অনিশ্চিয়তায় খেটে খাওয়াদের ঈদ কেনাকাটা অনিশ্চিয়তায় খেটে খাওয়াদের ঈদ কেনাকাটা - ajkerparibartan.com
অনিশ্চিয়তায় খেটে খাওয়াদের ঈদ কেনাকাটা

3:51 pm , March 21, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রমজানের শুরু থেকেই নগরীর পেশাকের বাজারে ক্রেতাদের কমবেশি ভীর দেখা গেছে এবার। নগরীর নামি দামি ব্র্যান্ড ও নন-ব্র্যান্ডের পোষাকের দোকানে যে ভীর গতকাল ২০ রমজানে ছিল উপচে পড়া। বেশিরভাগই উচ্চ শ্রেনির ক্রেতাদের ভীরে ঠাসা এবারের ঈদের বাজার। প্রতিবার এই সময়ে উচ্চ শ্রেনির সাথে সাথে পোষাক কেনাকাটায় ব্যাস্ত হয়ে পরে খেটে খাওয়া শ্রেনির ক্রেতারাও। তবে এবারের পরিস্থিতি বেশ ভিন্ন। বাজারে উচ্চ শ্রেনির ক্রেতাদের জমিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গেলেও অতি সামান্য সংখ্যায় ছিল নিম্ম আয়ের ক্রেতারা। বিক্রেতারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, দামি স্থানে তাদের আসা অনিশ্চিত এটাই স্বাভাবিক। তবে স্থানভেদে সিটি মার্কেট, হাজী মোহাম্মদ মহসিন মার্কেট এবং নগরীর ফুটপাতের মার্কেটগুলোতেও এবারে তাদের সংখ্যা নিতান্তই কম। যে প্রভাব পরেছে সেখানকার বিক্রেতাদের বেচাবিক্রিতে। তারা বলেছে গত বছরও ১৫ রমজানের পরেই নি¤œ আয়ের ক্রেতারা সাধ্য অনুযায়ী কেনাকাটা শুরু করেছিল। তবে এবার এই সংখ্যা বেশ কম। অন্যদিকে নগরীর ঈদ বাজারে ঘুরে ফেরা শ্রমজীবি ক্রেতাদের সাথে আলাপে তারা বলেছেন, দ্রব্য মূল্য কিছুটা কম থাকলেও খেটে খাওয়া শ্রেনির মানুষের আয় বাড়েনি মোটেও। উল্টো অস্তিতিশীল পরিস্তিতিতে তাদের মত ক্রেতাদের বেড়েছে বেকারত্ব। তাই এবারের ঈদের কেনাকাটা অনেকটাই অনিশ্চিত।
গতকাল নগরীর বগুরা রোডে ঈদ কেনাকাটার যাত্রী বহন করা রিক্সাচালক মালেক মুন্সির সাথে আলাপ করা হয় এ বিষয়ে। ভারাক্রান্ত মনে তিনি জানান, রমজানের শুরু থেকেই ঈদ কেনাকাটার যাত্রী বহন করছেন। নগরীর এমন কোন শো-রুম নেই যেখানে যাত্রী নিয়ে তার যাওয়া হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত ফুটপাত থেকে ঈদের কনোকাটার সাহসও করতে পারেননি। তার পরিবারে দুই মেয়ে এক ছেলে সহ স্ত্রী রয়েছে। নিজে ও স্ত্রীর জন্য কিনতে পারবেন না তা নিশ্চিত, তবে ছেলে মেয়েদের জন্য খুব সামান্য হলেও কিনতে হবে। কিন্তু কিভাবে কিনবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। সারা দিন রাত খেটেও পরিবারের বাজার খরচা তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন। এর মধ্যে ছেলে মেয়েদের জন্য কিভাবে ঈদের কেনাকাটা করবেন তা নিয়ে চিন্তিত তিনি।
একই বিষয়ে কথা বলা হয় মৌসুমি ইফতার বিক্রেতার নুর হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, খেটে খাওয়া মানুষের কোন ঈদ নেই। ঈদ হচ্ছে বড়লোকের। কিন্তু ঘরে থাকা ছোট বাচ্চাদের তো বোঝানোর উপায় নেই। তাই রোজার মাসের শুরু থেকেই ঈফতার বিক্রি করছেন কিছুটা বাড়তি আয়ের জন্য। তবে ২০ রমজান অতিক্রম হলেও সন্তানদের জন্য ফুটপাত থেকে নতুন পোষাক কেনার মত অর্থ জোগার হয়নি। শিশু সন্তান প্রতিদিনই বায়না ধরে নতুন পোষাকের। বছরে এই একবার তাদের বায়না পুরন করতে না পারাটা যে কত বড় কষ্টের তা শুধু পরিস্থিতির শিকার শ্রমজীবিরাই বুঝবে।
এমন আক্ষেপ ও চাপা কষ্টের বর্ননা মেলে ঈদ কেনাকাটার বিষয়ে জানতে চাওয়া প্রত্যেক শ্রমজীবিদের কাছ থেকে।
অন্যদিকে নি¤œ আয়ের ক্রেতাদের উপস্থিতি যে ঈদের বাজারে এবার অনেক কম তা নিশ্চিত করেছে নগরীর ফুটপাত, সিটি ও মহসিন মার্কেটের দোকানিরা। একাধিক বিক্রেতারা জানান, ঈদের কেনাকাটা একটি পরিবারের আবেগের সাথে সম্পৃক্ত। ক্রেতা যত দরিদ্রই হোকনা কেন সন্তানের জন্য হলেও সে চায় ঈদে নতুন পোষাক কিনতে। কিন্তু এবারে উচ্চ ও মধ্য আয়ের ক্রেতায় পরিপূর্ন থাকলেও খুব কমই আসছেন খেটে খাওয়া শ্রেনির ক্রেতারা। যারা আসছেন তারাও কেনাকাটা করছে খুবই হিসাব নিকাশ করে। বিক্রেতারা বলেন, ঈদের আনন্দ পোষাকে অনেকাংশে। তাই সবাই নতুন পোষাকে ঈদ করুক এমনটাই কামনা তাদের।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT