হান্নান মাসুদ তার স্ট্যাটাসে বলছেন ‘আপনাদের একজন মিথ্যা কথা বলছেন’। দায়িত্বশীল জায়গা থেকে নাগরিক পার্টিকে তদন্ত সাপেক্ষে এর প্রকৃত রহস্য জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। তানা হলে এটি মারাত্মক ক্ষত সৃষ্টি করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি বলেন, পুলিশ কাজ করছে না, গত সাত মাস যে স্থিতিশীলতা রয়েছে তার মূল কারন হচ্ছে সেনাবাহিনী। তা না হলে দেশ পরিচালনায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হতো। তাছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে বলেছিলেন ‘১৮ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কাঠামো বিলোপ করে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং বাংলাদেশ পুননির্মানের যে অঙ্গিকার তা বাস্তবায়নের পরেই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। তিনি বলেন, গেল সাত মাসের পর্যবেক্ষন বলছে সরকার প্রত্যাশিত মাত্রায় দেশকে এগিয়ে নিতে পারেনি। নানা ধরনের সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। যে কোন দেশে নির্বাচিত সরকার না থাকলে সকলেই একটা ফায়দা নেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করে। সেই ষড়যন্ত্র গোটা জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। সারজিস-হাসনাতকে ইঙ্গিত করে বলেন, তারা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন্ডে আছে। ক্লিক করলেই তাদের নিউজ দেখা যায়। এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন রাষ্ট্র সংস্কার, অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং দেশকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি। সেখানে তারা সেনাবাহিনীকে নিয়ে পড়ে আছে। ৭৫ সালে যেভাবে দেখেছি সামরিক বাহিনীর মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। একইভাবে এখনো সামরিক বাহিনীকে টার্গেট করে একটি অঘটন ঘটানোর পায়তারা চলছে। এ জন্য দেশবাসীসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান নুর। একই সাথে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় সংলাপ ডাকতে প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানান। নুর বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে, আওয়ামী লীগের নতুন করে অপতৎপরতা শুরু হয়েছে। জুলাই – আগস্টে একটি শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনে এত মানুষকে হত্যা করলো, এত মানুষকে আহত করলো, এত মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিলো এবং গত ১৬ বছরে বাংলাদেশকে একটা নরকে পরিণত করলো অথচ তার জন্য আওয়ামী লীগের ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। নুরুল হক নুর আরও বলেন, আওয়ামী লীগের প্রধান এবং পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে দিল্লি থেকে নানা ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং তার নেতাকর্মীদেরকে উত্তেজিত করে রাস্তায় নামিয়ে একটা নৈরাজ্য তৈরির অপচেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন। শেখ হাসিনা যেহেতু ভারতে অবস্থান করছেন কাজেই শেখ হাসিনার অপতৎপরতার দায় দিল্লী এড়াতে পারে না। ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসকে সরকারের পক্ষ থেকে তলব করে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল শেখ হাসিনার অপতৎপরতা বন্ধে যেন ভারত পদক্ষেপ নেয়। আমরা আমাদের চ্যানেলেও বারবার এটা বলেছি। ভারত যদি বাংলাদেশের সাথে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় তাহলে বাংলাদেশের গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা এবং গণহত্যার দোসর আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী যারা ওখানে পালিয়ে আছে তাদের ফেরত দিতে হবে।